ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, ভারতে উদ্বেগ মার্কিন রিপোর্টে

Must read

প্রতিবেদন : ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতাহীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)। দেশে দেশে ধর্মাচরণ-সহ (USCIRF- Religious Freedom) বিভিন্ন ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নজর রাখে এই সংস্থা। সংস্থাটি তার বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মোদি জমানায় ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে গত কয়েক বছর ধরেই তারা এ দেশের কড়া সমালোচনা করে আসছে।

১ মে প্রকাশিত সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতকে বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ-এর তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান, মায়ানমার, চিন, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান-সহ মোট ১৭টি দেশ এই তালিকাভুক্ত। মোদি বা বিজেপির আমলে ভারতের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হয়েছে বলে দাবি। সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ভারতের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দেশ ও রাজ্য স্তরের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও ধর্মীয় বৈষম্য বেড়েই চলেছে।

আরও পড়ুন- সমালোচনার চাপে ব্রিটিশ আইন বদলের কথা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল কেন্দ্র

মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী অবশ্য ওই মার্কিন রিপোর্ট নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইউএসসিআইআরএফ-এর এই প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট। ভারতের গণতন্ত্র ও তার মূল্যবোধ, বহুত্ববাদিতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা সম্পর্কে ওই সংস্থার আরও ওয়াকিবহাল হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ভারতের চলতি অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, সংবাদপত্র ও প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, ঘৃণা ভাষণ এবং রাষ্ট্রীয় স্তরে দমন-পীড়নের অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সরব হয়েছে। যদিও মোদি সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে সেসব রিপোর্ট বা অভিমতকে পক্ষপাতদুষ্ট, অভিসন্ধিমূলক, অজ্ঞানতাপ্রসূত বলেছে।

মার্কিন সংস্থাটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতে ধর্মীয় (USCIRF- Religious Freedom) ভেদাভেদ ক্রমশই বাড়ছে। হিজাব ও গোহত্যা নিয়ে বাড়াবাড়ি হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ, দলিত ও আদিবাসীদের মধ্যে। ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং তা খর্ব করা নিয়ে যাঁরা সরব হয়েছেন, তাঁদের ওপর কড়া নজরদারি রাখা ছাড়াও হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁদের সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে। এমনকী, তাঁদের কঠোর ইউএপিএ আইনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকও করা হচ্ছে। যেসব বহুজাতিক সংস্থা এসব নিয়ে সরব, তাদের বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে এই মার্কিন সংস্থা সিএএ এবং এনআরসির কড়া সমালোচনা করেছিল। ইউএসসিআইআরএফ তাদের রিপোর্ট জো বাইডেন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনে যেসব সংস্থা গুরুতরভাবে দোষী, ভারত সরকারের সেই সব সংস্থা ও তাদের কর্মকর্তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা জরুরি। ভারতকে একটি বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ বলে ঘোষণার জন্য তারা দেশের বিদেশমন্ত্রককে সুপারিশ করেছে।

Latest article