শনিবার নয়াদিল্লির কৌটিল্য মার্গে নিজের বাসভবনে প্রয়াত ‘বাঘবন্ধু’ বাল্মীক থাপার (Valmik Thapar)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৩। দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। আজ বিকেল ৩:৩০ নাগাদ লোধি ইলেকট্রিক শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা। ভারতে ব্র্যাঘ্র সংরক্ষণে তিনি বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন কিন্তু বিজেপির জামানায় একপ্রকার ব্রাত্য হয়েছিলেন তিনি। প্রায় পাঁচ দশক ধরে, বন্যপ্রাণী ও সংরক্ষণের উপর বহু বই লেখেন তিনি। বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণ তথ্যচিত্রও উপহার দিয়েছিলেন তিনি। বিবিসির অন্যতম সিরিজ ‘ল্যান্ড অফ দ্য টাইগার (১৯৯৭)’ দাগ কেটেছিল বিশ্বজুড়ে।
আরও পড়ুন-অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার গুরুগ্রাম থেকে ছাত্রী
১৯৮৮ সালে তৈরি হওয়া রণথম্ভর ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠা ছিলেন তিনি। থাপারের শিকার বিরোধী আইন এবং বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল আলাদা মাত্রা নিয়েছিল। থাপার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় বন্যপ্রাণী বোর্ড সহ ১৫০ টিরও বেশি সরকারি প্যানেল এবং টাস্ক ফোর্সে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৫ সালে, সারিস্কা টাইগার রিজার্ভ থেকে বাঘের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁকে ইউপিএ সরকারের টাইগার টাস্ক ফোর্সে নিযুক্ত করা হয়। পরিবেশবিদ সুনীতা নারায়ণের সভাপতিত্বে গঠিত টাস্ক ফোর্সের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মানুষ-প্রাণী সহাবস্থানের কথা বলা হলেও, থাপার একটি ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। তাঁর প্রতিবেদনে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল যে এই ধরনের সহাবস্থান বাঘের জীবনকে বিপন্ন করতে পারে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, দীর্ঘমেয়াদে বাঘ টিকিয়ে রাখতে হলে বিশাল জমি শুধুমাত্র বন্যপ্রাণীর জন্যই সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। থাপারকে এই বিষয়ে ভারতীয় সংরক্ষণের পথিকৃৎ ফতেহ সিং রাঠোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। থাপার বন্যপ্রাণীর উপর ৩০টিরও বেশি বই লিখেছেন যার মধ্যে রয়েছে বহু প্রশংসিত “ল্যান্ড অফ দ্য টাইগার: আ ন্যাচারাল হিস্ট্রি অফ দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট” (১৯৯৭) এবং “টাইগার ফায়ার: ৫০০ ইয়ার্স অফ দ্য টাইগার ইন ইন্ডিয়া”। তিনি তথ্যচিত্র, সহ-প্রযোজনা এবং বিবিসির জন্য বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র উপস্থাপনার মাধ্যমে ভারতীয় বন্যপ্রাণীকে আন্তর্জাতিক পর্দায় সহজেই নিয়ে এসেছেন।