সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অচলায়তন ভাঙতে চেয়েছিলেন। তাঁরই আশ্রমে অচলায়তন সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এমন অভিযোগে সরব বিশ্বভারতীর আশ্রমিক থেকে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক ও কর্মীদের বৃহদংশ। উপাচার্য বিদায়ের ঘণ্টা কি খুব নিশ্চিত? তা না হলে উপচার্য কোন ভরসায় কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির সমালোচনা করলেন? যে উপাচার্য কর্তাভজার জন্য একুশের নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করেন বা এনআরসি কিংবা সিএ নিয়ে সেমিনার করেন, তিনি কী কারণে কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গেলেন, এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
আরও পড়ুন-বড়দিনের আগে জোকা-তারাতলা মেট্রো
রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত একসময় উপাচার্যর হয়ে ব্যাট ধরলেও বর্তমানে উপাচার্যর থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তার জায়গায় শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইটের মাধ্যমে তাঁর পক্ষেএই জোর সওয়াল করেন। তার মাঝখানে বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি, পিএইচডির নিয়ম এবং উপাচার্য নিয়োগে কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির সমালোচনা ইঙ্গিত দেয় যে উপাচার্যর দিন ঘনিয়ে এসেছে। হয়তো তার আঁচ পেয়েই তিনি এমন বেপরোয়া। তাই প্রদীপ নেভার আগে একবার জ্বলে উঠে এক অধ্যাপককে টারমিনেট করার ব্যাপারে সচেষ্ট এবং পাশাপাশি, চার আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীকে রাস্টিকেট করতে চাইছেন এমন কথাও উঠে আসছে।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী-সহ গোটা তৃণমূল পরিবার বস্তিবাসীদের পাশে
একুশ দিন ছাত্র আন্দোলনের মুখে উপাচার্য তাঁর নিজস্ব কায়দায় ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে গুঁড়িয়ে দিতে চাইছেন। মঙ্গলবার রাতে পড়ুয়াদের আন্দোলন থামাতে পূর্বিতার সামনের মঞ্চকে ভেঙে চুরমার করে দেয় বহিরাগত দুষ্কৃতী ও নিরাপত্তারক্ষীরা। শুধু তাই নয়, মহিলা ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়। পাশাপাশি তাঁদের ধর্ষণের হুমকি দেয়। তারপর মাটিতে বসে আন্দোলন চালায় অসহায় ছাত্রছাত্রীরা। তবে, এবার বলাকা গেটের পাশে পূর্ত বিভাগের জায়গায় রাস্তার পাশে মঞ্চ করে ফের আন্দোলন চালু রাখতে চলেছে পড়ুয়ারা। কিন্তু এমন বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে উপাচার্য সাংবাদিকদের তেড়ে যাচ্ছেন। কোথা থেকে এত সাহস পাচ্ছেন উপাচার্য, কী করে কর্মসচিব তাঁরই নির্দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছেন, ভেবে অবাক হচ্ছেন বোলপুরের স্থানীয় মানুষজন। কারণ বোলপুরে স্থানীয়ভাবে বিজেপির এমন কোনও অস্তিত্ব নেই যারা উপাচার্যকে মহাবলী বানাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন-আবাস-সমীক্ষায় বাধা বিজেপির
বিশ্বভারতীতে তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাঁর ফাইনাল গবেষণাপত্র জমা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, বর্তমান উপাচার্য তাঁর বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কা ছাত্রছাত্রী মহলে। ছাত্রছাত্রী স্বার্থে এত জোরালো আন্দোলন করেও, কীভাবে কার প্রশ্রয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন উপাচার্য, প্রশ্ন তুলছেন সবাই। কী কারণে উপাচার্য এত সাহসী হয়ে উঠতে পারছেন তা নিয়েই প্রশ্ন।