প্রতিবেদন : রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে সুবিচার চাইলেন রাজভবনের নির্যাতিতা। চুক্তির ভিত্তিতে কর্মরত রাজভবনের এই মহিলা কর্মীর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁকে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল এবং একা একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশে ওই নির্যাতিতা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করলেও ঘটনার তদন্তে বাধা দেন রাজ্যপাল নিজে। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল নিজের সাংবিধানিক সুরক্ষাকবচের সুযোগ নেন। বিশিষ্ট আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, বুধবার নির্যাতিতা শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, পুলিশ যাতে তাঁর যৌন নির্যাতনের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, তাঁর ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও শীর্ষ আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে এদিন মানহানির মামলাতেও বিপাকে পড়লেন রাজ্যপাল বোস (CV Ananda Bose)। বিশিষ্ট আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, আমরা জানতে পেরেছি যে রাজভবনে মহিলারা নিরাপদ বোধ করেন না— মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জন্য তাঁর এবং অন্যদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে যেখানে মহিলারা রাজভবন সম্পর্কিত অভিযোগ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন, সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মহিলাদের যন্ত্রণার কথা বলা তাঁর পক্ষে যুক্তিসঙ্গত। এই মামলার শুনানিতে বুধবার বিচারপতি কৃষ্ণা রাও পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে ফের মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। দুই তৃণমূল জয়ী প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকার ছাড়াও প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষকেও এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। এরপরই নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথগ্রহণের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, যদিও আমরা কপিগুলি পাইনি, তবে মামলিটি অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরানোর একটি অপচেষ্টা। যেমন নির্বাচিত বিধায়কদের স্পিকারের কাছে শপথ নিতে বাধার বিষয়টি আড়াল করতেই এই মানহানির মামলা। আমরা এসব অভিযোগ যথাযথভাবে জানাব। পদ্ধতিগত ত্রুটিমুক্ত হওয়ার পরেও বৃহস্পতিবার এই মামলাটি তালিকায় নেই বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই কারণে শুক্রবার বা অন্য কোনও দিন হতে পারে এই মামলাটির শুনানি।
আরও পড়ুন: গণপিটুনি রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শুধু প্রতিকার ও সুবিচারই নয়, একইসঙ্গে ক্ষতিপূরণও দাবি করলেন নির্যাতিতা। ওই মহিলা কর্মীর যুক্তি, ওই ঘটনায় তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। সেই কারণেই তিনি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছেন।