বিয়ের আসরে বিদ্যাসাগর, নারীশিক্ষার অঙ্গীকারে নয়া নজির

ইতিমধ্যে অভিনব এই আশীর্বাদের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পাত্র পরিবারের কাছে ঈশ্বরচন্দ্রই হলেন আসল ঈশ্বর।

Must read

তুহিনশুভ্র আগুয়ান, রামনগর: বিয়ের আশীর্বাদ অনুষ্ঠানে কোনও দেবদেবী নন। বসে আছেন স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর! কন্যার বিবাহ অনুষ্ঠানে এমনই সিদ্ধান্তে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর ২ ব্লকের সটিলাপুর গ্রামের শিক্ষক নন্দগোপাল পাত্র। ইতিমধ্যে অভিনব এই আশীর্বাদের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পাত্র পরিবারের কাছে ঈশ্বরচন্দ্রই হলেন আসল ঈশ্বর।

আরও পড়ুন-প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ২ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে দলেরই একাংশের পোস্টার

তাঁদের মতে, পাত্রপাত্রীর স্বাবলম্বী হওয়ার পিছনে আসল কারণ তিনিই। আর তাই বিদ্যাসাগরকে সামনে রেখেই পালিত হল এই বিবাহের প্রথম পর্ব। গত রবিবার নন্দগোপালবাবুর মেয়ে পেশায় আইনজীবী ইলিখা পাত্রের বিয়ের প্রথম পর্ব অর্থাৎ আশীর্বাদ অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘আশীর্বাদের আভায় শুরু শুভযাত্রা।’ পিছনে ব্যানারে লেখা প্রাণাধীশ, মুখচন্দ্রিকা, কাজললতার মতো বিভিন্ন শব্দ। আর সেই ব্যানারের নিচেই আশীর্বাদ পর্বে বসেন হবু বরকনে অঙ্কিত ও ইলিখা। তাঁদের ডান পাশেই আসন পেতে বসানো হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি। সেই মূর্তির সামনেই চলে গোটা আশীর্বাদ পর্ব। বিয়ের আসরে বাংলার মনীষী ও সমাজ সংস্কারক বিদ্যাসাগরকে এভাবে দেখে অভিভূত অনেকেই। কন্যা ইলিখা আইনে স্নাতকোত্তর, কলকাতায় প্র্যাকটিস করেন। তাঁর বাবা দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেন। পাত্র মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা পেশার ইঞ্জিনিয়ার অঙ্কিত চৌধুরি। কন্যার পিতার এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তে অভিভূত বরের বাড়ির সদস্যেরাও। তাঁর বাবার এই উদ্যোগ নিয়ে পাত্রী ইলিখা বলেন, বাবার বিভিন্ন ধরনের ব্যতিক্রমী ভাবনা আমাদের চিরকাল অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর এই সিদ্ধান্ত শুধু দৃষ্টান্ত নয়, নারীশিক্ষার প্রতি নতুন অঙ্গীকার। এ বিষয়ে নন্দগোপালবাবুর বক্তব্য, মেয়েরা যেভাবে নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে শিখরে পৌঁছচ্ছে তার অন্যতম কারিগরই হলেন বিদ্যাসাগর। তাঁর প্রতি সম্মান যাতে সব সময় বজায় থাকে তাই এমন আয়োজন। এই মানুষটির কাছে আমাদের মাথা নত করতেই হয়।

Latest article