মেগাস্টার থালাপাতির কঠিন চ্যালেঞ্জ, তামিল ভোটের স্বপ্ন চুরমার বিজেপির

Must read

প্রতিবেদন: স্বপ্ন চুরমার বিজেপির। তামিলনাড়ুতে পা রাখার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনাও বোধহয় আর রইল না গেরুয়া শিবিরের। সক্রিয় রাজনীতির লড়াইতে নেমেই দক্ষিণি মেগাস্টার থালাপতি বিজয়ের (vijay thalapathy) হুঙ্কার, বিজেপিকে বিন্দুমাত্র জমি ছাড়ব আমরা। বিজেপির ফ্যাসিবাদ রুখবই। আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করছি ফ্যাসিবাদী বিজেপির বিরুদ্ধে। মাদুরাইতে তাঁর দল তামিলাগা ভেত্রি কাজগাম বা টিভিকের জনসভায় থালাপতির দৃপ্ত ঘোষণা, তাঁদের একমাত্র আদর্শগত শত্রু হল বিজেপি। সিনেমার পর্দাকে আপাতত বিদায় জানিয়ে সরাসরি রাজনীতির মঞ্চে তিনি কতটা আলোড়ন তুলেছেন, তার প্রমাণ মাদুরাইয়ে তাঁর কথা শুনতে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাবেশ। তামিল ছবির প্রবাদপুরুষ এম জি রামচন্দ্রন, জয়ললিতা, এম করুণানিধির পরে মেগাস্টার থালাপতি বিজয়ের নতুন ভূমিকা নিঃসন্দেহে তামিলনাড়ুতে তুলেছে এক প্রবল রাজনৈতিক ঝড়। ২০২৬এ তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে ডিএমকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বললেও বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর আসল লড়াইটা কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধেই। বিজেপিকে সরাসরি ফ্যাসিবাদী তকমা দিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন থালাপতি। খুলে দিয়েছেন দক্ষিণের রাজনীতিতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের পথ। তাঁর কথায়, রাজনীতি সিনেমার মতো সহনশীলতার জায়গা নয়। এটি যুদ্ধক্ষেত্র। সাধারণ মানুষকে, দলের কর্মী এবং সমর্থকদের ঠকিয়েছে বিজেপি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছি।

আরও পড়ুন-জেপিসি বয়কট করছে উদ্ধবের শিবসেনারও

কে এই থালাপতি বিজয় (vijay thalapathy)? জন্ম চেন্নাইয়ে। বয়স ৫১। বাবা এস এ চন্দ্রশেখর তামিল চলচ্চিত্র পরিচালক। মা শোভা চন্দ্রশেখর প্লে ব্যাক শিল্পী। পুরো নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। ভক্তরা নাম দিয়েছেন ‘থালাপতি’। যার অর্থ সেনাপতি। নব্বই দশক থেকে এখনও পর্যন্ত ছবির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। ‘ঘিলি’, ‘থুপ্পাকি’,’মার্সাল’, ‘মাস্টার’ ও অতিসম্প্রতি ‘লিও’ ঝড় তুলেছে দর্শকমনে। ব্যবসা দিয়েছে কোটি, কোটি টাকার। শুধু অভিনয় নয়, গানও গেয়েছেন। একবার নয়, ৭ বার স্থান পেয়েছেন ফোর্বস ইন্ডিয়ার ১০০ সেলিব্রিটির তালিকায়। পেয়েছেন সেরা অভিনেতার স্বীকৃতিও। পিছন ফিরে তাকালেই স্পষ্ট হবে কেমন করে দক্ষিণের রাজনীতির সমীকরণটা সময়ের হাত ধরে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠা তারকারা। প্রথমেই আসা যাক এম জি রামচন্দ্রনের কথায়। তামিল ছবির বাধভাঙা জনপ্রিয়তার নায়ক এম জি রামচন্দ্রনই ভারতের প্রথম অভিনেতা, যিনি চলচ্চিত্র জগৎ থেকে এসে পেয়েছিলন মুখ্যমন্ত্রীর মর্যাদা। এ আই এ ডি এমকে তে তাঁর উত্তরসূরী জয়ললিতাও ছিলেন তামিল ছবির ব্যতিক্রমী সফল অভিনেত্রী। রাজনীতির জগতে এসে পালন করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। ডিএমকে সুপ্রিমো এম করুণানিধিও মুখ্যমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন দক্ষিণি ফিল্মি দুনিয়া থেকে রাজনীতির জগতে পা রেখেই। তিনি অবশ্য অভিনয়ের চেয়েও বিশেষ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবেই। তাঁর অসামান্য জনপ্রিয়তার নেপথ্যে এই প্রতিভাই। তাঁরা প্রত্যেকেই রূপোলি পর্দার জগৎ থেকে এসে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন রাজনীতির জগতে। আর এক তামিল স্টার কমল হাসনও হিন্দি ফিল্মি দুনিয়ায় ব্যতিক্রমী প্রতিভার ছাপ রেখে এসে প্রবেশ করেছেন তামিল রাজনীতিতে। দলও গড়েছেন নিজের। কিন্তু এখনও অবশ্য সাড়া জাগাতে পারেননি তেমন। আপাতত তিনি রাজ্যসভায়। শুধু তামিল ফিল্ম বা রাজনীতি কেন, অবিভক্ত অন্ধ্রের রাজনীতিতেও ঝড় তুলেছিলেন তেলুগু ছবির প্রবাদ পুরুষ এন টি রামা রাও। রাম ও কৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় করে যিনি পেয়েছিলেন দেশজোড়া খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তা। তেলুগু দশম পার্টির জন্ম দিয়ে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর আসনেও। তেলুগু ছবি থেকে রাজনীতিতে এসেছেন পবন কল্যাণও। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁদের সকলেরই রাজনৈতিক প্রভাব বা কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ ছিল দক্ষিণেই, নিজরাজ্যেই।

Latest article