প্রতিবেদন : আরজি করে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু নেতৃত্বহীন স্বতঃস্ফূর্ত কোনও জমায়েতের জনসংখ্যা আগে থেকে ধারণা করা সম্ভব নয়। একসঙ্গে অত দুষ্কৃতী আচমকা হামলা চালালে তা সামলানো মুশকিল। বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালে দুষ্কৃতী বাহিনীর অতর্কিতে হামলার ঘটনা নিয়ে শুক্রবার এমনটাই জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি সাফ বলেন, পুলিশের তরফে কখনওই নির্যাতিতার বাড়িতে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলা হয়নি। অযথা গুজব ছড়াবেন না। বুধের রাতে আরজি করে সেই হামলার ঘটনায় লালবাজারের তরফে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ইতিমধ্যেই ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে ওই দুষ্কৃতীদের কোনওরকম রেয়াত করা হবে না বলে কড়া অবস্থান কলকাতা পুলিশের। কোনওরকম রাজনৈতিক রঙ না দেখেই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন কমিশনার।
আরও পড়ুন-আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ, দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ চিকিৎসা পরিষেবা!
শুক্রবার লালবাজারে দীর্ঘ সাংবাদিক সম্মেলন করেন নগরপাল বিনীত গোয়েল। শুরুতেই বুধের রাতে আরজি করে দুষ্কৃতী-হামলার দুটি ভিডিও দেখানো হয়। সেখানে দেখা যায় কীভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে অতর্কিতে পরিকল্পিত হামলা চালায় দুষ্কৃতী বাহিনী। সেই ভিডিওর সূত্র ধরেই নগরপাল বলেন, স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনও জমায়েত হলে, তা নিয়ন্ত্রণ করা তুলনামূলকভাবে কঠিন হয়। কারণ, সেখানে কোনও নেতা থাকে না। নেতা থাকলে তার সঙ্গে কথা বলে জনসংখ্যা নির্ধারিত করা যায়। সেই রাতে সারা শহরে নানা রকম জমায়েত হয়েছিল। সর্বত্র মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিপুল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। আরজি করেও পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। ডিসি নর্থ নিজে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ডিসিপি নিজে আহত হওয়ায় পুলিশ সাময়িকভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
তবে আরজি করের ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্নরকম ভুয়ো খবর ও গুজব ছড়াচ্ছে। যাচাই না করেই মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে যা পাচ্ছেন, তাই শেয়ার করছেন। সেই নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিশনার বিনীত গোয়েল সাফ বলেন, কোনও পুলিশ আধিকারিক মৃতার বাড়িতে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলেননি। যে যেমনভাবে পারছেন ঘটনার বিশ্লেষণ করছেন। কখনও বলা হচ্ছে গণধর্ষণ হয়েছে, ১৫০ গ্রাম বীর্য পাওয়া গিয়েছে! কখনও আবার কোনও মহাপাত্র পদবিধারীকে বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদবির সঙ্গে জুড়ে দোষী হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। নগরপাল আরও বলেন, আমাদের প্রমাণ দরকার। প্রমাণ ছাড়া কাউকে আমরা ধরতে পারি না। আমাদের কাউকে বাঁচানোর নেই। প্রমাণের অপেক্ষায় রয়েছি। দয়া করে গুজব ছড়াবেন না। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে আরজি কর-কাণ্ডে কোনও কিছুই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়নি। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মানে আত্মহত্যা নয়।