অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, কুপিয়ে-পুড়িয়ে-গুলিতে খুন

Must read

প্রতিবেদন : ভেঙে দেওয়া হল বাংলাদেশ (Bangladesh Violence) সংসদ। রাষ্ট্রপতি মহঃ সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। সোমবার রাতেই বাংলাদেশ সেনার ৩ বাহিনীর প্রধান, বিএনপি, জাতীয় পার্টি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ভেঙে দেওয়া হল সংসদ। সেইসঙ্গে নিষিদ্ধ করা হল সংসদে সাধারণ মানুষের প্রবেশ। এদিনই মুক্তি দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিএনপির শীর্ষনেত্রী খালেদা জিয়াকে। এদিকে পদত্যাগ করে হাসিনা দেশ ছাড়ার পরেও বাংলাদেশে অব্যাহত লাগামছাড়া হিংসা। চলছে, লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ এবং হত্যাকাণ্ড। সেনা দায়িত্ব নেওয়ার পরেও। শুধুমাত্র সোমবার থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৭০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর। এর মধ্যে রয়েছেন ২ পুলিশকর্মী। শুধু সাতক্ষীরায় মৃতের সংখ্যা ১৪। অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন ঢাকার অধস্তন পুলিশ কর্মচারী সংগঠনের সদস্যরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে সদ্যপ্রাক্তন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে। গ্রেফতার করা হয়েছে হাসিনা মন্ত্রিসভার বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে। এদিকে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি পদত্যাগ করেছি শুধুমাত্র লাশের মিছিল যেন না দেখতে হয়। তোমাদের (ছাত্রদের) লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিল ওরা। আমি হতে দিইনি। ক্ষমতা দিয়ে এসেছি। ক্ষমতায় আমি থাকতে পারতাম, যদি সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর আমেরিকার কাছে ছেড়ে দিতাম। আমি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণ যেত। আরও সম্পদ ধ্বংস হতো। তাই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি।

আরও পড়ুন- সকাল থেকেই সংসদ ভবন চত্বর ইন্ডিয়ার প্রতিবাদে উত্তাল

মঙ্গলবারও চলছে হিংসাত্মক ঘটনা। ঢাকার গণভবনের মূল ফটকে সেনা মোতায়েন থাকলেও পিছনের ভাঙা পাঁচিল দিয়ে লোক ঢুকে পড়ে হুড়মুড় করে। অনেককে দেখা যায় পাঁচিল টপকে ঢুকতে। সোমবার গণভবনে ব্যাপক লুঠতরাজের পরে মঙ্গলবার আবার এই ছবি। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে খুলনা শহরের শের এ বাংলা সড়কের ময়লাপোতা এলাকায় আওয়ামি লিগের দুই সংসদ সদস্যের বাড়িতে। পাশাপাশি বাড়িতেই থাকতেন দুই সাংসদ শেখ হেলালউদ্দিন ও শেখ সালাহউদ্দিন। সম্পর্কে তাঁরা শেখ হাসিনার খুড়তুতো ভাই। বাড়িদুটি খুলনায় শেখবাড়ি নামে পরিচিত। মঙ্গলবার সকালেও এখানে চলে ব্যাপক লুঠপাট। সোমবার গভীর রাতে শেরপুর জেল ভেঙে ৫২০ জন বন্দিকে বের করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এর মধ্যে ২০ জন কট্টর সন্ত্রাসবাদী।
তুলে নেওয়া হয়েছে কার্ফু। খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি। কিন্তু উপস্থিতি যৎসামান্য। কিন্তু মঙ্গলবার ঢাকার রাস্তায় দেখা গেল না পুলিশ কিংবা র্যা ব। এমনকী দেখা নেই ট্রাফিক পুলিশেরও।

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মানুষ। দেশের (Bangladesh Violence) বিভিন্ন জায়গায় থানা এবং পুলিশের উপর হামলা অব্যাহত। রাজধানীর বাড্ডা থানা ছেড়ে পালিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ থানার গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। লুঠ করে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, আসবাব এবং জরুরি নথিপত্র। লুঠপাট চলছে ব্রাহ্মণবেড়িয়া সদর থানাতেও। এখানেও দেখা নেই পুলিশের। সোমবার গভীররাতে কুমিল্লার তিতাস থানার ২ পুলিশকর্মীকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। থানা ঘেরাও হওয়ায় তাঁরা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলেন। এদিকে ঘেরাওকারীদের হাত থেকে বাঁচতে পুলিশ গুলি চালালে ৩০ জন জখম হয়। নিহত হন এক যুবক। শেষপর্যন্ত সেনাবাহিনী গিয়ে থানায় আটকে পড়া পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে জয়পুরহাট সদর থানাতেও। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। এখানেও পুলিশকর্মীদের উদ্ধার করতে ছুটে আসতে হয় সেনা-জওয়ানদের। মঙ্গলবার দুপুরে থানা পাহারা দিতে দেখা যায় ছাত্রদের। সোমবার রাত থেকে হিংসাত্মক ঘটনা হয়ে উঠেছে লাগামছাড়া। নাটোরের সাংসদ শফিকুল ইসলামের বাড়িতে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ জনের দগ্ধ দেহ।

Latest article