প্রতিবেদন : বাংলাদেশের (Bangladesh Violence) ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কেন কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী? কেন রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ কেন্দ্র? কেন এখনও কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন্দ্র? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর কথা বলেছেন, দিল্লি যা করবে তাতে পূর্ণ সমর্থন জানানোরও আশ্বাস দিয়েছেন, এরপরেও কেন্দ্রের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণটা কী? প্রশ্ন তুলল তৃণমূল। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চিত্র তুলে ধরে তৃণমূলের অভিযোগ, সেখানে একটা অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অথচ আশ্চর্যজনকভাবে কেন্দ্র তো কিছু করছেই না, বরং এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে এখানে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। বিজেপি আসলে বাংলাদেশ ইস্যুটাকে থামাতে চাইছে না। তারা ভোট মার্কেটিংয়ে নেমে পড়েছে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এ-ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, বাংলাদেশে এমন অশুভশক্তি তৈরি করা হচ্ছে, যার ফলে চরম ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি হচ্ছে। মোদি সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তো এখন বাংলাদেশে গিয়ে ল্যান্ড করুন! মণিপুর তো যাননি, ঢাকায় অন্তত যান!
এটা ঘটনা, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা ঘিরে ক্রমেই রহস্য ঘনাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহঃ ইউনুসের নেতৃত্বে তুমুল অরাজকতা চলছে সেখানে, ভূলুণ্ঠিত মানবাধিকার, তবুও অদ্ভুতভাবে নিষ্ক্রিয়, নিশ্চুপ কেন্দ্র। মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- বিদেশি অতিথিদের বাংলায় ছবি করতে আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
একটার পর একটা স্বেচ্ছাচার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে (Bangladesh Violence)। সরকারিভাবে কিছু না বলা হলেও, কোনও এক জায়গায় স্থানীয় উদ্যোগে শুরু হয়েছে ইসলামি শরিয়া শাসনও। নিষিদ্ধ করা হয়েছে মহিলাদের বাজারে যাতায়াত। দোকানদারদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, মহিলাদের যেন কোনওভাবেই কিছু বিক্রি করা না হয়। মাইকে রীতিমতো ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে এই হুঁশিয়ারি। এখানেই শেষ নয়, নামাজের সময় বাজার বন্ধ রাখারও ফতোয়া জারি করা হয়েছে। মৌলবাদীদের নির্দেশ, দোকানে দোকানে পর্দা ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কট্টর মৌলবাদীদের মাইকে এই ঘোষণা ক্যামেরাবন্দি করে তার ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে আপোলড করেছেন একটি ইংরেজি সাপ্তাহিকের সম্পাদক।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক খবর, বাংলাদেশে প্রতিহিংসার ধরপাকড় এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে উপচে পড়ছে সমস্ত জেল। আর জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না বন্দিদের। অথচ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধুয়ো তুলে ৫ অগাস্টের আগে যখন সেখানে একটার পর একটা জেল ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তখন কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল প্রায় ২ হাজার ২০০ বন্দি। তার মধ্যে ছিল মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৭৮ জন কুখ্যাত জঙ্গি এবং ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসবাদী। এখনও খোঁজ নেই অন্তত ৭০০ জনের। দেশের পক্ষে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বুধবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মহঃ মোতাহের হোসেন জানিয়েছেন, বন্দিসংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা অন্তত ১৭টি কারাগারের। বন্দিসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার। আসলে ইউনুস সরকার প্রতিহিংসার কারণে অজস্র নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দেওয়াতেই কারাগারগুলোর এই দশা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।