ঘুরে আসুন পিন উপত্যকা

হিমাচল প্রদেশের পিন উপত্যকা। নির্জন, নিরিবিলি পরিবেশ। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বরফাবৃত পাহাড়ের চূড়া, সবুজ বনাঞ্চল পর্যটকদের সম্মোহিত করবে। রঙিন ফুলের খেত, রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া, নিস্তব্ধতায় ঘেরা বিচ্ছিন্ন এলাকায় নিজেকে হারিয়ে ফেলতে শীতের মরশুমে সপরিবার ঘুরে আসতে পারেন। লিখলেন অংশুমান চক্রবর্তী

Must read

বহু আগে থেকেই পর্যটকদের অত্যন্ত পছন্দের জায়গা হিমাচল প্রদেশ। হিমালয় পর্বতমালার পাশাপাশি এখানে রয়েছে নদী, বনাঞ্চল, উপত্যকা। লাদাখ, স্পিতি, লাহুল প্রভৃতি জায়গার নৈসর্গিক ও মনোরম পরিবেশের কথা বিশ্ববাসীর অজানা নয়। এখানে আছে আরও একটি অপূর্বসুন্দর উপত্যকা। নাম পিন উপত্যকা। জায়গাটা লাহুল ও স্পিতি জেলায় অবস্থিত। এটা মূলত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র। পিন নদী দিয়ে ঘেরা। স্পিতির চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি উপত্যকা। যে কোনও পর্যটককে মুগ্ধ করবে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য— বরফ-ঢাকা পাহাড়ের চূড়া, পাহাড়ের বুকে সবুজ বনাঞ্চল— পর্যটকদের দ্রুত সম্মোহিত করতে পারে। রঙিন ফুলের খেত, রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া, নির্জন নিরিবিলি নিস্তব্ধতায় ঘেরা বিচ্ছিন্ন একটি পাহাড়ি এলাকায় নিজেকে হারিয়ে ফেলতে সপরিবারে পাড়ি দিতে পারেন পিন উপত্যকায় (Pin Valley National Park)। পাবেন তিব্বতি সংস্কৃতির ছোঁয়া।

এখানে আছে বেশকিছু দর্শনীয় স্থান। স্পিতি ও পিন নদীর সঙ্গম স্থান দেখতে ভিড় করেন বহু পর্যটক। নদীর তীরে চুপচাপ বসে অনেকেই সময় কাটান। এখানে রয়েছে কুংরি মঠ। ১৩৩০ সালে নির্মিত। সারা বছর বহু মানুষ ঘুরে দেখেন। ভাগ্য ভাল থাকলে সুন্দর ও প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারে থাকার সুযোগও হয়ে যেতে পারে। উপত্যকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গাড়িতে নয়, হেঁটে বা ট্রেক করে অনুভূতি নিলেই ভাল হয়। ভাগ্য সহায় থাকলে এই স্থানে বিরল প্রজাতির প্রাণীর দেখা পেয়ে যেতে পারেন। তবে তাদের দূর থেকে দেখলেই ভাল। কাছে গেলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্যই দর্শন করতে হবে পিন উপত্যকা (Pin Valley National Park) জাতীয় উদ্যান। নাহলে এই জায়গায় আসাটাই বৃথা হয়ে যাবে। এই উদ্যানের আয়তন ৬৭৫ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত। উদ্যানে আছে নানারকমের গাছ। কিছু কিছু গাছে ঔষধি গুণাবলি রয়েছে। রহস্যময় আলোকালো পরিবেশ মুগ্ধ করবে।

আরও পড়ুন-ঘরে ঢুকে বলিউডের ‘নবাবের’ ওপর হামলা, অধরা দুষ্কৃতী

হিমালয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছরই এই জায়গায় দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক ভিড় করেন। বিশেষত শীতের মরশুমে। অনেকেই এখানে বিশ্রামের জন্য একটি রাত কাটিয়ে যান। তবে এই জায়গার মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে একটি দিন যথেষ্ট নয়, অন্তত তিন-চারদিন থাকতে হবে। কেউ কেউ তার থেকে বেশিদিন থেকে যান। পাখির ডাকে ঘুম ভাঙবে ভোরের আলো ফোটার আগেই। ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম চায়ের তৃপ্তি দেবে এক স্বর্গীয় অনুভূতি।

অফিসের কাজের চাপ থেকে কিছু দিনের জন্য মুক্তি পেতে ও নাগরিক ক্লান্তি দূর করতে পিন উপত্যকার জুড়ি নেই। অসাধারণ পাহাড়ি আবহাওয়ায় নতুন করে জীবন দেখার ইচ্ছে জাগাতে পারে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রশান্তি, পাহাড়ি গ্রামের অভূতপূর্ব আপ্যায়ন— হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। প্রকৃতির মাঝে নিজেকে মেলে ধরতে বিখ্যাত ট্রেক ভাবা পাস ট্রেক ও পিন (Pin Valley National Park) পার্বতী ট্রেকে ট্রেকিং করা যায়।
এই পাহাড়ি এলাকায় নেই ধাবা বা রেস্তোরাঁ, তাই পেটপুজোর একমাত্র জায়গা হল হোমস্টে বা গেস্টহাউস। অসাধারণ স্বাদের খাবার না পাওয়া গেলেও, স্থানীয় মেনু ট্রাই করতেই পারেন। আশা করা যায় মন্দ লাগবে না। ভাবনাচিন্তা দূরে সরিয়ে ঘুরে আসুন। মনকে আনন্দ দিন।

Latest article