প্রতিবছরের মতো এবারও অ্যালেন পার্কে (Allen Park) কলকাতা ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালে উদ্ধোধনে হাজির হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। অ্যালেন পার্ক ছাড়াও রাজ্যের আরও ১৪ টি জায়গায় একসাথে ক্রিসমাস উৎসবের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ”আমরা সব ধর্মের অনুষ্ঠান পালন করি, আমি উৎসবমুখর কলকাতা দেখে খুব আনন্দ পাই”, অ্যালেন পার্কে বড়দিনের ১৫তম উৎসবে এমন কথাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর স্বরচিত গানের মাধ্যমেই শুরু হয় আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন ডেরেক’ও ব্রায়ান। উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, মালা রায়, সুব্রত বক্সী, নগরপাল মনোজ ভার্মা, মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, মোস্ট রেভারেন্ড ড. এলিয়াস ফ্র্যাঙ্ক (আর্চ বিশপ অফ কলকাতা), মোস্ট রেভারেন্ড ড. পরিতোষ ক্যানিং (মডারেটর, চার্জ অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড আর্চ বিশপ অফ কলকাতা)।
আরও পড়ুন-প্রাধান্য পাবে মেক ইন বেঙ্গল, ১০০০০ মানুষের কর্মসংস্থানের আশ্বাস উমেশ চৌধুরীর
প্রতিবছরের মতো এবারও অ্যালেন পার্কে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে বৃহস্পতিবার থেকেই সেজে উঠবে পার্কস্ট্রীট। এদিন উৎসবের সূচনায় সকলকে বড়দিন ও নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ”রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আমরা সকল ধর্মকে সম্মান করি। সব অনুষ্ঠান পালন করি। বাংলা মেলা থেকে খেলা সব পছন্দ করে। পড়ুয়ারা সব অনুষ্ঠানেই আনন্দ করে। বড়দিন উপলক্ষ্যে পার্কস্ট্রিট এরিয়া সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে সেখানে অনেকরকম দোকান খোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সাজানো থাকবে ওই এলাকা। আমরা সব ধর্মের অনুষ্ঠান পালন করি। এমনিতে মানুষের জীবনে অনেক সমস্যা ও চিন্তা রয়েছে। সেই চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে পারে প্রয়োজন রিল্যাক্সেশন আর সেই রিল্যাক্সেশন দিতে পারে একমাত্র উৎসব।” এদিন নিজের দলের মন্ত্রীদের সকলকে চার্চে চার্চে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর নিজের চার্চে যাওয়ার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-এজেন্সি দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয় দেখাচ্ছে কেন্দ্র: বাণিজ্য কনক্লেভে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
এরপরেই বিরোধীদের এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, ”অনেকেই বাংলার বদনাম করার চেষ্টা করে। আমরা ধর্ম নির্বিশেষে সব উৎসব পালন করি। আমরা ধর্ম নির্বিশেষে সব উৎসব পালন করি। বাংলার মানুষ শান্তিপ্রিয় ও উৎসব প্রেমী। আশা করছি সব ঠিক থাকবে। খুব ভালো ভাবে এই অনুষ্ঠান করুন। দার্জিলিঙে যেভাবে করছেন খুব ভাল লাগছে। মানুষকে আনন্দে রাখা উচিত। উৎসব আমাদের প্রশস্তি, আনন্দ, ভাল খাবার, উৎসাহ দিতে পারে। সুষ্ঠভাবে গোটা উৎসব পরিচালনা করবে পুলিশ। প্রশাসনের ব্যস্ততা থাকলেও মানুষের স্বার্থে এই কয়েকদিন সবদিকে নজর রাখতে হবে।” এরপরেই গান গেয়ে বড়দিনের উৎসবের মঞ্চ মাতালেন মুখ্যমন্ত্রী। গাইলেন ‘বিশ্বপিতা তুমি হে প্রভু’ ও ‘মঙ্গলদ্বীপ জ্বেলে’। সেই সঙ্গে গানের মাঝেই ইন্দ্রনীলের ভুল ধরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-নতুন করে আরও ১৫,৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ: সঞ্জীব গোয়েঙ্কা
উল্লেখ্য, এবার শুধুমাত্র কলকাতায় নয়, দার্জিলিং, কালিম্পং, আসানসোল, জলপাইগুড়ি, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, কৃষ্ণনগর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বারুইপুর, আলিপুরদুয়ার, হাওড়া সহ বিধাননগরে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল পালন করা হবে। ২০১১ সাল থেকে ‘ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল’ করা হচ্ছে। এই বছর ১৫ বছরে পদার্পণ করল এই ফেস্টিভ্যাল। ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুধু ২৪ ও ২৫ তারিখ অ্যালেন পার্কের সামনের রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। সেখানে শুধু হাঁটা যাবে। অ্যালেন পার্কের এই রাস্তা সেই সময়ে ওয়াকিং স্ট্রিট হয়ে যাবে। ৫ জানুয়ারি এই ফেস্টিভ্যাল শেষ হবে। এই ফেস্টিভ্যালে অনেক ধরনের ফুড স্টলের ব্যবস্থা থাকবে। এর মাঝে অনেক কালচারাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

