প্রতিবেদন : হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে গাজায় লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল সেনা (Israel-Gaza War)। তাতে গাজা ভূখণ্ডের অসংখ্য নিরীহ মানুষের মৃত্যু হলেও যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয় নেতানিয়াহুর দেশ। বুধবার ইজরায়েলি সেনা গাজার কেন্দ্রস্থলে ঢুকে গিয়েছে বলে দাবি করেছে তেল আভিভ। গাজা ভূখণ্ডে মাটির নিচে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা হামাসের গোপন সুড়ঙ্গেও অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। হামাসের কব্জায় থাকা এলাকা বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার ফলে ধ্বংস হচ্ছে বহু পরিকাঠামো। ইজরায়েলি সেনার দাবি, হামাস খতম অভিযানেই সন্ধান মিলেছে মাটির প্রায় ৮০ মিটার গভীরে সংকীর্ণ সুড়ঙ্গপথ। সেখানে অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত একটি অংশে সাজানো রয়েছে থরে থরে অস্ত্র। রাশিয়ায় তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড আরপিজি-৭। এই সুড়ঙ্গের ব্যাপ্তি কয়েকশো কিলোমিটার। ওই সব সুড়ঙ্গের ভিতরে রয়েছে বাঙ্কার, বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার থেকে শুরু করে নানা ফাঁদও। চিনা একে সিরিজের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ইরানে নির্মিত স্বল্পপাল্লার রকেটের পাশাপাশি সেই তালিকায় রয়েছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। ইজরায়েলি সেনার তরফে এক্স হ্যান্ডেলে উদ্ধার করা অস্ত্রের তালিকার পাশাপাশি ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে ইজরায়েলি ফৌজ দাবি করেছে, মঙ্গলবার গাজায় (Israel-Gaza War) সেনা অভিযানের সময়ই সন্ধান মেলে হামাসের গোপন অস্ত্রভাণ্ডারের। তালিকায় রয়েছে প্রায় দেড় হাজার হ্যান্ড গ্রেনেড, ৭৬০টি আরপিজি, আত্মঘাতী হামলার জন্য বানানো ৪২৭টি বিস্ফোরক ভরা বেল্ট, ৩৭৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১০৬টি রকেট। ইজরায়েলি সেনা আরও দাবি করেছে, গত ৭ অগাস্ট হামাস বাহিনী হামলা চালানোর আগে ওই অস্ত্রভাণ্ডার থেকেই অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছিল। পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইউক্রেন সেনার সহায়তায় পাঠানো পশ্চিমি দুনিয়ার অস্ত্রও ‘ঘুরপথে’ জোগাড় করেছে হামাস জঙ্গিরা। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের তালিকায় তারও নমুনা মিলেছে বলে দাবি। গাজায় অসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু বাড়তে থাকায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে ইজরায়েলের উপর। তারপরেও যুদ্ধবিরতিতে রাজি নন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর সাফ কথা, ততদিন পর্যন্ত গাজায় জ্বালানি সরবরাহ করা হবে না, যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হবে না, যত দিন না প্যালিস্টিনীয় জঙ্গিদের হাতে আটক ২৪০ জন ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে এবং নিরীহ মানুষদের স্থানান্তরের সুযোগ দিতে বড়জোর কয়েক ঘণ্টার জন্য থামা হতে পারে, কিন্তু হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন- দূষণ রুখতে এবার সবুজ বাজির ক্লাস্টার