পুজো তো এসে গেল, আর মাত্র ক’টা দিন। নতুন জামাকাপড়, ব্লাউজ সব চাই পারফেক্ট ফিটিংস। হবে দেদার পেটপুজো তাই ওজনটা একটু কম থাকলেই ভাল কারণ পুজোর (Durga Puja- Diet) পেরোলেই দেখা যায় বেশিরভাগেরই লাফ দিয়ে অনেকটা ওজন বেড়ে গেছে। যেহেতু সবাই মোটামুটি ওয়র্কিং ফলে ষষ্ঠী পর্যন্ত সময় নেই। কিন্তু এটাই যে ভাইটাল টাইম ওজনটা কমিয়ে ফেলার! একটু চেষ্টা করলেই তিন থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত কিন্তু অনায়াসে কমিয়ে ফেলতে পারবেন। শপিংয়ের শেষ মুহূর্ত, কেনাকাটা, হালকা ভূরিভোজের পাশাপাশি চলুক ফিটনেস রিজিমও।
শুধু ওজন কমানো নয়, সেই সঙ্গে টক্সিনটাও ক্লিয়ার হওয়া দরকার। ফিক্সড টাইম না থাক, ব্যায়ামের জন্য সারাদিনে কুড়ি মিনিট রাখুন। কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন। সকালে হলে যে-সময় ঘুম থেকে ওঠেন তার আধঘণ্টা আগে উঠে পড়লেই সমাধান।
এই সময় ছাদে কুড়ি মিনিট জোরে হাঁটুন বা খোলা মাঠ থাকলে হেঁটে নিন। তবে রাস্তায় হাঁটবেন না কারণ পলিউশনে ক্ষতি হবে শরীরের। সাইক্লিং করতে পারেন। ইকুইপমেন্ট না থাকলে সাইকেল চালিয়ে আসতে পারেন।
পুজোয় (Durga Puja- Diet) আপনার নির্মেদ পেট অন্যের ঈর্ষার কারণ হতে পারে যদি নিয়মিত স্কোয়াট অভ্যাস করেন। উপুড় হয়ে শুয়ে কনুইতে ভর দিয়ে হাত পুরো সামনে সোজা রেখে অপরদিকে পায়ের আঙুল মাটিতে ঠেকিয়ে পুরো দেহকে মাটি থেকে কয়েক সেকেন্ড তুলে রাখুন।
অফিসে থাকলে লিফ্টের বদলে ক’দিন সিঁড়িটা একটু ব্যবহার করুন। আর কাজের ফাঁকে চেয়ারে বসেই এক্সারসাইজ করে নিন।
চেয়ারে একটানা বসে কাজ, ফলে পেট কোমর বেড়ে একসা। শিরদাঁড়া সোজা রেখে বসুন, লম্বা শ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেটের পেশি সঙ্কুচিত করে পেটকে ভিতরের দিকে টেনে রাখুন। ১৪-২০ সেকেন্ড রাখার পর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পেটকে আগের অবস্থায় নিয়ে আসুন।
সকালে উঠে ব্যায়ামের আগে একটু উষ্ণ গরমজল একগ্লাস খেয়ে নিন। সামান্য সময় হাতে থাকলে ঘণ্টাখানেক এক গ্লাস জলে কয়েকটুকরো শসা এবং হলুদ দু-চিমটে দিয়ে রেখে দিন ওই জলটা খেয়ে নিন খালি পেটে। এটা ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচাবে। কারণ এই হিউমিড ওয়েদার ডিহাইড্রেটেড করে দেয় শরীর।
সারাদিন পর্যাপ্ত জল বারে বারে খেয়ে যেতে হবে অল্প অল্প করে, কারণ জল কিন্তু ওজন কমায়।
এরপর দুটো খেজুর আর দুটো আমন্ড খেয়ে নিন চিবিয়ে। এই দুটোই শরীরের টক্সিন-মুক্ত করবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
কালো চায়ের পরিবর্তে গ্রিন টি খান সঙ্গে দুটো ক্রিম ক্র্যাকার। এরপর ওটস বা চিঁড়ে, খই, ছাতু, দুধ বা দই এবং কলা দিয়ে খেলে পেট ভরা থাকবে। আর কলাতে থাকা ফাইবার বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখবে। দই-মুড়িও খেতে পারেন।
আরও পড়ুন- ৯৬ বছর পর এই প্রথম মূর্তি তৈরি করে মায়ের আরাধনা
এই সময় ডেঙ্গি হচ্ছে চারপাশে। অসুখবিসুখ লেগেই আছে। আবহাওয়া সঙ্গ দিচ্ছে না। ইমিউনিটি কমছে তাই একটা সাইট্রাস ফ্রুট রাখতে হবে রোজ খাদ্যতালিকায়। পেয়ারা বা মুসাম্বি। মুসাম্বি খুব সস্তা এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। মুসাম্বি ইমিউনিটিও বাড়াতে সাহায্য করে। ডাবের জল রোজ খেতে পারেন। ডাবের জলের সঙ্গে অন্য ফলের রস মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
এই সময় কেনাকাটার শেষমুহূর্ত। কাজেই সারতেই হবে আর বাইরে বেরিয়ে ডায়েট মেনটেন করা খুব কঠিন। সবসময় হেলদি অপশন পাওয়া যাবে না। সম্ভব হলে ভাজাভুজিটা এড়িয়ে চলুন। খিদে পেলে স্যান্ডুইচ খান, মশলামুড়ি, পাপড়িচাট জাতীয়, ভেল জাতীয় খাবার খান। কম পাপড়ি দিয়ে খেলে শরীরে ক্যালরি গেলেও যেহেতু দইটা থাকে ক্ষতি কম হবে ওজনে বিরাট প্রভাব পড়ে না।
বাড়ি থেকে বেরনোর সময় একটা রুটির মধ্যে সবজি, চিকেন এবং দই দিয়ে রাপ করে নিয়ে যান। শুকনো খোলায় ছোলা ভাজা খান। ইডলি অথবা ধোকলা খান। একান্তই রিচ কিছু খেলে পরিমাণে অল্প খান। বিরিয়ানি বা চাইনিজের পরিবর্তে গ্রিলড ফিশ, চিকেন, বয়েলড মোমো, স্টেক, স্যালাড এগুলো খান। বড় একটা স্যুপ খান। স্বাদ আর ওজন দুই থাকল।
রাতের জন্য সবরকম সবজি দিয়ে বড় বোওলে করে চিকেন স্ট্যু রেখে দিন।
ডিপ ফ্রায়েড ফুড, পেস্ট্রি, প্যাটিস, চিজ, মেয়োনিজ, ব্রেড বাটার, ভাত, ময়দার রুটি-লুচি, পাকা মাছ, মাটন— এগুলো বাদ দিলে প্রথমেই ওজন বাড়তে থাকাটা আটকে দেওয়া যাবে। বদলে সব সবজি দিয়ে খিচুড়ি খান। চালের বদলে ওটস বা সুজি বা চিঁড়ের খিচুড়ি খান। ওয়ান পট চিকেন রাইস খান সবরকম সবজি দিয়ে। ভাত কম, সবজি আর চিকেন বেশি থাকবে।
বারবার খান, অল্প অল্প করে। একবারে বেশি খেয়ে নেবেন না। বারবার চা-বিস্কুট খাবেন না। দুধ সহ্য না হলে সয়া মিল্ক বা আমন্ড মিল্ক খান। ওটস বা চিঁড়ের প্যানকেক খেতে পারেন। খাবারের পরিমাণ যত কম ওজন তত কম।