প্রতিবেদন : আয়বৃদ্ধির সাফল্যে ঋণের গুরুতর বোঝাকেও যে হার মানানো সম্ভব তা প্রমাণ করল বাংলা (West Bengal)। অন্যান্য রাজ্য যখন ঋণজটে হাঁসফাঁস করছে তখন গত ৬ বছরে লাগাতার আয়বৃদ্ধির দৌলতে ঋণের ভার অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রোল মডেল হয়ে উঠছে রাজ্য। রাজ্যের এই সাফল্যের ছবি ধরা পড়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফিন্যান্সের তথ্যেই। যার সমর্থন মিলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রেও। আরবিআই-এর রিপোর্টেই স্পষ্ট, রাজ্যে ধারাবাহিকভাবে কমছে জিএসডিপি এবং ঋণের অনুপাত। রাজ্যে ঋণের অঙ্ক বাড়লেও সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং আর্থিক বিকাশ এতটাই গতি পেয়েছে যে হার মেনেছে ঋণের বোঝা। অর্থাৎ আর্থিক বৃদ্ধির হার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে এক্ষেত্রে। লক্ষণীয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো বিভিন্ন সমাজকল্যাণ প্রকল্পের দৌলতে যে টাকা পৌঁছচ্ছে সাধারণ মানুষের হাতে তার ৯৮ শতাংশই ঘুরেফিরে আসছে বাজারে। সেই টাকা মানুষ খরচ করায় গতি পাচ্ছে অর্থনীতি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফিনান্সের তথ্য বলছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট ৬ বছরে বিভিন্ন রাজ্যে ঋণের প্রেক্ষিতে বদল হয়েছে জিডিপির অনুপাত। ঋণের হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাব। সেখানে বাংলা (West Bengal) কিন্তু অসাধারণ ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে প্রগতির পথে। আয়বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে ঋণের ভার কমিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে সাফল্যের শীর্ষে এখন বাংলাই। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রর মতে, সারা দেশের অর্থনীতিকে পথ দেখাবে বাংলার এই সাফল্য। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই সাফল্যকে স্বাগত জানিয়ে ট্যুইট করেছেন। বলেছেন, বাংলা খুবই ভাল করছে। এমনকী দিল্লিও তা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: শহিদ তর্পণে আজ শপথ নেবেন ৮ থেকে ৮০
একটু গভীরে প্রবেশ করলেই আরও স্পষ্ট হবে বিষয়টা। গত আর্থিক বছরে রাজ্যের ঋণের অঙ্ক ছিল ৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের শেষে তা দাঁড়াতে পারে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ঋণের বোঝাটা যে বেড়ে চলেছে তা স্পষ্ট। কিন্তু পাশাপাশি রাজস্বের অঙ্কটাও ক্রমশ বেড়ে চলেছে দ্রুতগতিতে এবং অবশ্যই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই। কৃষি এবং শিল্পের বিকাশে অন্যান্য রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে বাংলা। গড় আয় বাড়ছে মানুষের। বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রয়ক্ষমতা। সমৃদ্ধ হচ্ছে বাজার-অর্থনীতি। আর্থিক কর্মকাণ্ডের পরিধি এইভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পিছিয়ে পড়ছে ঋণের বোঝা। সারা দেশে রোল মডেল হয়ে উঠছে বাংলা।