ছাব্বিশের ভোটে বিজেপিকে ২৬-এ নামাব, একুশের মঞ্চ থেকে বার্তা অরূপের, কী বললেন বীরবাহা-সুস্মিতা-ললিতেশ

Must read

১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। যুব কংগ্রেসের ডাকে মহাকরণ অভিযানের নেতৃত্ব ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ক্ষমতায় বাম সরকার। সিপিএমের বিরুদ্ধে ভোটে রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে মহাকরণ অভিযান করে যুব কংগ্রেস। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। চলে গুলি। নিহত হন ১৩ জন যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মী। ১৯৯৩ সালের ওই ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর ২১ জুলাই (21 july) ধর্মতলায় সভা করে আসছে তৃণমূল। এর প্রেক্ষিতে বললেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বীরবাহা হাঁসদা, সাংসদ সুস্মিতা দেব, ললিতেশ ত্রিপাঠি।

অরূপ বিশ্বাস
শহিদ তর্পণের সভায় সকলকে নতমস্তকের প্রণাম জানাই। ১৩ শহিদকে সামনে রেখে শপথ। ছাব্বিশে বিজেপিকে ছাব্বিশে নামিয়ে আনব। আমাদের হকের টাকা, রাজস্বের টাকা এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু পাওনা দিচ্ছে না এই বিজেপি। এরা বাংলাকে শেষ করতে চায়। বারবার চক্রান্ত করে বিজেপি বঞ্চিত করতে চাইছে। ১ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা আমাদের পাওনা। আমাদের দিচ্ছে না। মমতা বাংলার উন্নয়ন করছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে বাংলার উন্নয়ন চলছে। কেন্দ্রকে জানা চাই চক্রান্ত করেও বাংলার উন্নয়ন আটকানো যাবে না। যে খায় চিনি তাঁকে জোগায় চিন্তামণি। বাংলা বলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে, এ ভাষা রবি ঠাকুর, নজরুলের, বঙ্কিম চন্দ্রের ভাষা। প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে। ৩৩ কোটি দেবদেবী আমাদের। বিজেপি ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করে। অযোধ্যাতেও বিজেপি হেরেছে। আমরা এগিয়ে যাব কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।

বীরবাহা হাঁসদা
আমি একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বলতে চাই, দেশের বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে নিয়মিত ভাবে আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। তাঁদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের কোনও সম্মান দেওয়া না বিজেপি। কিন্তু এ রাজ্যে আদিবাসী মানুষ সম্মানের সঙ্গে বেঁচে আছেন। তাঁদের ধর্ম, ভাষা নিয়ে আছেন। এর জন্য আমরা বাংলাকে নিয়ে গর্বিত। এর কৃতিত্ব শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি অলচিকি ভাষায় পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সারি ও সারণা ধর্ম নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় আইন পাশ করিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই আইন এখনও আটকে রেখে দিয়েছে। এরা যে আদিবাসী বিরোধী তা এতেই প্রমাণিত। বিজেপি ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করে আদিবাসীদের অধিকার খর্ব করতে চায়। তাই আদিবাসীদের বলবো, আপনারা গর্জে উঠুন। ছাব্বিশের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত আরও শক্ত করুন।

আরও পড়ুন- পহেলগাওঁয়ে জঙ্গি হামলা: শহিদদের পরিবারকে নিয়ে মঞ্চে দলনেত্রী, দিলেন আর্থিক সাহায্য

সুস্মিতা দেব
একুশে জুলাইয়ের (21 july) মঞ্চে আমি কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। এর জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই। যেদিন থেকে কেন্দ্রে মোদি সরকার এসেছে সেদিন থেকে গোটা দেশের সঙ্গে অসমে ভেদাভেদের রাজনীতি শুরু হয়েছে। আদিবাসীদের মধ্যে ভেদাভেদ, বাঙালি, অসমিয়াদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে এই সরকার। আমরা এনআরসি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ৬ বছর ধরে আমরা শুধু কাগজ দেখিয়েছি। তারপরও কিছু হয়নি। দেশের সবচেয়ে বড় ডিটেনশন ক্যাম্পটি রয়েছে অসমে। ১৯ লক্ষ মানুষের নাম গিয়েছে। এই বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস।

ললিতেশ ত্রিপাঠি
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জোড়ার কাজ করেছেন। হিন্দিকে ভাষণের প্রথমেই উত্তরপ্রদেশের নেতা বলেন, দুঃখিত, এখনও বাংলা শিখতে পারেননি, কিন্তু আগামী দিনে শিখে নেব। তার পরেই তিনি বলেন, আমি গর্বিত যে আমি একমাত্র উত্তরপ্রদেশ থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে ছিলাম। জিততে পারিনি। সেই দায় দলের বা দলনেত্রীর নয়, সেই দায় আমার। আমি কথা দিচ্ছি, আগামী লোকসভা নির্বাচনে জোড়াফুলের টিকিটে জিতে সংসদে যাব। বিজেপিকে হঠিয়ে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ায় যোগ্যতম ব্যক্তি তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি যেভাবে লড়াই করছেন। বাংলার উন্নতি ঘটিয়েছেন, তার দিকে তাকিয়ে আছে দেশের যুব প্রজন্ম। ২০২৯ -এ এই স্বৈরাচারী বিজেপি সরকারকে সরাতে পারলেই এই শহিদের সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হবে।

Latest article