কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা, বিস্ফোরক লোকো ইন্সপেক্টর

Must read

প্রতিবেদন : কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় (Kanchenjunga Express Accident) রেল আধিকারিকরা নিজেদের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন। এই ‘যৌথ পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট’-এ একজন চিফ লোকো ইন্সপেক্টর ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, নিয়ম অমান্য করে মালগাড়িটির অত্যধিক গতিকেই দায়ী করা হয়েছে দুর্ঘটনার (Kanchenjunga Express Accident) জন্য। তবে ওই চিফ লোকো ইন্সপেক্টর অবশ্য তাঁর পর্যবেক্ষণে দাবি করেছেন, ভোর থেকে অটোমেটিক সিগন্যাল খারাপ ছিল। গোটা সেকশনে ‘অ্যাবসলিউট ব্লক’ করা উচিত ছিল। অর্থাৎ একটা সময়ে এই লাইন দিয়ে একটি ট্রেনকেই পার করার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল। অর্থাৎ রেলের অব্যবস্থা এবং ব্যর্থতা এক্ষেত্রে প্রকট। রেল কোনওভাবেই দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে না, তা স্পষ্ট ওই লোকো ইন্সপেক্টরের কথায়। যদিও ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যালিং, মেকানিকাল এবং ট্রাফিক দফতরের বাকি আধিকারিকরা এই দুর্ঘটনার দায় চাপিয়েছেন মালগাড়ির মৃত চালকের ঘাড়েই। এভাবেই তাঁরা রেলের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছেন। এর আগে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিইও জয়া বর্মাও দাবি করেছিলেন, মানুষের ভুলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। রেড সিগন্যাল অমান্য করে এগিয়ে গিয়েছিল মালগাড়িটি। কিন্তু তার পরেই জানা যায়, সকাল থেকেই ওই লাইনে অটোমেটিক সিগন্যাল গোলমাল করছিল। ‘কাগুজে সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল করছিল। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির কাছে রেড সিগন্যাল অতিক্রম করার কাগুজে ছাড়পত্র ছিল। এই কাগুজে ছাড়পত্রের অর্থ হল, ধীরগতিতে রেড সিগন্যাল পেরিয়ে যেতে পারবে তারা।
এক্ষেত্রে মালগাড়ির চালক যেমন দায় এড়াতে পারেন না মাল গাড়িটির অতিরিক্ত গতির জন্য, তেমনি রেল সব দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না। কেন রেড সিগন্যাল থাকা সত্ত্বেও একই লাইনে দুটি ট্রেনকে ছাড়পত্র দেওয়া হল সেই প্রশ্ন উঠছে রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন- তিন আইন কার্যকর করবেন না, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর

রিপোর্ট অনুযায়ী, মালগাড়ির চালককে রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার যে কাগুজে সিগন্যাল দিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল, রাঙাপানি ও ছত্তরহাট জংশনের মধ্যে যতগুলি অটোমেটিক সিগন্যাল আছে, সেগুলি পার করার অনুমতি দেওয়া হল। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি অটোমেটিক সিগন্যালে ১ মিনিট করে অপেক্ষা করতে হয় দিনের বেলায়। এরপর ১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে এগোতে হয়। অনুমতিপত্রে ট্রেনের গতিবেগ যাতে কোনওভাবেই ১৫ কিলোমিটারের বেশি না হয়, তা উল্লেখ করা হয়েছিল বলে দাবি রিপোর্টে। কিন্তু মালগাড়িটির গতিবেগ এতটা বাড়ল কী কারণে, ওই জয়েন্ট রিপোর্টে তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলেই বোঝা যাবে, কেন বিধি অমান্য করে দ্রুতগতিতে ছুটেছিল ঘাতক মালগাড়িটি। এই প্রশ্নের উত্তরের দায়ও কিন্তু এড়াতে পারে না রেল কর্তৃপক্ষ।

Latest article