হচ্ছেটা কী! হচ্ছেই বা কেন!

ঘোলা জলের কারবারিদের চ্যালেঞ্জ। বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের কাছে ওদের নোংরামির ফাঁদে পা না দেওয়ার আর্জি। এই নিয়েই কলম ধরলেন দেবলীনা মুখোপাধ্যায়

Must read

মোদিবাবু! মণিপুর সামলাতে পেরেছেন? নাগাল্যান্ড, অসম সামলাতে পেরেছেন? হাথরস, উন্নাও। কেন্দ্রীয় সরকার সেসব জায়গায় ক’টা দল পাঠিয়েছে? কোনও তৎপরতা দেখিয়েছে? কোথায় বিজেপির কোন মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন? কোথায় নারী নির্যাতনের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে? সাক্ষী মালিকদের ঘটনায় ব্রিজভূষণ ইস্তফা দিয়েছেন?
অনিতা দেওয়ান। মনে পড়ে কমরেড? বানতলায় ধর্ষণ? ধানতলায় নারী নির্যাতন? সিঙ্গুরের তাপসী মালিক? সাঁইবাড়ির ঘটনা। কেশপুর, নানুর। কোচবিহারের নার্স বর্ণালী দত্তকে খুন কার আমলে হয়েছে? মানুষ বুঝি সব ভুলে গেছেন কমরেড?
ওপরের সব ক’টা প্রশ্নের উত্তর একটাই শব্দ। ‘ না’।
তাই, তাই-ই, রাম বাম এক হয়ে বাংলার চরিত্র হননের পথে নেমেছেন!
আর তার সঙ্গে ভাঙচুর। হাসপাতালে। রোগীর সেবা করার জায়গায় গুন্ডামি। কয়েক কোটি টাকার জিনিস নষ্ট। পাশাপাশি চলছে আর এক নোংরামি। অপপ্রচার।

আরও পড়ুন-মহারাষ্ট্রে হারার ভয়ে ভোটের দিন পিছোল বিজেপি, তোপ তৃণমূলের

মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সমাজমাধ্যমে গুজব রটিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা।
কখনও বলা হচ্ছে গণধর্ষণ হয়েছে, কখনও বলা হচ্ছে ঘটনাস্থল থেকে ১৫০ গ্রাম সিমেন পাওয়া গিয়েছে। কখনও আবার কোনও মহাপাত্র পদবিধারীকে বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদবির সঙ্গে জুড়ে দোষী হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এক চিকিৎসক দাবি করেছিলেন, ঘটনাস্থল থেকে নাকি ১৫০ গ্রাম সিমেন পাওয়া গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই সে কথা বলা হয়েছে। ওই চিকিৎসক এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন? সরাসরি জানতে চাইছি, প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের গুজব ছড়াবেন কেন?
কি না করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
প্রথম দিন থেকে বলে আসছেন, দোষীদের শাস্তি চাই। এই ঘটনাকে আমরা সমর্থন করি না। ফাঁসি হোক। রাজ্য সরকার ফাঁসির পক্ষে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল। ঘটনা হয় শুক্রবার। মুখ্যমন্ত্রী তখন ঝাড়গ্রামে। ফেরার সময় পুলিশ কমিশনারের মেসেজ পান। তিনি ঘটনার বিবরণ দেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, দোষীদের ফাঁসি যাতে হয়, রাজ্য সরকার সেই ব্যবস্থা করবে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নির্যাতিতার বাড়ি যান। মেয়েটির কাজ ছিল বলে আগে যাননি। কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তদন্ত শুরু হলেও সে বিষয় প্রকাশ করা যায় না। তাঁর মৃতদেহ দেখাতে পারে না। তাই মরদেহ দেখেননি মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু গতকালকেও বলে গেছেন, দোষীদের ফাঁসি চাই। একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই লোকসভায় ৩৮ শতাংশ মহিলাদের নির্বাচিত করে পাঠিয়েছে। পুরসভায় ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সন্তান মানুষের জন্য ছুটি দিয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হোল্ডার হলেন পরিবারের মহিলা। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী রয়েছে। কামদুনিতে দু’জনকে ফাঁসি।
২০০১-এর আরজি কর। ডাক্তারি ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাসকে মারধর। পরে ঘরে ঝুলন্ত দেহ। আত্মহত্যা বলে চালানো হয়। সিপিএমপন্থী প্রবল প্রতাপশালী ডাক্তার সংগঠন। এসএফআই তখন সব নিয়ন্ত্রণ করত। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, ডিএসওকে আন্দোলন করতেই দেওয়া হয়নি। মার। এবং পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি।

আরও পড়ুন-৬৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বাতিল হল এবার যোগীরাজ্যে, কী বলবে বিজেপি

আজ সব ধোয়া তুলসীপাতা, কমরেড?
বন্ধুরা, আমি সোমা বলছি….
ন্যাকামো হচ্ছে? অডিওতে এরপর
আরজি কর নিয়ে ভয়ঙ্কর সব কথা। এরকম আরও অডিও তৈরি হবে, ছাড়া হবে আগুন জ্বালাতে, মানুষের আবেগকে প্রভাবিত বিপথে চালাতে।
সোমাকে বলছি। ঠান্ডা মাথায় অডিও ফেসবুকে না ছেড়ে সবটা সিবিআইকে বলতে। আসল দোষীদের ধরতে সাহায্য করতে।
তা না হলে বুঝতে হবে, ফেক অডিও তৈরি করে মিথ্যাচারের খেলা চলছে।
এসব বিশ্বাস করবেন না। শেয়ার করে অকারণ আগুন ছড়াবেন না। চক্রান্তকারীদের ফাঁদে পা দেবেন না।
মেয়েদের ‘রাত দখলের’ কর্মসূচিতে বুধবার কর্তব্যরত অবস্থায় জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। নিজের কর্মক্ষেত্রে কেন আক্রান্ত হতে হবে পুলিশকে? প্রশ্ন, ‘রাতটা কি শম্পারও ছিল না?’ কী উত্তর দেবেন ন্যাকা ন্যাকা ফেসবুক বিপ্লবীরা?
বেলেঘাটা। রাত দখলের নামে ২১-এর ভাষা শহিদদের স্মারক ভাঙচুর। বাম-রামের জমায়েত, সাধারণ মানুষের আবেগকে প্ররোচনা, অতি-বাম বহিরাগতদের উপস্থিতি। শেষে ভাঙচুর। ভাষা শহিদ স্মারক ভাঙচুর? বলতে পারেন, এসব কী হচ্ছে? কারা বাংলাদেশের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে?
উত্তরটা দিচ্ছি। খুব সহজ উত্তর।
নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর একটা লাশ চাইছিল ওরা। ওরা মানে, রাম-বামের দল। ধন্যবাদ কলকাতা পুলিশকে, এই লুম্পেনদের প্ররোচনায় পা না দিয়ে সংযমের সাথে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।
সেই রাতে ওরা আসলে নির্যাতিতা মেয়েটির জন্য বিচার চাইতে যায়নি। ওদের অতৃপ্ত রাজনৈতিক প্রেতাত্মা তার কুর্সির খিদে সাধারণ নাগরিকদের সামনে এগিয়ে দিয়ে পেছন দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে গিয়েছিল।
সিপিএমকে একটা কথা স্পষ্টতর ভাষায় বলা দরকার। এমনি এমনি তো আর আপনারা শূন্য হয়ে যাননি। ভূতেরও ভবিষ্যৎ থাকতে পারে, আপনাদের সেটাও নেই। বিজেপির হাতের তামাক খাচ্ছে কংগ্রেস ও সিপিএম।
তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ভাই, বোন, হিন্দু, শিখ, সকলে সমান। আমরা চরিত্র হনন করে, কুৎসা করে খাই না। এসব করে বিজেপি এক পায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর একটা পা নীতীশের উপর, চন্দ্রবাবুর উপরে।
রাম-বামের চক্রান্ত ব্যর্থ করুন। কুৎসাকারীদের ব্যর্থ করুন। দিকে দিকে আওয়াজ তুলুন, বাংলা মাকে অসম্মানের জবাব দাও বিজেপি।

Latest article