প্রতিবেদন : চাঁদে রাত যত গভীর হচ্ছে ততই কনকনে ঠান্ডায় ডুবে যাচ্ছে দুর্গম দক্ষিণ মেরু। টানা ১৪ দিন এই ভয়ঙ্কর আবহাওয়া সহ্য করে ফের কি কর্মক্ষম থাকবে প্রজ্ঞান?
আপাতত ভারতের ল্যান্ডার ও রোভার নিজেদের কাজ সেরে এখন নিদ্রাচ্ছন্ন। কিন্তু দু’সপ্তাহ ধরে নিরবচ্ছিন্ন শীত সহ্য করে আবার জেগে উঠতে পারবে, নাকি চিরঘুমের দেশেই পাড়ি দেবে ভারতের প্রজ্ঞান? সেই প্রশ্ন এখন বিজ্ঞানীদের মনে। যদিও এই নিয়ে ইসরো প্রকাশ্যে কোনও বিবৃতি দিতে চাইছে না। সত্যিই যদি প্রজ্ঞান এবং বিক্রম আবার কাজ করতে শুরু করে তাহলে তা যে মহাকাশ বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব সাফল্য হবে, বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন-দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার চন্দ্রবাবু, বিজেপি-ঘনিষ্ঠ দু’দলের দ্বন্দ্ব চরমে
জুলাই মাসের ১৪ তারিখে ভারতের মাটি ছেড়ে চাঁদের বাড়ির দিকে রওনা দেয় ভারতের চন্দ্রযান ৩। সমস্ত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে নির্ধারিত সময়ে গত ২৩ অগাস্ট সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে সফল অবতরণ হয় তার। সেই থেকে টানা নানা ছবি আর তথ্য পাঠিয়েছে ভারতের চন্দ্রযান। চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার পর সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে প্রজ্ঞান স্পষ্ট করে দিয়েছে, চাঁদে অক্সিজেন ছাড়াও সালফার, ক্যালসিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টাইটানিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যালুমিনিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু এবার বড় পরীক্ষা প্রজ্ঞানের। গবেষণা বলছে, চাঁদের উপরের ২ সেন্টিমিটার স্তরের নিচ থেকে ৮ সেন্টিমিটার নামলেই তাপমাত্রার পার্থক্য দাঁড়ায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আসলে উদ্বেগের জায়গা তৈরি করেছে তাপমাত্রার এই বিরাট পার্থক্য।
আরও পড়ুন-ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে সুনকের বার্তা খালিস্তানিদের
চাঁদে দিন আর রাতের তাপমাত্রার পারদের আকাশ-পাতাল তফাত। চাঁদের নিরক্ষীয় অঞ্চলে দিনের বেলায় তাপমাত্রার পারদ পৌঁছে যায় ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অর্থাৎ ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাতে সেটাই হয় -১৩০ ডিগ্রি। চাঁদের মেরুর কাছাকাছি যেসব জায়গা রয়েছে সেখানে এই তাপমাত্রা আরও কয়েক গুণ নেমে যায়। সেক্ষেত্রে তাপমাত্রা নেমে দাঁড়ায় প্রায় -২৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই ইসরো প্রতিমুহূর্তে পরীক্ষা করতে চাইছে বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে। ২২ সেপ্টেম্বর যখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ফের সূর্যের আলো পড়বে, তখন এদের জাগিয়ে তোলার মরিয়া চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা। সেই চেষ্টা সফল হলে ইসরোর ইতিহাসে আর এক যুগান্তকারী ঘটনা হবে।