প্রতিবেদন : ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর তা নিয়ে আর নতুন করে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যাবে না। ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বিলে এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির প্রাণভিক্ষার আর্জি একবার খারিজ করে দিলে তারপর আর কোনও আইনি পদক্ষেপের সুযোগ পাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন-রাতে মুম্বই পৌঁছনোয় সেদিন যেতে পারিনি, জয়াকে প্রণাম করে বললেন অভিষেক
ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বিলে জানানো হয়েছে, জেল সুপারকে দায়িত্ব নিতে হবে, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি বা কোনও অপরাধে একাধিক সাজাপ্রাপ্ত হলে তারা সবাই যেন ৬০ দিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়। যদি অন্য কোনও অপরাধীরা প্রাণভিক্ষার আর্জি না জানায়, তাহলে সেই অপরাধীদের নাম, ঠিকানা, কেসরেকর্ড-সহ অন্যান্য সমস্ত নথি রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় সরকারকে জমা দিতে হবে। বিলের ৪৭৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৭২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ফাঁসির সাজার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পর আর আদালতে মামলা করা যাবে না। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও প্রশ্নও তোলা যাবে না। ফাঁসির সাজার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নির্ভর করে একাধিক আইনি বিষয়ের উপর। তার মধ্যে রয়েছে, অতীত অপরাধের নজির, অপ্রত্যাশিত দেরি হওয়া ইত্যাদি।
আরও পড়ুন-পাল্টা জবাব, এবার কানাডার কূটনীতিককে বহিষ্কার ভারতের
এই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে, বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি। অনেক ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির প্রাণভিক্ষার আর্জি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিতে অত্যধিক দেরি হলে ফাঁসির সাজা লঘু হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই শেষ মুহূর্তে ফাঁসির সাজা রদ করতে এবং সাজা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ফের আদালতে মামলা করা হয়। ১৯৯১ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে সাজাপ্রাপ্ত ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাজা নিয়ে ২০১৫ সালে গভীর রাত পর্যন্ত শুনানির পর ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি হয়। ২০২০ সালে নির্ভয়া কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও একই নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। দুটি ক্ষেত্রেই ফাঁসির সাজা রদের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে মানবধিকার সংগঠনগুলি ফাঁসির বিরোধিতা করে। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত শুনানির পর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। নতুন বিলে রাষ্ট্রপতির মতামত আসার পর আইনি পদক্ষেপের পথ বন্ধের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।