আমি যখন শিশু

বড় হয়ে বাবার মতো কে না হতে চায়! কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই ফেলে-আসা শৈশব লুকিয়ে পড়ে অতীতে। সময়ের গহ্বরে আমার সেই ছোট্ট আমিটা চাপা পড়ে যায়। অনেক ব্যস্ততা আর ক্ষণিক অবসরের ভিড়ে তাঁরা কি আজও সেই ছোটবেলায় ফিরে যান? ঝালিয়ে নেন ফেলে-আসা শিশুমনের দুষ্ট-মিষ্টি অভ্যেসগুলোকে? আন্তর্জাতিক শিশুদিবস উপলক্ষে বললেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা। শুনলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

আমি আজও ছোটই আছি
রেশমী মিত্র (পরিচালক)
আমি তো এখনও সেই ছোট্ট আমিটার থেকে বেরতেই পারিনি! আজও ছোটও আছি। আমাকে যারা খুব কাছ থেকে চেনে তারা জানে। আমি মুম্বইয়ে সারাদিনের শুটিং-এর পর বাড়ি ফিরি। এখানে একাই থাকি। রাতে নিজের ঘরে ঢুকি, সেখানে বিছানায় সাজিয়ে রাখা সফট টয়েজগুলোর সঙ্গে অনর্গল কথা বলে যাই। তখন ওদেরকে স্ক্রিপট শোনাই, মনের কথা বলি। আমার কলকাতার বাড়িতেও ভর্তি সফট টয়েজ। ওদের প্রতিও ভীষণ টান। আমার মুম্বইয়ে বাড়িতে রোজ সকালে একটা কাক আসে। ওর নাম দিয়েছি বাবুরাম। ও রোজ ঠিক ছ’টায় আসে আর ঠোঁট দিয়ে কাঁচের জানলা ঠকঠক করে। বাবুরাম একদম নিরামিষ খায় না তাই ওর জন্য আমি কাঁচা চিকেন আনি। ও আবার মাঝে-মধ্যে কতগুলো বন্ধুও নিয়ে আসে। আমি আবার ওদের সঙ্গেও খুব কথা বলে যাই। আমি একবার একটা লোকেশন দেখতে গেছি দেখি সেখানে কত সফট টয়েজ তার মধ্যে একটা বিরাট সিংহ। আমি তখন এক মুহূর্তেই ভুলে গেছি যে আমি একজন ডিরেক্টর, লোকেশন দেখতে এসেছি! ব্যস ওই বিশাল সিংহটাকে কোলে নিয়ে বসে পড়লাম আর কথা বলতে শুরু করে দিয়েছি। সেই বাড়ির লোকজন তো আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সেদিকে খেয়ালই নেই! আমি আজও কারও থেকে কোনও গিফট পেলে সে যা-ই হোক, যে দামের হোক এত খুশি হয়ে যাই যে কী বলব! আমার আরও একটা ছেলেমানুষি রয়েছে যেটার কারণে আমার মেয়ে খুব রেগে যায়। কোথাও কেনাকাটা করতে গেলে আগে জিজ্ঞেস করি সেই জিনিসটার সঙ্গে কোনও ফ্রি গিফট আছে কি না। সে অনলাইনে কিছু কেনা হলেও আমার মনে হয় একটা কি ফ্রি গিফট পাব না? শপিং মলে গিয়ে হাজার হাজার টাকার শপিং করছি অথচ বিল করার সময় ওদের মাথা খেয়ে ফেলি একটা কোনও ফ্রি গিফট বা কমপ্লিমেন্টরি কিছু দিতে! আমাকে কিছু দিতেই হবে। হয়তো সেলসম্যান আমাকে একটা ছোট্ট শ্যাম্পুর স্যাশে দিল তাতেই আমি এত খুশি যে কী বলব! এখানে বলে না বিদেশেও যখন শপিং করতে যাই এই রকমই করতে থাকি একটা ফ্রি গিফটের জন্য। কিছু একটা দিল হয়তো যেটা আমার কাজেই লাগল না— তাও চাই।

আরও পড়ুন-খেলাতে নেই মন

রূপকথার গল্পের বই পড়ি
লোপামুদ্রা মিত্র (সঙ্গীতশিল্পী)
আমার তো মনে হয় আমি যা যা করি সারাদিন সবটাই আমার শিশুমনটাই করে। সেই মন কোনও কিছু ভেবেচিন্তে করে না। আমার কাছে স্টেজটা সবচেয়ে বড় জায়গা। স্টেজে যখন উঠি তখন আমি স্টার, আমি সেলেব্রিটি এগুলো একদম মাথায় থাকে না। তখন আমার গান আর আমি সবটাই যেন শিশু। শিশু মনের আর্তিতে আমি গান গাই, মগ্ন হয়ে যাই। কারণ দেখবে একটা শিশুর মধ্যে তাকে কে দেখছে, কে করতালি দিচ্ছে, কে দেখছে না, কে কী বলছে— সেইসব নিয়ে কোনও বোধ থাকে না। সে আপনতালে নিজের ভাল লাগার কাজটা করতে থাকে। আমিও ঠিক তেমনটাই করি। আমি বেড়াতে চলে যাই হুটহাট কোনও চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই। একটা কিছু পছন্দ হলে দুম করেই কিনে ফেলি অগ্রপশ্চাৎ কিছুই ভাবি না। আমার ছেলেমানুষি মনটা নিয়ে আমি কত কী ভুল যে করে ফেলি তার অন্ত নেই, মানুষকে ভালবেসে ফেলি না বুঝেই। চট করে মনে লেগে যায়, দুঃখ পেয়ে যাই, অভিমান হয়ে যায়। ছোটদের বই পড়ি বিশেষ করে রূপকথার গল্প পড়তে আমি ভীষণ ভালবাসি। দীপান্বিতা রায় নানা ধরনের রূপকথার গল্প লেখেন, আমি ওঁর গল্প খুব পড়ি।

আমার শিশুমন সবসময় বেঁচে আছে
জিনিয়া সেন (চিত্রনাট্যকার)
আমাকে যাঁরা চেনেন না তাঁরাই ভাববেন চিত্রনাট্যকার জিনিয়া সেন সিরিয়াস মানুষ। আমার মধ্যে সেই শিশুটা সবসময় বেঁচে আছে। যদি আমি ততটাই ম্যাচিওর হতাম তাহলে ফেসবুকে গিয়ে ট্রোলারদের সঙ্গে তেড়ে ঝগড়া করতাম! সেটা করি তার মানে আমার মনটা এখন সেই ছোটই আছে স্কুলে যেমন বন্ধুরা দুমদাম ঝগড়া করে ফেলতাম বা যে-কেউ সেটা করে সেটাই করে ফেলছি বড় হওয়ার পরেও। ঝগড়ার সময় অত কিছু ভাবছি না যে আমি কী বা কে।
সব কিছুই যা একটা বাচ্চা পছন্দ করে আমিও করি। আমার যারা টিম তারা জানে। হইহই করে বেরিয়ে পড়লাম ফুচকা, চুরমুর, ঝালমুড়ি, আলুকাবলি খেতে। এখনি আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে তো এখনই আইসক্রিমটা খেতেই হবে আমাকে। যা ইচ্ছে হয় তাই করি। একা একা ঘুরব খুব ইচ্ছে সেও করেছি যদিও কেউ আমাকে পুরো একা ছাড়েনি, প্রোডাকশনের একজন ছিল আমার সঙ্গে। আমি সাইক্লিং করি। শিশুসাহিত্য আমার কাছে খুব কাছের। আমি পড়ি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়ের ছোটদের যেসব গল্প, আরও যাঁরা শিশুসাহিত্যিক রয়েছেন, তাঁদের লেখা পড়ি। শুধু আমি নয়, আমার স্বামী পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এখনও শিশুসুলভ মানুষ। তাঁর সবটা দেখে-শুনে দিতে হয়। নিজের প্রতি যত্নশীল নন। জামাকাপড় থেকে খাওয়াদাওয়া সবটা গাইড করে দিতে হয়।

আজও পুজোয় ক্যাপ বন্দুক চাই
শ্বেতা মিশ্র (অভিনেত্রী)
আমি তো এখনও পুজোর সময় ক্যাপ বন্দুক ফাটাই সেই ছোটবেলার মতো। ওটা আমার চাই-ই চাই। আমার ভীষণ পছন্দের। অনেককে একথা বলতে শোনা যায় হিলিং ইওর ইনার চাইল্ড। আমাদের যে হিলিং দরকার সেটা কিন্তু সেই ফেলে-আসা শিশুমনের। আমি সেটাই করতে থাকি আমার ছোট মনকে বাঁচিয়ে রেখে। আমি এখনও খেলনা কিনি এবং তার জন্য আমার মধ্যে কোনও লজ্জা নেই। নিজের কাছে রেখে দিই যত্ন করে। ছোটদের গল্পের বই বিশেষ করতে কমিকস পড়তে এখনও ভালবাসি। ছোটবেলায় কিনতাম এখনও আমি কমিকস কিনি। মার কাছে প্রচণ্ড বায়না করি। ঝগড়া করি। একটা খাবার খেতে ইচ্ছে করলে সেটা নিয়ে চলতেই থাকে কখন মা সেটা বানিয়ে দেবে। আমার ছোট বোন আছে, ওর সঙ্গে একদম ছোট হয়ে যাই। আমরা দু’জনে রাত জেগে গল্প করি কারণ ছাড়াই সামান্য কোনও বিষয়ে হেসে গড়িয়ে যাই।

আরও পড়ুন-উত্তরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

এখনও পকেটমানি বায়না করি
দেবলীনা কুমার (অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী)
আমি তো সবসময় ছোট বাচ্চাদের মতোই কাজ করে ফেলি এবং আমার আশপাশের সবাই এটা ভীষণ এনজয় করে। আমি প্রচণ্ড বিরিয়ানি খেতে ভালবাসতাম ছোট থেকেই আর বিরিয়ানি যেখানেই খাই পরের দিনের জন্য সরিয়ে রেখে দিতে বলতাম মাকে, এখনও আমি এটাই করি। সবটা খাব না, খানিকটা আবার খাব বলে তুলে রেখে দেব। এখনও সেই ছোটবেলার মতো বাবার কাছে আর দিদার কাছে পকেটমানি নিই। দিদা এখন পুজোর সময় দেয় তবে বাবারটা এখনও বন্ধ হয়নি, প্রতিমাসে ওটা আমার চাই-ই। আমার এই পকেটমানির বায়নার কথা জেনে গৌরবও আমাকে বলেছিল, তাহলে আমিও দেব তোমাকে পকেটমানি! আমার তো দারুণ মজা! ওর কাছ থেকেও পেয়ে যাই। গৌরব পুজোর সময় আমাকে পকেটমানি দেয়। এখনও পুতুল কেউ দিলে আমার আনন্দ-আহ্লাদের সীমা থাকে না। আমি নিজে পুতুল কিনি। হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ফুচকা খেতে ইচ্ছে হল। এখনও কোথাও বেড়াতে গেলে ট্রেনেই যাই। সেই ছোটবেলার ট্রেনে বেড়াতে যাওয়া এতটা আনন্দের ছিল যে ওটা কোনওদিন ছাড়িনি।

ক্রিকেট খেলি সুযোগ পেলেই
দেবারতি মুখোপাধ্যায় (সাহিত্যিক)
আসলে পরিস্থিতি আমাদের বড় করে দেয়। চার, পাঁচ বছর পর্যন্ত সে শিশুসুলভই থাকে যে যা বলে তাই করে, সবাইকে বিশ্বাস করে কিন্তু ধীরে ধীরে জীবনে নানা বাধা, বিঘ্ন, ঠোক্কর খেয়ে শিখতে থাকে আর বড় হতে থাকে। জীবনই তাকে বড় করে দেয়। আমাদের সবার ক্ষেত্রেই তাই। এত জটিল যুগ সেখানে কেউ শিশুমন আঁকড়ে থাকলে তাকে পদে পদে আঘাত পেতে হবে। তাই বলে কি মনের ভিতরের সেই ছোট্ট আমিটা হারিয়ে যায়? তা নয়। তেমন ছেলেমানুষি আমার মধ্যেও আছে। আমি হঠাৎ করে বেড়াতে চলে যাই। এমনটাও হয়েছে অফিস বেরিয়েছি আর সেখানে না গিয়ে টিকিট কেটে কোথাও চলে গেছি। কাউকে না বলে দুম করে চলে গেছি এমন তো আকছার হয়েছে। আগে বাড়ির লোক খুব বকাবকি করত, রেগে যেত, এখন ওরা বুঝে গেছে আমার এই ছেলেমানুষি। কখনও ছেলের সঙ্গে সারাদিন ঘুরলাম। আমি ছোটবেলায় খুব ক্রিকেট খেলতাম। এখনও সময়-সুযোগ-অবসর পেলেই ক্রিকেট খেলতে নেমে পড়ি। আমার ক্রিকেটের সমস্ত সরঞ্জাম ছিল, এখনও আছে। এখন তো আমার বড় খেলার সঙ্গী ছেলে। বাবার কাছে কখনও বায়না তেমন করিনি। তবে একটা বায়না খুব করতাম যে আমাকে একটা বেহালা কিনে দিতে হবে। আমার বেহালা বাজানোর শখ সেই ছোট থেকে। কিন্তু আমি তো মফসসলের মেয়ে। বাবা শুনে বলেছিল, আমি বেহালা কিনে দিতে পারি যদি তুমি বেহালার টিচার খুঁজে আমাকে দিতে পারো। কিন্তু তখন আমরা যে শহরে থাকতাম বেহালার শেখাবে এমন কোনও শিক্ষক খুঁজে পাইনি ফলে শেখা হয়নি। কিন্তু বড় হয়ে যখন চাকরি করলাম তখন আমার সেই শখটা সবার আগে পূরণ করেছি একটা বেহালা কিনেছিলাম এবং শিখেছিলাম। আমি ছোটবেলায় খুব সাইকেল চালাতাম। বড় হয়ে দু’চাকা, চারচাকা— সব চালাতে শিখেছি, লাইসেন্স করেছি। মনে হয় একা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আমার বর খুব বাস্তববাদী ও আমাকে যে যখন কিছু জিনিসে বাধা দেয় আমার বিরক্ত লাগে কিন্তু পরে বুঝি আমার ছেলেমানুষি আচরণের কারণে মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি যাতে আমার ক্ষতি।

আরও পড়ুন-এসআইআর-আতঙ্ক: একদিনে চার মৃত্যু, নির্বাচন কমিশনে চিঠি তৃণমূলের

এখনও আমি সুকুমার রায় পড়ি
রিমা মুখোপাধ্যায় (মনোবিদ)
আমাদের মধ্যে তিনটে সত্তা কাজ করে। যাকে বলে ইগো স্টেট। একটা চাইল্ড, একটা প্রাপ্তবয়স্ক বা অ্যাডাল্ট আর একটা বাবা-মা বা পেরেন্ট। এর মধ্যে একটা রয়েছে স্পনটেনিয়াস চাইল্ড অর্থাৎ দুম করে বেরিয়ে পড়া, ফুচকা খাওয়া, সিনেমা দেখতে চলে যাওয়া। অত কিছু ভেবে-চিন্তে না করে একটা ভীষণরকম আনন্দে মেতে থাকা। এটাকে যারা বাঁচিয়ে রাখতে পারে তারা খুব হাসিখুশি হয়, ওদের বয়স কখনও কমে না। তবে সবাই নয়। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুমন ধামাচাপা পড়ে যায়। আমি তো এখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাই। অনেকেই আমাকে দেখে অবাক হয়েছে। আমি গঙ্গার ধারে বসে মানুষ দেখতে ভালবাসি। মনে হয় জলের কাছে গিয়ে একাই বসলাম, ঝালমুড়ি খেলাম। এক-আধবার করেওছি কিন্তু কতটা আর করা সম্ভব? নিজেরই হাসি পায়। গড়িয়াহাটের ওপর দিয়ে যখন যাই তখন মনে হয় গাড়ি থেকে নেমে ক্লিপ, টিপ কিনি। কিনেওছি বেশ কয়েকবার। কিন্তু ওই কোথায় গাড়ি রাখব। ওই টিপ, ছোট ছোট ক্লিপ কিন্তু পরব না বা আমার দরকার নেই তাও কিনি বা কিনতে ইচ্ছে করে। খুব ছোটবেলায় মা আমাকে রেডি করে দিত। দুটো বেণী বেঁধে দিত। আমার ডাকনাম ছিল ঝুমি। এখনও রাতে আমি আজও দুটো বিনুনি করে শুই। বাড়ি ফিরে খুব যখন ক্লান্ত লাগে তখন আমি বাড়িতে বরকে বা ছেলেকে বলি আমার চুলটা একটু বেঁধে দাও-না বা বেঁধে দে না! আরও একটা মজার অভ্যেস আমার আছে, আমি গ্রাইপ ওয়াটার খেতে খুব ভালবাসতাম ছোটবেলায়। এখনও কিন্তু সেই লোভটা যায়নি! দোকান থেকে কিনেছি কতবার। দোকানদার চেনা সে অবাক হত কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারত না, ভাবত কেন কিনছি। বাড়িতে তো কোনও ছোট বাচ্চা নেই। বাড়িতে এনে যখন খাবার টেবিলে রেখেছি বাড়ির লোক অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকেছে কিন্তু তাতে কী! ওটাই তো আমার আনন্দ। এখনও ছোটদের বই পড়ি, সিনেমা দেখি। সুকুমার রায় পড়তে কী যে ভাল লাগে! আমার মা বলতেন, ঝুমি আর ডাঃ রিমা মুখোপাধ্যায় দুটো মানুষ সম্পূর্ণ আলাদা। আমি তো ঝুমিকে খুঁজেই পাই না!

Latest article