প্রতিবেদন : কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী হিসেবে রেলের পরিচালন পরিকাঠামো ও রেলের পরিষেবা নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কোথায় গেল অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস (Anti Collision Device)? প্রশ্ন তাঁর। যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন কোঙ্কণ রেলওয়েকে কাজে লাগিয়ে এই অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস (Anti Collision Device) তৈরি করেছিলেন বলে জানালেন। তাঁর কথায়, আমি নিজে মাডগাঁওতে গিয়ে পুরোটা দেখে এসেছিলাম। এমন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল যাতে ড্রাইভার ঘুমিয়ে পড়লেও অ্যালার্ম বাজবে। এক লাইনে দুটি ট্রেন মুখোমুখি চলে এলে অ্যালার্ম বাজবে। সেসব কোথায়? দুর্ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানেই যে রেসকিউ অপারেশন-সহ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া-অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো-সহ সমস্ত কাজ হয়েছে সে-কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন সকাল ন’টা থেকেই আমি মনিটরিং করছিলাম। সে-সময় ভারত সরকারও বোধহয় খবর পায়নি। তার আগে থেকেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে জেলাশাসক, এসপি, ম্যানেজমেন্ট-এর টিম, মেডিক্যাল টিম, ডাক্তার— সবই আমরা পাঠিয়েছি। স্থানীয় বিধায়ককে দায়িত্ব দিয়ে সেখানে পাঠিয়েছেন তিনি। আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ-সহ স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতদেহ বার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কিছু সময়ের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের মেয়র গৌতম দেব। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা কোনও সমালোচনা নয় কিন্তু এখন রেলের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে। এখন আগে রেলের একটা শ্রী ছিল। এখন যে বিছানা দেওয়া হয় তা নোংরা। বাথরুম ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। খাবারের মান অত্যন্ত জঘন্য। কোনও দিকেই খেয়াল রাখা হয় না। এমনকী রেলের অফিসার-কর্মীদের দিকেও কেউ খেয়াল রাখে না। প্যাসেঞ্জার অ্যামেনিটি কমে গেছে।
আরও পড়ুন- দুর্ঘটনায় মৃত্যু রেলকর্মীর, শোকস্তব্ধ বেলেঘাটা
উত্তরবঙ্গে যাওয়ার বিমান না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কী অবস্থা হয়েছে? আজ দুপুর ১২-৪০-এর একটি বিমান ছিল। সেটি সকালেই ফুল হয়ে যায়। এরপর আর কোনও বিমান উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জন্য নেই। ভাবা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আমরা ফুয়েল চার্জ ফ্রি করে দিয়েছি এখানে। গোটা দেশ, পৃথিবীর বিমান এখান থেকে তেল নেবে অথচ এখান থেকে বিমান তুলে নেবে তা চলতে পারে না। এবার আমাদের ভাবতে হবে। পরে একটি বিমানের কথা আমাদের বলা হয় তাতেও ইনফরমেশনে গন্ডগোল ছিল। রওনা হওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি সোজা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাব আহতদের দেখতে। সেখান থেকে কোচবিহার চলে যাব। দুটি কাজ সেরে আগামী কাল মঙ্গলবার সন্ধের পর ফিরব।