ভারত ১৮৪-৭ (২০ওভার), নিউজিল্যান্ড ১১১ (১৭.২ ওভার)
লকি ফার্গুসনের ক্যাচটা তখনও আকাশে। দীপক চাহার ছুটছেন। গোটা ইডেন সেদিকে তাকিয়ে। বল তাঁর তালুবন্দি হতেই ৩-০! লাফিয়ে উঠলেন রোহিত শর্মা। মুম্বইয়ের বাড়িতে বসে বিরাট কোহলিও নিশ্চয়ই সেটাই করলেন। নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে তাঁদের ছুটি করেছিল। ইডেনে তার জবাব হয়ে গেল।
আরও পড়ুন-পা মাটিতে রাখতে হবে : দ্রাবিড়
পাটা উইকেটে কিউইদের এই ব্যাটিংয়ের কোনও ব্যাখ্যা নেই। কিন্তু তাতেও ভারতের এই জয়ে একফোঁটা কৃতিত্ব কমছে না। রোহিত শর্মা বোঝালেন, তিনি বিরাটের জুতোয় পা গলাতে প্রস্তুত। আর তিনি, রাহুল শরদ দ্রাবিড়। নিষ্ঠাভরে কাজে হাত দিয়েছেন। কয়েকদিনে দলকে গুছিয়ে নিয়েছেন। আর শাস্ত্রীর চেয়ারে দিব্যি মানিয়ে গিয়েছেন রোহিতদের নতুন হেডস্যার। ঠিক জায়গায় ঠিক লোককে রেখে দিয়েছেন তিনি। না হলে এত সহজে সিরিজ আসত না।
আরও পড়ুন-তেলের দাম কমছে বিশ্ব বাজারে
নিউজিল্যান্ড ইনিংস শুরু হওয়ার আগে কয়েকবার মেক্সিকান ওয়েভ হল মাঠে। প্রায় ভরা ইডেনে ব্যাপারটা বেশ জমল। তখনও বোঝা যায়নি এটা ইডেনের শো-কেস। গুদামে আরও কিছু অপেক্ষা করছে। যেটা একটু একটু করে সামনে এল কিউই উইকেট দুমদাম করে পড়তে শুরু করার পর। কখনও চক দে ইন্ডিয়া, কখনও বচনা ইয়ে হাসি। এমনকি মাধুরীর এক দো তিনও ভেসে এলো কয়েক হাজার কিলোওয়াটের শব্দযন্ত্রে! এরসঙ্গে গ্যালারির নাচ। দেখে মনে হতেই পারে কাল ঘুমে অসার হয়ে থাকা ক্রিকেট কোন জাদুবলে এইবেলা জেগেছে।
আরও পড়ুন-বিপ্লবকে চ্যালেঞ্জ করে আজ ত্রিপুরায় অভিষেক
এরসঙ্গে স্পেশাল প্যাকেজ ৩-০-র হোয়াইটওয়াশ। এতেই হয়তো বিশ্বকাপের জ্বালা জুরোল নীল জার্সিধারিদের। আসলে রোহিতরা বোর্ডে ১৮৪ রান তুলে দেওয়ার পর ম্যাচটা ভারতের দিকেই ছিল। তবু গাপ্তিল যতক্ষন ছিলেন, একটা লড়াই ছিল। তিনি চাহালের বলে ৫১ রানে ফিরে যাওয়ার পর ছবিটা আরও স্পষ্ট হল। অক্ষর প্যাটেলকে বলা হয় ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন আর্ম। ৯ রানে তিন উইকেট নিয়ে একাই ভাঙলেন নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংকে। পাশে আইপিএলের আবিষ্কার হার্শাল প্যাটেলের দুই উইকেট। ১১১ রানে ইনিংস শেষ করে ৭৩ রানে ম্যাচ হারল নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপ রানার আপদের জন্য এটা বেশ বড় ধাক্কা।
আরও পড়ুন-মুম্বই বনাম গোয়া
রবিবাসরীয় ইডেনে ৩১ বলে ৫৬ করে রোহিত যখন ফিরে গেলেন, ইডেনের বুক চিরে বেরিয়ে এল উফফ! এই ইডেন কোনওদিন হিটম্যানের ২৬৪ ভুলবে না। সেটা না হয় বাদ গেল, এই মাঠে তাঁর প্রথম প্রথম টেস্ট ম্যাচ। রঞ্জিতে ট্রিপল হান্ড্রেড। রোহিত যখন একটা একটা করে বাউন্ডারির বাইরে বল ফেলছেন, তখন ইডেনও একটু একটু করে রো-হিট, রো-হিট শুরু করেছে। কিন্তু ইশ সোধি দিনটা বরবাদ করে দিলেন। এক ভারতীয় বংশোদ্ভুতের হাতে নিজেকে তুলে দিয়ে গেলেন বিরাটের উত্তরসূরিও।
আরও পড়ুন-মার্তাদের ভয় পাচ্ছেন না আশালতা-সুইটিরা
শিশির নিয়ে এত কথার পরও রোহিত কেন এদিন পরে বল করার ঝুঁকি নিলেন, সেটা একটা প্রশ্ন। হিটম্যান বললেন, “উইকেট একটু অন্যরকম। আমরা নিজেদের পরীক্ষা করে নিতে চাই”। এদিনই বিসিসিআই জানাল ঈশান কিশান আর দীপক চাহারকে দক্ষিণ আফ্রিকায় এ দলের সিরিজে পাঠানো হবে। তার আগে এই ম্যাচে খেলিয়ে দেওয়া হল ঝাড়খণ্ড ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু সবে যখন তাঁর লম্বা ইনিংসের ঝলক দেখছে ইডেন, স্যান্টনার তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন ২১ রানে।
আরও পড়ুন-৭০০ মৃত্যুর দায় কে নেবে ? টিকায়েত
এই ম্যাচে কেএল রাহুল, রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে বিশ্রামে রেখে নেমেছিল ভারত। ২-০ তে সিরিজ জিতে নেওয়ার পর এটুকু বিলাসিতা দেখানো যায়। কিন্তু প্রথম উইকেটে রোহিত আর ঈশান মিলে ৬৯ রানের পার্টনারশিপ খেলে দেওয়ার পর আর কোনও পার্টনারশিপ জমেনি। বরং ধাপে ধাপে উইকেট হারিয়ে শেষপর্যন্ত ২০ ওভারে ভারতের রান হল ৭ উইকেটে ১৮৪ রান। এই ম্যাচের ক্যাপ্টেন স্যান্টনার নিলেন ২৭ রানে তিন উইকেট।