প্রতিবেদন: সাংবিধানিক পদে বসে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় কোন যুক্তিতে দেশের শীর্ষ আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? বুধবার ধনকড়কে তীব্র কটাক্ষ করে এই প্রশ্ন তুললেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ন্যাশন্যাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশন বা এনজেএসি নিয়ে রাজ্যসভায় নিজের চেম্বারে বৈঠক ডেকেছিলেন জগদীপ ধনকড়। এই বৈঠকে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার বাসভবন থেকে কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন এবং মন্তব্য করেন, সুপ্রিম কোর্ট এনজেএসি আইনকে বৈধতা দিলে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা শীর্ষ আদালতের কলেজিয়ামের হাতে থাকত না৷ সেই ক্ষেত্রে যশবন্ত ভার্মার মতো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হত না৷ ধনকড়ের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সাংবিধানিক পদে বসে থাকা একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশের শীর্ষ আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন? এইভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সমালোচনা করার অধিকার কারও নেই৷ এটা একেবারেই কাম্য নয়৷ সরকারের নীতি নিয়ে সংসদে আলোচনা করতে হবে, কারও অ্যান্টি চেম্বারে নয়৷
আরও পড়ুন-গোয়ায় বিরোধিতার মুখে বিজেপি
এদিকে, ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড ইস্যুতে কয়েকদিনের মধ্যে সংসদে আলোচনা না হলে বড়সড় আন্দোলনে নামবে তৃণমূল কংগ্রেস, সাফ জানানো হল দলের তরফে। এই প্রসঙ্গেই সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর সাফ হুঁশিয়ারি, ভদ্রভাবে দাবি জানাচ্ছি এপিক নিয়ে সংসদে আলোচনার জন্য৷ এতে কাজ না হলে ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’৷
উল্লেখ্য, সংসদের চলতি অধিবেশনের শুরু থেকেই এপিক কার্ড ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবি জানাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এই ইস্যুতে রাজ্যসভা ও লোকসভায় সোচ্চার হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা৷ তৃণমূল কংগ্রেসের এই দাবি যথেষ্ট ন্যায়সঙ্গত— ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করে নিয়েছেন শাসক শিবিরের অনেকেই, দাবি সূত্রের৷ এরপরেও রাজ্যসভা বা লোকসভা কোনও কক্ষেই ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড ইস্যুতে কোনও আলোচনা করা হচ্ছে না৷ এর পরেই সুর চড়িয়েছে তৃণমূল শিবির৷ যে কোনও মূল্যেই সংসদের চলতি অধিবেশনে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড নিয়ে আলোচনা করতে হবে, সাফ জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ রাজ্যসভায় এদিন তিনি মনে করিয়ে দেন, সংসদে নিয়মকানুন শাসক এবং বিরোধীপক্ষ উভয়ের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।
এদিকে এদিন লোকসভায় ত্রিভুবন সহকারী ইউনির্ভাসিটি ২০২৫ বিল নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। প্রতিবাদ করেন গৈরিকীকরণের অপচেষ্টার।
লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ ড. শর্মিলা সরকার দাবি তোলেন, বিপ্লবী রাসবিহারী বসুকে মরণোত্তর বিশেষ সম্মান দেওয়া হোক।
রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের দাবি, মিড-ডে মিলে রান্নার তেল ১০% কামানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করা হোক।
ব্যাঙ্কিং ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট বিলের ওপর বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে রাজ্যসভা সাংসদ সাকেত গোখেল অভিযোগ করেন, ৫৪ কোটি জনধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১১ কোটি অ্যাকাউন্টই নিষ্ক্রিয়। ফলে ১৪ হাজার কোটি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মানুষ তাঁদের টাকা স্পর্শই করতে পারছে না।