খালি হাতে আসছেন কেন? প্রধানমন্ত্রীর সফরের টাইমিং নিয়ে জোড়া প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করল তৃণমূল

দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, যখন আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের পাশে থেকেছেন।

Must read

দেশে যখন সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চলছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের পাশে থেকেছে, তখন সংকীর্ণ রাজনীতি করতে বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সেই শপথ নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী সফরের আগেই জোড়া প্রশ্নবাণ ছুড়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, যখন আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের পাশে থেকেছেন। তাঁর নির্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানের সন্ত্রাস কায়েম করা নিয়ে বক্তব্য রাখছেন, প্রধানমন্ত্রী সেই সময়টাকে বেছে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে কুৎসা করার জন্য। তার প্রশ্ন, এই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্পূর্ণ রাজনীতি করতে আসার কারণ কী? আমরা টাইম নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে আসছেন কেন? ভোটের আগে পরিযায়ী ভোট পাখিরা বাংলায় আসেন। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা খালি হাতে আসেন, ডেলি পেসেঞ্জারি করেন। ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বাংলার পাওনা রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। ১০০ দিনের ৩৭০০ কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র, আবাসের টাকা দেয়নি। বাংলা থেকে রাশি রাশি টাকা কর তুলে নিয়ে গিয়েছেন, সেই টাকাও দেননি প্রধানমন্ত্রী। এখন খালি হাতে আসছেন কেন? শুধু কথা বলতে, বাংলা সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কুৎসা করতে?

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতিই নেই! কালীঘাট থেকে ৬ জনকে আটক করল পুলিশ

কুণাল বলেন, আমাদের সোজা কথা, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতি করার জন্য রাজনৈতিক বক্তৃতা করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সৌজন্য দেখিয়ে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস দায়িত্ববান রাজনীতি পরিচয় দিয়েছে। দেশের পাশে থেকেছে। এই সময় দয়া করে আপনারা অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সেনাবাহিনীর লড়াইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না।
দুই, বাংলার প্রাপ্য দিন। প্রধানমন্ত্রী যেখানে আসছেন সেখানকার গরিব মানুষও ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য টাকা পাননি। তাই সস্তার রাজনীতির প্রচার করলেই বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের সাফ কথা বাংলার টাকা বাংলাকে দিন। আমরা খুব স্পষ্টভাবে এই দুই দাবি সর্বসমক্ষে পেশ করলাম।
সেই সঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন ছুড়ে দেন, আজ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চলছে। এরমধ্যে বাংলায় কুৎসা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দু’বছরের বেশি সময় ধরে মণিপুর জ্বলছে, সেখানে তো গেলেন না প্রধানমন্ত্রী? পহেলগাঁওয়ের ওখানে যে সমস্ত গ্রাম বিধ্বস্ত পাক গুলি-গোলায়, সেখানে তো গেলেন না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী বাংলায় আসছেন, আসার আগে আবার পোস্ট করে কুৎসা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা যখন সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে, আপনি বাংলায় আসছেন সংকীর্ণ রাজনীতি করতে। এটা কোন টাইমিং? প্রধানমন্ত্রী এই সফরে যদি বাংলা সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কুৎসা হয়, তাহলে তার জবাব যুক্তি তথ্য দিয়ে দেওয়া হবে। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার যে, যখন জঙ্গি হামলায় আমাদের এখানকার নিরীহ পর্যটকরা মারা গিয়েছেন, সেনা শহিদ হয়েছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে আসছেন রাজনীতি করতে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, আমরা দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে কেন্দ্রের সঙ্গে আছি, সোনার পাশে আছি। আমরা শহিদতর্পণ করব, সেনাদের সম্মান জানাব একসঙ্গে, কোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ থাকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, বিশেষ অধিবেশন ডাকুন সংসদে। সবার জানার অধিকার রয়েছে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরবর্তী ঘটনাবলী। কুণাল বলেন, তা না করে রাজ্যে এসে সংকীর্ণ রাজনীতি করছেন। ২০২১ সালে যা করেছেন, ২০২৪ সালে যা বলেছেন, আবারও পরিযায়ী পাখির মতো আচরণ করছেন।
আমাদের আবেদন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে তাঁর বক্তৃতায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার মতো সংলাপ যেন না থাকে। বাংলার যে পাওনা তা যেন মিটিয়ে দেওয়া হয়। আমরা জনসমক্ষে তার পেশ করে রাখলাম।

Latest article