নয়াদিল্লি: রাজ্যের অধিকারে ইডি কেন হস্তক্ষেপ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তামিলনাড়ু স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে ১,০০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে ইডি। সেই মামলাতেই সুপ্রিম কোর্ট এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কার্যকারিতা এবং এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই তদন্তের মাধ্যমে রাজ্য পুলিশের অধিকারে ইডি হস্তক্ষেপ করছে কি না সেই বিষয়ে জানতে চায় শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে। প্রধান বিচারপতি গাভাই প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কী হবে? আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে কে? এটি কি মামলা তদন্ত করার বিষয়ে রাজ্যের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ নয়? যখনই আপনার সন্দেহ হবে যে রাজ্য তদন্ত করছে না, তখনই কি আপনি সেখানে যাবেন? প্রসঙ্গত, এর আগে মে মাসে শীর্ষ আদালত মার্কেটিং কর্পোরেশনের সদর দফতরে ইডির অভিযান নিয়ে কড়া মন্তব্য করে মানি লন্ডারিং তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে এই হস্তক্ষেপ করা হয়।
আরও পড়ুন-নেত্রীকে এক লক্ষের বেশি ভোটে জেতানোর অঙ্গীকার, উত্তর থেকে ফোনে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যের পক্ষে বরিষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একটি সরকারি কোম্পানিতে অভিযান চালানো যায়, বিশেষত যখন মার্কেটিং কর্পোরেশন নিজেই প্রাথমিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিল। তিনি ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের ওপর অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, অধিকাংশ এফআইআর ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। সিব্বল প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট অনুযায়ী ইডিকে রাজ্য পুলিশের সাথে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার কথা বলেন। তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষে বরিষ্ঠ আইনজীবী মুকুল রোহতগি ইডি-কর্তৃক ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি উত্থাপন করে এটিকে অনুচ্ছেদ ২১ এবং গোপনীয়তার অধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন। অন্যদিকে, ইডির পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু এই মামলায় বিস্তৃত দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, তামিলনাড়ু স্টেট মার্কেটিং কর্পোরেশনে প্রায় ৪৭টি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে এবং মদের দোকান ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি রয়েছে। তিনি দাবি করেন যে এটি কেবল আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নয়, বরং মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ। দুর্নীতিবাজরা রাজ্যের দ্বারা সুরক্ষিত এবং ইডির অফিস রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছিল। শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, গত ৬ বছরে আমি ইডির অনেক মামলা দেখেছি। কিন্তু আমি কিছু বলতে চাই না, নতুবা এটি আবার সংবাদমাধ্যমের ইস্যু হবে। এই মামলার শুনানি এখনও চলছে এবং এর রায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির এক্তিয়ারের সীমানা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে আইনিমহল।