প্রতিবেদন : খুনি শুভেন্দু ধিক্কার! ধিক ধিক ধিক্কার! খুনি শুভেন্দুর বিচার চাই। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে চণ্ডীপুরে দলবদলু গদ্দারের কনভয়ে শেখ ইসরাফিলের মৃত্যুতে এভাবেই দিনভর প্রতিবাদ-অবরোধ-মিছিলে উত্তাল হল পূর্ব মেদিনীপুর। শুধু এই জেলায় নয়, রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। সকলের একটাই দাবি, অমানবিক-খুনি গদ্দারের গ্রেফতারি। এদিন সকাল সাড়ে দশটার কিছু পরে চণ্ডীপুরে (Chandipur case) পৌঁছয় তৃণমূল কংগ্রেসের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। তাঁরা মৃত ইসরাফিলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন, সান্ত্বনা দেন। বলেন, পাশে আছি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের সবরকম সহযোগিতা করা হবে বলে জানান দলের প্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে অভিষেকের নির্দেশে ইসরাফিলের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয়। গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন ও যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। এদিন ইসরাফিলের দেহ নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস। তাতে শামিল হয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরাও। এছাড়াও গোটা চণ্ডীপুরবাসী (Chandipur case) পা মেলান প্রতিবাদ মিছিলে। কাঁথিতে প্রতিবাদ মিছিল করেন অখিল গিরি-সুপ্রকাশ গিরি সহ কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। প্রতিবাদ সভা হয় গদ্দারের কাঁথির বাড়ির সামনেও। যেভাবে বেপরোয়া গতির ঝড় তুলে কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে গদ্দার রোজ কনভয় নিয়ে যাতায়াত করে তাতে জেলার মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। যেভাবে গোটা রাস্তা জুড়ে জিগজ্যাগ করে জনবহুল এলাকা দিয়ে দুরন্ত গতিতে গদ্দারের কনভয় যায় তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যায়। হলও তাই। হতবাক করা ঘটনা হল, কনভয়ের গাড়ি ইসরাফিলকে পিষে মারার পরও গদ্দার কনভয় থামায়নি। ইসরাফিলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দূরে থাক, গদ্দার কনভয় সমেত এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। চলে শাসানিও। আর তারপর থেকে জনরোষের ভয়ে শুক্রবার দিনভর বাড়িতেই লুকিয়ে ছিল গদ্দার।
আরও পড়ুন-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রায় ‘জনসুনামি’
প্রতিবাদ সভায় সাংসদ দোলা সেন বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কি অফ দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল— কথাটা ভুলে গেলেন? ইসরাফিলকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে পালিয়ে যাওয়াটা মানুষের প্রতিনিধি হয়ে অমানুষের পর্যায়ে চলে যাওয়া। এইভাবে মানুষ হওয়ার পর্যায় থেকে পশুর পর্যায়ে চলে যাওয়াকে ধিক্কার জানাই। মানুষ হিসেবে আমি আজ লজ্জিত। বিরোধী দলনেতা জেনে রাখুন, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের মানুষ নির্বাচিত করে। সেই মানুষের জন্য বিরোধী দলনেতা এত অমানবিক কী করে হলেন? আসলে তিনি এতটাই অহংকারী যে নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, চণ্ডীপুরের সেই যুবককে সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে, হয়তো বেঁচে যেত। এভাবে তার মায়ের কোল খালি হত না। তাই এটাকে পরিকল্পিত খুন বললে ভুল বলা হবে না। চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা চণ্ডীপুরের এই ঘটনায় একেবারে সিনেমার ভিলেনের মতো আচরণ করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। চণ্ডীপুরের যে ভাইয়ের প্রাণ অকালে ঝরে গেল তার পরিবারের পাশে তৃণমূল কংগ্রেস আগামিদিনে থাকবে। দলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, মানুষ ট্রেলার দেখে তারপর সিনেমা দেখতে যায়। বিরোধী দলনেতা হয়ে শুভেন্দু অধিকারী যে ট্রেলার দেখাচ্ছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলে কি সিনেমা দেখাবেন, তা সহজেই অনুমেয়। যে গাড়িটা ইসরাফিলকে ধাক্কা মেরেছে, চেক করে দেখা যাচ্ছে সেই গাড়ির ইন্সুরেন্স ফেল ২০১৮ সাল থেকে। এরা কেমন জনপ্রতিনিধি এবার ভাবুন! জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, শুভেন্দু অধিকারী আপনি কি জানেন, চণ্ডীপুরের সেই মৃত যুবকের পরিবার এখন কেমন আছে? তাঁর গরিব বাবা রিকশা চালান। আর সেই যুবক ইসরাফিল দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তাঁদের এখন কী হবে? আপনি কি একবারও খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি ? কাপুরুষের মতো আপনার যদি এমন আচরণ হয়, আপনি কিনা আগামিদিনে বাংলা শাসন করবেন? আগামিদিনে মানুষই আপনাকে যোগ্য জবাব দেবে। এছাড়াও এই দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত প্রমুখ। এই অবস্থান বিক্ষোভের আগে শহরজুড়ে বিরোধী দলনেতার…