ফের কোভিড মাথাচাড়া দিতেই সাধারণ মানুষের পুরনো প্রশ্ন

৩২৫ টাকার ভ্যাকসিন কেন হাজার টাকা?ইনকোভ্যাকের নাকি প্রয়োজনীয়তাই নেই!

Must read

প্রতিবেদন : কোভিড (Covid Vaccine) প্রতিরোধের ন্যাজাল ভ্যাকসিনের দামে ব্যাপক অসঙ্গতি। আমজনতার প্রশ্ন, ৩২৫ টাকা দামের ভ্যাকসিন ১০০০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে কেন? সবচেয়ে বড় কথা, মাস-ইমিউনাইজেশন তো কেন্দ্রের দায়িত্ব। সকলকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার দায়িত্ব তো কেন্দ্রেরই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মানুষকে বিনামূল্যেই ভ্যাকসিন দিয়েছেন এতদিন? কেন্দ্র কেন তা করবে না? এই নিয়ে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, এর নেপথ্যে কি কেন্দ্রের বিশাল মুনাফার অঙ্ক? ন্যাজাল ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক সরকারি হাসপাতালগুলির জন্য প্রতি ডোজের দাম নির্ধারণ করেছে ৩২৫ টাকা। এই টাকাতেই সেখানে মিলবে ন্যাজাল ডোজ। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে ডোজপ্রতি মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৮০০ টাকা। সঙ্গে ৫ শতাংশ জিএসটি। আছে সার্ভিস চার্জও। সবমিলিয়ে ডোজ প্রতি খরচ হতে পারে ১০০০ টাকা। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে দামের এই বিশাল অঙ্কের ফারাকের নেপথ্য রহস্য আসলে কী? মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কি লাগামছাড়া মুনাফা লোটার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে? এই অসঙ্গতির জন্য সরাসরি কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছেন রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। কারণ, ভ্যাকসিন (Covid Vaccine) এবং দামের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রই। দামের এই অসঙ্গতি মাস-ইমিউনাইজেশনের পথের বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। একইসঙ্গে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের অভিমত, প্রথম বুস্টার ডোজ হিসেবে নেওয়া যেতে পারে ন্যাজাল ডোজ। কিন্তু যাদের ইতিমধ্যেই ব্যুস্টার ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ন্যাজাল ডোজ নিষ্প্রয়োজন। ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ এন কে অরোরার সঙ্গে তাঁরা এব্যাপারে সম্পূর্ণ একমত। হাইব্রিড ইমিউনিটির পক্ষে এটাই যথেষ্ট।

আরও পড়ুন-মনরেগায় শুধু মজুরি বাবদই বাংলার বকেয়া ২,৭৪৮ কোটি

ডাঃ সুদীপ্ত রায়, বিধায়ক : কেন বেসরকারি হাসপাতালগুলি বেশি দাম নেবে? সাধারণ মানুষের মতো আমারও একই প্রশ্ন। দায়িত্ব কেন্দ্রের। সরকারি হাসপাতালেও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পারলে কেন্দ্র কেন পারবে না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের উচিত বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপর চাপ তৈরি করা।

 

 

ডাঃ শান্তনু সেন, সাংসদ : এই প্রথম নয়, এর আগেও কেন্দ্র তিনরকম দামে ভ্যাকসিন বিক্রি করেছে। আর মুখ্যমন্ত্রী সেই ভ্যাকসিন কিনে বিনামূল্যে মানুষকে দিয়েছেন। সামাজিক দায়িত্ব কীভাবে পালন করতে হয় তা মোদি সরকারের বাংলা থেকে শেখা উচিত। এখন তো বুস্টার ডোজের পর ন্যাজাল ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার, সাংসদ : ন্যাজাল ভ্যাকসিনের মূল্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের জরুরি কর্তব্য। কলকাতা বা শহর দিয়ে বিচার করলে চলবে না। পুরুলিয়া বা দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষটির কাছে হাজার টাকা তো দূরের কথা, ১০০ টাকাও মহামূল্যবান। ভ্যাকসিনের অর্থও মানুষের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হবে? দেশটা জনকল্যাণকর রাষ্ট্র না প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি? প্রশ্ন এখন সর্বত্র দেশ জুড়ে উঠছে।

ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী,মুখ্য প্রশাসক : মানুষের বিপন্নতার সুযোগ নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলি ব্যবসা করছে। আর তাতে মদদ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভ্যাকসিন দেওয়া যেকোনও দেশের সরকারের কর্তব্য। আমাদের দেশের সরকার মানুষকে খোলা বাজার থেকে চড়া দামে কিনতে বাধ্য করছে। প্রশ্ন, সংস্থা যেখানে ৩২৫ টাকায় ভ্যাকসিন সরকারকে দিচ্ছে, তার সঙ্গে অতিরিক্ত দাম জুড়বে কেন?

Latest article