ক্ষমা চাওয়ার বিনিময়ে মুক্তি। বিশ্বের সাড়া জাগানো মামলায় উইকিলিক্স-কর্তা জুলিয়েন অ্যাসেঞ্জ এবার স্বাধীনভাবে নিজের দেশে থাকতে পারবেন। আমেরিকার একাধিক চাঞ্চল্যকর ও গোপন নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের অভিযোগে বন্দিদশা কাটার আশা উইকিলিক্স কর্তার। আমেরিকার কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি, দাবি নর্দার্ন মারিয়ানা দ্বীপের আদালতের। বুধবার তিনি ক্ষমা চাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করলে দীর্ঘ ১৪ বছরের চরম তিক্ত লড়াইয়ের অবসান হওয়ার আশা। এই অভিযোগে মার্কিন আদালতে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হওয়া নিশ্চিত ছিল। তবে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের নিরন্তর সক্রিয়তা ও একাধিক রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে মুক্তি পেতে চলেছেন অ্যাসেঞ্জ। বুধবারের পর আর তাঁকে জেলে থাকতে হবে না, আশা আইনজীবীদের।
আরও পড়ুন-সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত
বর্তমানে লন্ডনের বেলমার্শের জেলে বন্দি জুলিয়েন অ্যাসেঞ্জ। সেখানে একটি বিচ্ছিন্ন সেলে সারাদিনের ২৩ ঘণ্টা কাটাতে হয় তাঁকে। একঘণ্টা তিনি শরীরচর্চার জন্য বাইরে বেরোতে পারেন। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের পুলিশের হাতে বন্দি হওয়ার পরে ২০২২ সালে দীর্ঘদিনের সঙ্গিনী স্টেলা মরিসকে বিয়ে করেন তিনি কারাবাসেই। ইকুয়েডরের দূতাবাস, যেখানে তিনি সুইডেনের যৌন হেনস্থার অভিযোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানেই স্টেলা তাঁর দুই সন্তানের জন্ম দেন। পরে অবশ্য সুইডেনের আদালতে প্রমাণিত হয় যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছিল সাজানো এবং তা অ্যাসেঞ্জকে বেকায়দায় ফেলার চক্রান্ত। এযাবৎকাল আমেরিকার সঙ্গে অ্যাসেঞ্জের আইনি লড়াইতে সহধর্মিণী স্টেলা তাঁর পাশেই রয়েছেন।
সম্প্রতি ব্রিটিশ আদালত অ্যাসেঞ্জের আবেদনে সম্মতি দিয়ে তাঁকে আমেরিকার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আটকে দেয়। এরপরই আমেরিকার কমনওয়েলথভুক্ত দেশের মধ্যে নর্দার্ন মারিয়ানা দ্বীপে তাঁর মামলার শুনানি হয়। সেখানেই নিজের দোষের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আবেদন করেন তিনি। বুধবার সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আইনিভাবে তাঁর পাঁচ বছরের শাস্তি ঘোষণা হতে পারে। তবে ইতিমধ্যেই আরও বেশি সময় তিনি ইংল্যান্ডের জেলে শাস্তি ভোগ করেছেন বলে নতুন করে তাঁকে জেলে নাও থাকতে হতে পারে। তিনি ফিরে যেতে পারেন অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন-শপথের পরে উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের সাংসদরা, তৃণমূলের শপথে ব্যতিক্রমী ধারা
২০১০ সালে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করার অপরাধে প্রথম সংবাদের শিরোনামে আসেন উইকিলিক্স কর্ণধার জুলিয়েন অ্যাসেঞ্জ। তার আগে সুইডিশ কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মামলা দায়ের করেন তাঁর কর্মচারীরা। তবে ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে থাকায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করলেও আদালত তাঁকে সুইডেন বা আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করা থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। অবশেষে ক্ষমা চাওয়ার শর্তের মধ্য দিয়ে মুক্তি পেতে চলেছেন ৫২ বছরের প্রতিভাধর এই টেক কর্ণধার।