নয়াদিল্লি : গত পাঁচ বছরে দেশে নর্দমা পরিষ্কার (ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং) করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ৩৩০ জন শ্রমিক। সংসদের সদ্যসমাপ্ত বাদল অধিবেশনে রাজ্যসভায় মোদি সরকার এই তথ্য দিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭-২০২১ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে ৪৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাড়ুর রাজ্যসভার সদস্য কে আর এন রাজেশ কুমার আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রকের কাছে জানতে চান, গত পাঁচ বছরে সারা দেশে শহুরে সংস্থায় কর্মরত অনেক কর্মী নর্দমা পরিষ্কারের সময় মারা গিয়েছেন বলে যে খবর রয়েছে তা সত্য কি না।
আরও পড়ুন-২৫শে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ নীতীশের
প্রসঙ্গত, গত বছর অর্থাৎ ২০২১-এর ২৯ জুলাই সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় ঠিক এই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়। তখন নর্দমা পরিষ্কারের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের মৃত্যুসংখ্যা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে ঘোষণা করেছিলেন, নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে কোনও মৃত্যুর রিপোর্ট নেই আমাদের কাছে। অথচ প্রায় এক বছরের ব্যবধানে রাজ্যসভাতেই লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী কৌশল কিশোর-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত, দেশে নর্দমা পরিষ্কারের সময় মোট ৩৩০ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ১১৬ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। ২০২০ সালে সর্বনিম্ন ১৯ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন-এখনই লোকসভা ভোট হলে বিহারে ধরাশায়ী হবে এনডিএ
যদিও সরকার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে, কিন্তু সংখ্যা নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে অভিযোগ। ২০২১ সালে রামদাস আঠাওয়ালের জবাবকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে সাফাই কর্মচারী আন্দোলনের প্রধান বেজওয়াদা উইলসন ৩০ জুলাই, ২০২১-এ বলেছিলেন, গত পাঁচ বছরে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে ৪৭২ জনের মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করেছি আমরা। ২০২১-এর প্রথম সাত মাসেই মৃত্যু হয়েছে ২৬ জন সাফাই কর্মচারীর। রাজ্যসভার সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনে পেশ করা সরকারি তথ্য অনুসারে, আলোচ্য পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশে ৪৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রাজস্থানে এই পাঁচ বছরে ১৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাড়ুতে ৪২ জন, হরিয়ানায় ৩৬ জন, দিল্লিতে ৩২ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৩০ জন সাফাইকর্মী পাঁচ বছরে মারা গিয়েছেন। অন্যদিকে কেরালা এবং ছত্তিশগড়ে এই সময়ের মধ্যে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে একজন করে সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।