প্রতিবেদন : আন্দোলনের জেরে বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ রোগীদের। কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের। রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুতালিকা। আরজি করে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে মৃত্যু হয়েছে কোন্নগরের বিক্রম ভট্টাচার্যের। তারপর রিষড়ার রাজীব দেব। এসএসকেএম হাসপাতালে পরিষেবা না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই তালিকা শুধু থেমে নেই বিক্রম বা রাজীবে। আরজি করে তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের পর এই একমাসে আন্দোলনের জেরে বিনা চিকিৎসা পরিষেবায় বলি হয়েছেন ২০ জনেরও বেশি রোগী। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে স্বাস্থ্য পরিষেবা চূড়ান্ত বিঘ্নিত হচ্ছে। একজনের মৃত্যুর বিচার চাইতে গিয়ে একাধিক প্রাণ চলে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা নীরব। জাস্টিস চাইতে গিয়ে অসহায়ের কান্না বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে, এর বিচার করবে কে? এই এক মাসে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। বাতিল হয়েছে ৬ হাজারেরও বেশি অস্ত্রোপচার। সবথেকে অমানবিক ঘটনা, হাসপাতালে পৌঁছনোর পরও চিকিৎসকরা হাত দিচ্ছেন না রোগীর গায়ে। কাতরাতে কাতরাতে চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে রোগীরা। কিন্তু মন গলছে না চিকিৎসকদের। এ কেমন জাস্টিসের দাবি? সরকারি হিসেব অনুয়ায়ী, এই একমাসে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ২০ জন রোগীর। তা ক্রমেই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের পিয়ারুল শেখ, মালদহের সদ্যোজাত কন্যা, দেগঙ্গার সঙ্গীতা আচার্য, কলকাতার ছন্দা দেবী ও মিনতি বিশ্বাসের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি আরজি করে বিক্রম ভট্টাচার্য ও এসএসকেএমে রাজীব দেবের মৃত্যু সেই তালিকা দীর্ঘতর করেছে।
আরও পড়ুন: বিজেপির উত্তরাখণ্ড : গ্রামে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ!
এখানেই শেষ নয়, আরজি কর-কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে যে আন্দোলন চলছে, তার জেরে অবরোধে আটকেও মৃত্যু হয়েছে এক প্রসূতির। নদিয়ার ফুলিয়ায় বিজেপির চাক্কা জ্যামে ফেঁসে গিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে পারেননি তিনি। যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আর তাঁর দেহে প্রাণ নেই। বর্ধমানে নাদনঘাটে বিজেপির চাক্কা জ্যামে আটকে গিয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। বারবার আবেদন করেও তাঁকে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে তাঁর অবশ্য প্রাণ সংশয় হয়নি। কিন্তু যেভাবে কর্মবিরতি ও আন্দোলনের জেরে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা, তা চূড়ান্ত অমানবিক।