বাড়িতে তুলকালাম। অতিথিরা আসবে, মিডিয়াম ফ্লেমে মাংস চড়িয়ে তিন্নি বারান্দায় এসে আকাশ-পাতাল ভাবতে শুরু করেছে। একবার ভাবছে তার মায়ের শরীর নিয়ে। ভাবছে এত তাড়াতাড়ি প্রায় দশ কেজি ওজন কমে যাওয়া কোনও গুরুতর রোগের লক্ষণ নয় তো? এটা কি ক্যানসার হতে পরে? ক্যানসার হলে মায়ের ট্রিটমেন্টের কী হবে! কে সামলাবে বাবাকে! তাহলে কি স্বামী তমালকে দায়িত্ব নিতে হবে! এদিকে তমালের সঙ্গে অভিমান চলছে তিন্নির। অফিস থেকে বাড়ি এলে এত ফোন কেন! জয়ী, মুন্নি, সৌগত ওকে এত ফোন করবে! সেলসের কাজ কি আর কেউ করে না? জয়ী ও মুন্নির সঙ্গে ও হেসে হেসে কথা বলে— নিশ্চয়ই কিছু আছে। ধারণা যদি সত্যি হয় তাহলে বাবিনকে নিয়ে কোথায় যাবে? বাবিন এবার বোর্ড দেবে। এসবের মাঝে হঠাৎ নাকে মাংস ধরে যাওয়ার গন্ধ। ছুটতে ছুটতে বারান্দা থেকে রান্না ঘরে। এদিকে কাজের মেয়ে টিনা চিৎকার করছে। ‘‘দিদি তুমি এত কী ভাবো বলো তো! তুমি একটু বেশি ভাবো। সারাদিন ভাবতে থেকো আকাশের দিকে তাকিয়ে। এবার কী হবে! দাদাবাবুর আপিসের লোকেরা আসছে, এবার তো চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তুলবে!’’
আরও পড়ুন-দ্য রোশনস
চারুলতাও কি একটু বেশি ভাবত!
তিন্নি কি সত্যিই একটু বেশি ভাবে! নাকি পৃথিবীর সব মেয়েরাই একটু বেশি ভাবে! ওভারথিঙ্কিং কি একটা রোগে পরিণত হল? এই সমস্যা বাঙালি রমণীদের একার নয়। বিজ্ঞানী থেকে মনোবিদ— সবাই সন্ধিহান। ভাবছে আজকের চারুলতারা ওভারথিঙ্কিং করে! তারা আর নষ্টনীড়ে আটকে নেই। পৃথিবীর সব দায়-দায়িত্ব তাদের কাঁধে। জগৎ সংসারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় তারা। মেঘে ঢাকা তারার নীতারা সেই কবে থেকে ওভার থিঙ্কার। নিজের কথা না ভেবে তারা ভাবে পরিবারের কথা। রাষ্ট্রের কথা। দেশের কথা। আর এই ভাবনার এস্টেনশনের জন্যই কার্শিয়াংয়ের পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে, দাদা আমি বাঁচতে চাই।
চানঘরে ভাবনা
মেয়েদের চিন্তার ডার্ক রুম কোনটা বলুন তো? মেয়েরা সবচেয়ে বেশি চিন্তা করে চানঘরে। চানঘরে গান নয়, বিশ্ব ভুবন তার ভাবনার পরিধি হয়ে ওঠে। মেয়েদের নিয়ে করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে চানঘরে গিয়ে তারা সবচেয়ে বেশি ভাবে নিজেদের নিয়ে। ডায়েট কীভাবে কন্ট্রোল করতে হবে। কীভাবে মেদ কমাতে হবে। কীভাবে স্লিম বা তন্বী হয়ে উঠতে হবে। জিরো ফিগারের শপথটা নেয় এই স্নান ঘর থেকে। আর যাদের আত্মবিশ্বাসটা আরও একটু বেশি, যারা গুন-গুন করে ঠিক সুরে গান গায় তারা চিন্তা করে— একটু চেষ্টা করলে বড় শিল্পী হতে পারতাম। গানের গলাটা নেহাত মন্দ নয়। তবে চেষ্টাটা ওই স্নানঘরেই সীমাবদ্ধ। আরেক দল রমণী যারা নিজেকে নিজের থেকেও ভালবাসে, তারা ভাবে রূপ নিয়ে, সৌন্দর্য নিয়ে। কেশবতী কন্যা হলে তো কথাই নেই! প্রথম ভাবনা এখন কি চুলে শ্যাম্পু করার প্রয়োজন আছে! দু’দিন পরে করলে হয় না! হাতে সময় নেই। এখন কি চুলে কন্ডিশনার লাগানোর প্রয়োজন আছে? খুব চুল উঠছে! ইস চুল পড়ে গেলে আমাকে কি বিশ্রী দেখতে লাগবে! শরীরের যত্ন তো নেওয়াই হয় না। রূপচর্চা তো দূরের কথা। না যায় পার্লার না করানো হয় ওয়াক্সিং। এই চানঘরই মেয়েদের অতিরিক্ত ভাবনার সুযোগ দেয়। যত্ন দেয়।
সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে
চান ঘর থেকে বেরিয়ে মেয়েদের মুল চিন্তাভাবনা তার ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে। ৮-৮০ সবাইকে নিয়েই সে চিন্তা ভাবনা করে। পুরুষরা কিন্তু অনেক কুল থাকে। বেশি চিন্তা ভাবনা করে না। দু-ধরনের চিন্তায় তারা ডুবে থাকে। প্রায় সব মায়েরাই চিন্তা করেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে এখন আর শুধু চিন্তা করেন না অতিরিক্ত চিন্তা করেন। এই নম্বর নিয়ে কোথায় চাকরি পাবে! বাবার তো পয়সা নেই, ব্যবসা করবে কী করে! কী করে সংসার চলবে! বাইরে পড়াতে পাঠালে তার টাকা পাবে কোথায়! সরকারি জায়গায় চান্স না পেলে প্রাইভেটে পড়াতে গেলে তার জন্যও তো টাকার দরকার। সন্তানের সব চিন্তা মায়ের মাথায়। বাবারাও চিন্তা করেন তবে অতিরিক্ত নয়।
অতিরিক্ত যাঁরা চিন্তা করেন তাঁরা হয় অতীত নিয়ে চিন্তা করেন অথবা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করেন। অতিরিক্ত চিন্তা করা মানে সমস্যা নিয়ে চিন্তা করা। অতিরিক্ত চিন্তা করা মানে খারাপ লাগা নিয়ে চিন্তা করা। এমন সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করা যার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। অতিরিক্ত চিন্তা করে জীবনের কোনও পরিবর্তন আনা যাবে না।
আরও পড়ুন-ট্যাংরার পর বীরভূম, ২ সন্তান-সহ মায়ের মৃত্যু
যত ভাববে তত কাঁপবে
মেয়েরা যে অতিরিক্ত চিন্তা করে তা ভালর চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। অনেকে মনে করেন এই অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা খারাপ জিনিসগুলোকে ঘটতে বাধা দেয়। তাঁরা মনে করেন বারবার যদি অতীতের কথা চিন্তা না করা যায়, তাহলে আরও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। যেসব মহিলা অতিরিক্ত চিন্তা করে তাদের মাথায় আপত্তিকর, বিব্রতকর মুহূর্তগুলো পুনরায় জেগে ওঠে। ফলে তারা ঘুমোতে পারে না। শুধু চিন্তা নয়, দুশ্চিন্তা করাটা মহিলাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে।
নলেনের মিষ্টি গবেষণা
মেয়েরা যে চিন্তার ক্ষেত্রে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলে, ছাড়িয়ে যায় ভাবনার গণ্ডি তা গবেষণা করে দেখিয়েছেন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান অধ্যাপক সুশান নলেন। তাঁর গবেষণায় উঠে এসেছে, বেশির ভাগ মহিলাই অতিরিক্ত চিন্তা করেন। এবং এই চিন্তা করেই হতাশা, এগিয়ে যাওয়ার অক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেন। জার্নাল অফ কগনিটিভ সাইকো থেরাপিতে প্রকাশিত তাঁর গবেষণাপত্রে তিনি দেখিয়েছেন অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা বিশেষ করে নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা এবং আবেগ তাদের বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের কাছে ব্যঙ্গবিদ্রুপের পাত্রী করে তোলে। মধ্য বয়সি এবং তরুণীদের মধ্যে অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা করাটা প্রায় মহামারীর রূপ নিয়েছে। এই অতিরিক্ত ভাবনা প্রবীণদের মধ্যে তুলনামূলক ভাবে কম। ২৫-৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ অতিরিক্ত চিন্তা করেন, যেখানে ৪৫-৫৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ৫২ শতাংশ এবং ৬৫-৭৫ বছর বয়সিদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ। এই অতিরিক্ত চিন্তাই মেয়েদের তীব্র বিষণ্ণ করে তোলে। উদ্বেগের সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই প্রবণতায় পিছিয়ে পুরুষ। সুশান্ত নলেন-এর এই গবেষণায় প্রায় ৫৭% মহিলারা ওভার থিঙ্কার। তাই তিনি এই অতিরিক্ত চিন্তার প্রবণতাকে মহামারীর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ভাবার চেষ্টা বৃথা তাই
যখন কোনও মেয়ে বলে যে সে ‘অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করছে’, তখন সাধারণত এর অর্থ হল সে উদ্বিগ্ন বা পুনরাবৃত্তিমূলক চিন্তাভাবনার জালে আটকে আছে, বিশদ বিশ্লেষণ করছে, বিভিন্ন পরিস্থিতি কল্পনা করছে, অথবা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা প্রায়শই উদ্বেগ, নিরাপত্তাহীনতা অথবা ফলাফলের পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা থেকে উদ্ভূত হয়, বিশেষ করে যদি সে কোনও পরিস্থিতি সম্পর্কে অনিশ্চিত বা দুর্বল বোধ করে। যারা অতিরিক্ত চিন্তা করে তারা তাদের মাথায় কথোপকথন, দ্বিতীয় অনুমানের কাজ, অথবা ‘কী হলে’ পরিস্থিতি কল্পনা করতে পারে। সে হয়তো অভিভূত বা আটকে আছে, তার চিন্তাভাবনা বোঝার জন্য বা সেগুলি থেকে স্বস্তি পেতে সংগ্রাম করছে। ড. নোলেন-হোয়েকসেমা ব্যাখ্যা করেন যে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা হল আমাদের মেজাজ দ্বারা সৃষ্ট চিন্তাভাবনার প্রতি মনোযোগ দেওয়া, সেগুলি নিয়ে চিন্তা করা, সেগুলিকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া এবং সেগুলিকে আমাদের সিদ্ধান্তগুলিকে প্রভাবিত করতে দেওয়া। এটি আপনার চিন্তাভাবনাগুলিকে পর্যালোচনা করে বারবার পরীক্ষা করার মতো মনে হয়। তিনি বলেন যে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা আমাদের চিন্তাভাবনাগুলিকে ময়দার মতো মেখে ফেলার মতো। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা ব্যাপক এবং আত্মকেন্দ্রিক এবং প্রায়শই সহায়ক হয় না। গবেষকরা অতিরিক্ত চিন্তাভাবনার পরে শিক্ষার্থীদের তাদের ফলাফল সম্পর্কে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তাঁরা আবিষ্কার করেছিলেন যে শিক্ষার্থীরা কম অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ এবং সাধারণত তাদের অনুমান সম্পর্কে ভুল ছিল। আসলে, তাদের এক ধরনের টানেল ভিশন ছিল যা তাদের কেবল নেতিবাচক দিকে মনোনিবেশ করতে দেয়। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা আপনার বন্ধু নয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে পুরুষ ও মহিলাদের মস্তিষ্কের রসায়ন এবং গঠনে পার্থক্য রয়েছে, যা পুরুষ ও মহিলাদের চিন্তাভাবনা এবং প্রক্রিয়াকরণের ধরন ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করতে পারে এবং কেন তারা ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্যগত অবস্থার জন্য বেশি সংবেদনশীল হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পুরুষদের মস্তিষ্ক মহিলাদের মস্তিষ্কের তুলনায় ১০% বড়, কিন্তু এই তথ্য বুদ্ধিমত্তার উপর কোনও প্রভাব ফেলে না। বিশেষ করে, পুরুষ-মস্তিষ্কের একটি অংশ নারী-মস্তিষ্কের চেয়ে বড় : ইনফিরিয়র-প্যারিয়েটাল লোবিউল যা গণিতের সমস্যা সমাধান, গতি বিচার এবং সময় অনুমান করার সঙ্গে যুক্ত। পরিবর্তে, মহিলাদের হিপোক্যাম্পাস বেশি এবং স্নায়ু সংযোগের ঘনত্ব বেশি থাকে, যার অর্থ তারা আরও বেশি আবেগগত এবং সংবেদনশীল তথ্য প্রক্রিয়া করতে এবং শোষণ করতে সক্ষম হয়।
অতিরিক্ত না-ভাবনা
মুক্তির উপায়
এত বেশি চিন্তা-ভাবনা করে ফেলেন যে, অনেক সমস্যা তৈরি হতে শুরু করে। ফলে অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান তাঁরা। এমনকী আশপাশের মানুষের উপহাসের পাত্রও হয়ে ওঠেন। অতিরিক্ত চিন্তার সমস্যা সাধারণত দেখা যায় মহিলাদের মধ্যেই। আসলে ঘরে-বাইরে কাজের চাপ, ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা, পারিবারিক বিবাদ এবং আরও নানা কারণে মেয়েদের মনের উপর চাপ পড়ে। কিন্তু অতিরিক্ত উদ্বেগ এবং চিন্তাভাবনা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নানারকম উপায় অবলম্বনের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন ডিপ ব্রিদিং, মেডিটেশন প্রভৃতির মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব? এমন কোনও কাজ করতে হবে, যেটা নিজের পছন্দ কিংবা আগ্রহ আছে, এমন কাজই করা উচিত। যেমন— রান্না করতে ভালবাসলে নতুন নতুন রেসিপি ট্রাই করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে নাচ কিংবা আঁকার মধ্যে মনোনিবেশ করা যেতে পারে।
বিনুর ভাবনায় রবি ঠাকুর
শুধু পরিবার সন্তান নয়, বিশ্ব সংসারে মহিলাদের ভাবনার বিষয় শুধু এ-যুগ নয়, সে-যুগেও মহিলারা ওভার থিঙ্কার ছিলেন। মানে শুধু আপনি নন, আপনার দিদা-ঠাকুমারাও ওভার থিঙ্কার ছিলেন। রবি ঠাকুরের বিনু সবার দুঃখ দূর করার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। নাহলে সংসারের ওই ভাঙা ঘাটের কিনারে আনন্দতরী বইবে না। রেলের কুলি ও রুক্মিণীর মেয়ের বিয়ের খরচের ভাবনা প্যাসেঞ্জার বিনুকে ভাবিয়ে তোলে। তার মেয়ের বিয়েতে টেনেটুনে ২৫ টাকা তবু খরচ হবে কিন্তু কুলি নারীর পকেট শূন্য। কিন্তু সেই ভাবনাটা বিনুকে ভাবিত করছে। তাই বিনুকে থোক ২৫ টাকা দিতেই হবে তাকে। কিন্তু এত চিন্তা করেও বিনু কুলির মেয়ের বিয়েতে দু’টাকা বেশি দেওয়াতে পারেনি। তাই তার আজীবন ফাঁকি রয়ে গেছে।
তবু ভাবতে হয়
এ-যুগের নারীরা প্রেমেও অতিরিক্ত চিন্তার ঝড় তোলে। তারপর দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে যায়। ভাবতে থাকে শহিদ মিনারের উপর উঠে আকাশ ফাটিয়ে বলে দেবে ইন্দ্রকাকু আমার প্রেমিক। মেয়েদের ভাবনা কোনও সময়ে কমেনি। তাঁরা জন্মসূত্রে ওভার থিঙ্কার। তাই লাবণ্য-বন্যারা আজও মনের আকাশ জুড়ে ভাবনার চাদর টেনে দেয়। তৈরি করে ভাবনার একটা বড় ফানুস। শুধু প্রশ্ন রেখে যায় বনলতা সেন কি অতিরিক্ত ভেবেছে জীবনানন্দকে নিয়ে! নীরা কি ভেবেছে সুনীল গাঙ্গুলিকে নিয়ে! মোনালিসা কি লিওনার্দোকে নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা-চিন্তা করেছে! তবু তো এদের মুখে হাসি আছে, বুকে ভালবাসা আছে। এরাই পারে ভালবাসা দিয়ে চিন্তার আকাশকে মেঘে ঢেকে দিতে। এরাই পারে ভাবতে, ভাবা প্র্যাকটিস করতে। শুধু শুকতারারা তাদের সুখের খবর রাখে নিভৃতে, নির্জনে। আর তাদের ভাবনা একলা হতে চায় আপন ঢঙে আপন রঙে।