প্রতিবেদন : আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে টানা প্রতিবাদ-আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার কলেজে কলেজে ছাত্র-যুবদের পর শনিবার রাজ্য জুড়ে ব্লকে ব্লকে ধরনায় বসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। প্রতিটি জেলার প্রতিটি ব্লকে দুপুর থেকে শুরু হয় ধরনা-কর্মসূচি। কোথাও মিছিলও বের হয়। মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি, টাউন সভাপতি, ব্লক সভাপতি, শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকলেই ন্যায়বিচারের দাবি তোলেন।
আরও পড়ুন-মুমূর্ষু রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন, তবু কাজে ফিরছেন না ডাক্তাররা
রবিবারও জারি রয়েছে তৃণমূলের ধরনা কর্মসূচি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন মহিলা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা প্রতিবাদ-কর্মসূচি পালন করেন রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে। বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি। কলকাতার দু’টি জায়গায় মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের ধরনা-কর্মসূচি পালিত হয়। মধ্য কলকাতার মৌলালিতে, অপরটি দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্কে। মৌলালিতে মূলত উত্তরের এবং গোলপার্কে দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। গোলপার্কের প্রতিবাদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এছাড়াও অংশগ্রহণ করেন প্রিয়দর্শিনী হাকিম, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস কুমার, চৈতালি চট্টোপাধ্যায়-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলররা। ধরনার পর একটি গোলপার্ক থেকে মিছিল করে গড়িয়াহাট পর্যন্ত যান মহিলা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মৌলালির প্রতিবাদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, প্রিয়দর্শিনী ঘোষ-সহ উত্তর কলকাতার তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলররা। দুটি সভা থেকেই আরজি কর-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে অবিলম্বে শেষ করে দোষীদের ফাঁসির দাবি ওঠে। চলে স্লোগানও। শহর কলকাতার পাশাপাশি এদিন একই ভাবে মহিলা তৃণমূলের ধরনা কর্মসূচি পালিত হয় ব্লকে ব্লকেও। হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম-সহ দক্ষিণের প্রতিটি ব্লকেই পথে নামেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। শাস্তির দাবিতে সরব হন তাঁরা। একই সঙ্গে উত্তরের বিভিন্ন জেলাতেও ধরনায় বসেছেন মহিলা তৃণমূল কর্মীরা। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, মালদহ-সহ প্রায় সব জেলার বিভিন্ন ব্লকেই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। মহিলা তৃণমূল কর্মীদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও দোষীদের ফাঁসির দাবিতে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন-বিজেপি-রাজ্যে বাংলার শ্রমিক খুন, পরিবারের পাশে তৃণমূল
গত ৯ অগাস্ট আরজি করের ঘটনার পরই দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১২ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করে সঞ্জয় রাইকে। সিবিআই তদন্ত নিয়েও কোনও আপত্তি ছিল না মুখ্যমন্ত্রীর। সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার পর ১৯ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নতুন করে একজনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি তাঁরা। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারছে না তাঁরা। ২৮ অগাস্টের ছাত্র সমাবেশ থেকে দলনেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আওয়াজ তুলেছিলেন জবাব দিক সিবিআই। এরপরই নেত্রীর নির্দেশমতো শুক্রবার থেকে পথে নামে তৃণমূল কর্মীরা। রবিবারও সেই কর্মসূচি অব্যাহত রইল।