প্রতিবেদন : ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী কর্মসূচিতে রাজ্যে প্রায় ৯৯.৬ শতাংশ ভোটারকে এনুমারেশন ফর্ম (enumeration form) বিতরণ করা গেলেও, শহরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে এখনও বড় সমস্যা রয়ে গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৬টি শহরকেন্দ্রিক কেন্দ্রে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটার নিখোঁজ। নির্দিষ্ট ঠিকানায় তিন দফা পরিদর্শন করা সত্ত্বেও বুথ-স্তরের কর্মীরা তাঁদের খুঁজে পাননি। ফলে ওইসব এলাকায় ফর্ম বিতরণের হার আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়েছে।
শনিবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল জেলা নির্বাচন আধিকারিক এবং নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন। জেলা নির্বাচন আধিকারিকদের বক্তব্য, নিখোঁজ ভোটারদের পেছনে তিনটি বড় কারণ কাজ করছে। প্রথমত, শহরের বিভিন্ন বস্তি ও ঝুপড়ি এলাকায় গত কয়েক বছরে বহু উচ্ছেদ হয়েছে, সেখানে তৈরি হয়েছে বহুতল আবাসন। পুরনো বাসিন্দারা অন্যত্র সরে গিয়েছেন, কিন্তু তাঁরা বিএলওদের নতুন ঠিকানা জানাননি। ফলে ফর্ম বিলি করা যায়নি।
আরও পড়ুন-দিল্লি বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি আসলে ‘মাদার অফ স্যাটান’?
দ্বিতীয়ত, শহরে ভাড়া বাড়িতে বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই কাজের সুবাদে বা ব্যক্তিগত কারণে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। বাড়ির মালিক বা প্রতিবেশীরা বলতে পারছেন না, তাঁরা কোথায় গিয়েছেন। নির্দিষ্ট ঠিকানায় তিনবার যাওয়ার পরেও বিএলওরা তাঁদের খুঁজে পাচ্ছেন না। তৃতীয়ত, কিছু এলাকায়— যেমন আলিপুরদুয়ার— অনেক ভোটার প্রতিবেশী রাজ্য অসমে চলে গিয়েছেন। খড়গপুরের রেলওয়ে কোয়ার্টার থেকেও বহু ব্যক্তি নেই। তাঁদের মধ্যে কেউ অবসর নিয়েছেন, কেউ বা চাকরির সূত্রে অন্যত্র গিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, বীরভূম, হাওড়া, উত্তর কলকাতা, এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু কেন্দ্রে এই সমস্যা সবচেয়ে প্রকট বলে কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। মনোজ আগরওয়াল জানিয়েছেন, বিএলওদের অ্যাপে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে কোন ভোটার ‘লোকেটেবল নন’—অর্থাৎ তিন দফা পরিদর্শনেও যাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ফর্ম জমা দেওয়ার পর খসড়া ভোটার তালিকায় কোন কোন নাম বাদ পড়েছে তা স্পষ্ট হবে। সেই ভোটাররা চাইলে ৮ জানুয়ারির মধ্যে ফর্ম নং ৬ দাখিল করে নাম রিভিশনের আবেদন করতে পারবেন।

