উচ্চশিক্ষার প্রবেশদ্বারে প্রস্তুতিতে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে এবার বড়সড় পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘যোগ্যশ্রী’ (yogashree) প্রকল্পের আওতায় শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে একটি বিস্তৃত আবাসিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, যেখানে রাজ্যের তপশিলি জাতি (এসসি), তপশিলি উপজাতি (এসটি) এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির (ওবিসি) অন্তত ৫০০০ পড়ুয়াকে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স, পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট ও নিট-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে রাজ্য তপশিলি জাতি, উপজাতি ও ওবিসি উন্নয়ন ও অর্থ সংস্থা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ১০০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একসঙ্গে শুরু হবে এই প্রশিক্ষণ শিবির। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতি প্রশিক্ষণ পর্বে ৩০ জন করে পড়ুয়া প্রশিক্ষণ পাবেন। পুরো কোর্সটি আবাসিক, এবং রাজ্যের তরফে প্রশিক্ষণার্থীদের থাকা, খাওয়া, পড়াশোনার সামগ্রী, স্টেশনারি এবং স্বাস্থ্যবিধি কিট সবকিছুই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। কর্মসূচির সর্বনিম্ন সময়সীমা ৬০ দিন হলেও, পরীক্ষার প্রস্তুতির চাহিদা অনুযায়ী সময় বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন-আসন্ন খরিফ মরসুমের ‘নতুন কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে অর্থ সাহায্য শুরু, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলিতে পড়ুয়াদের জন্য ২৪ ঘণ্টার স্টাডি হল, অভিজ্ঞ শিক্ষাক-শিক্ষিকাদের পাঠদান ও নিয়মিত অ্যাকাডেমিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যেসব কোচিং সংস্থার আবাসিক প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের থেকে আগ্রহপত্র (ইওআই) চেয়ে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলির নির্ধারিত পরিকাঠামো থাকতে হবে। নিরাপদ হোস্টেল, উপযুক্ত ক্লাসরুম, স্বাস্থ্যকর রান্নাঘর এবং টিচিং ফেসিলিটি থাকা বাধ্যতামূলক। জেলা প্রশাসনই পড়ুয়াদের বাছাই করবে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে কোনওভাবেই সরাসরি ছাত্র ভর্তি করার অনুমতি দেওয়া হবে না। যোগ্য প্রশিক্ষণ সংস্থাগুলিকে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং প্রশিক্ষণচক্র শেষে প্রত্যেকটি সংস্থার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য, সমাজের পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার মূলস্রোতে আনার পাশাপাশি পেশাগত কোর্সে প্রবেশের সুযোগে তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা করা।