অমৃতস্নানে ঘিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার দুই প্রৌঢ়া। পশ্চিম মেদিনীরপুর ও বিজয়গড়ের বাসিন্দা তাঁরা। খবর পেয়ে কলকাতার (Kolkata) বিজয়গড়ের বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দারের বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি জানতে পারেন মহাকুম্ভের (Mahakumbha) ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। কুম্ভমেলায় চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন মৃতার পুত্র। তাঁর অভিযোগ, মায়ের ডেথ সার্টিফিকেটই দেয়নি উত্তরপ্রদেশের সরকার। ফলে কলকাতায় এনে কীভাবে দেহ সৎকার হবে। তা নিয়ে চিন্তায় পরিবার। তবে, শোকস্তব্ধ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন অরূপ।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে বিয়ের আগেই তরুণীকে পেট্রল দিয়ে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিল প্রাক্তন প্রেমিক
ছেলে, মেয়ে ও বোনের সঙ্গে মহাকুম্ভে অমৃতস্নানে গিয়েছিলেন বাসন্তী পোদ্দার। কিন্তু অভিশপ্ত রাতে অব্যবস্থা ও ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। সেখানেই শেষ নয়। মায়ের দেহ নিয়েও যোগী রাজ্যে চূড়ান্ত সমস্যায় পুত্র। তাঁর অভিযোগ, ডেথ সার্টিফিকেট দেয়নি উত্তরপ্রদেশের সরকার। মেলেনি দেহ হস্তান্তরেরও কোনও নথি। তাও দেহ নিয়ে কলকাতায় ফিরছে পরিবার। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন, তা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়েও সংশয়ে পোদ্দার পরিবার। কারণ, যে সার্টিফিকেট তাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট কিছুই লেখা নেই।
আরও পড়ুন-চূড়ান্ত অব্যবস্থা, কুম্ভমেলায় ফের আগুন
এই শোকস্তব্ধ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলার সরকার। বৃহস্পতিবার, দুপুরে বিজয়গড়ে বাসন্তী দেবীর বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী অরূপ। তাঁর কথায়, যাঁর কেউ নেই তাঁর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। যোগী সরকারের চরম অব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে অরূপ বলেন, “এটা ডেথ সার্টিফিকেটের নিয়ম নয়। এভাবে হয় না। কুম্ভ তো জাতীয় মেলা, কেন্দ্র কোটি কোটি টাকা দিয়েছে। তাও এমন হল। ওরা ব্যর্থ, ওরা ভক্তদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এখানে তো সড়ক পথে যাওয়া যায়, গঙ্গাসাগর তো জলপথ পেরিয়ে যেতে হয়। দেখে শেখা উচিত।”
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের তরফে হলফনামা অসম্পূর্ণ, ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং’-এর উপর জারি হল কড়া নিষেধাজ্ঞা
বাসন্তীদেবীর ছেলে জানান, মঙ্গলবার রাতে মৌনী অমাবস্যার অমৃত স্নানের জন্য যাচ্ছিলেন তাঁরা। আশেপাশে পুলিশের কেউ ছিল না। হঠাৎই হাজার দশেক লোক এক জায়গায় এসে পড়ে। তুমুল দৌড়াদৌড়ি-ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। সেই ধাক্কাতেই মাকে নিয়েই নীচে পড়ে যান তাঁরা। অভিযোগ, সাহায্য় করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। মাকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। কথা বলতে গিয়ে কান্নায় গলা বুজে আসে পুত্রের। তবে, সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন অরূপ। দেহ এলে কোনও সমস্যা হলে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।