প্রতিবেদন: চরম প্রতিহিংসার রাজনীতি বাংলাদেশে। শেষপর্যন্ত নিষিদ্ধই করে দেওয়া হল আওয়ামি লিগকে (Awami League)। গত বছরের ৫ অগাস্ট সেদেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশছাড়া করার পর থেকেই তাঁর নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার জন্য উঠেপড়ে লাগে অন্তর্বর্তী সরকার। ক্রমশই চাপ বাড়ায় জামায়েত এবং সমমনোভাবাপন্ন দলগুলি। শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকার। শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামি লিগ কোনও ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু মাঠে-ময়দানে নয়, কার্যকর হবে সাইবার জগতেও। অর্থাৎ, সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে কোনও বার্তা বা প্রচার চালানো যাবে না।
আরও পড়ুন-অলচিকি লিপির উদ্ভাবক পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর জন্মদিবসে শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রীর
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ঢাকায় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিক সম্মেলনে জানান। তিনি বলেন, আওয়ামি লিগের কার্যকলাপ দেশের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আওয়ামি লিগকে (Awami League) নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলনে নামে একাধিক রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী। নতুন গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্বে তৈরি হওয়া এই আন্দোলনে নানা রাজনৈতিক শক্তি যোগ দেয়। শুক্রবার জানানো হয়, দাবি বিবেচনাধীন। অবশেষে শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে।
প্রথমত, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা বাড়িয়ে নতুন সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে, যাতে ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দল ও তার অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার আইনি ক্ষমতা পায়। ওই ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার চলছে। দ্বিতীয়ত, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামি লিগের সমস্ত রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে—একপ্রকার অনির্দিষ্টকালের জন্য। আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে এখনও সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না এলেও, দলের অন্দরে ক্ষোভ ও প্রতিরোধের সুর স্পষ্ট।