প্রতিবেদন: বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসাবে আর দেখতে চান না অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক ইতিহাস মুছে ফেলে পাকিস্তানের হাতের পুতুল হওয়াই দেশের বর্তমান শাসকদের লক্ষ্য। আর তা করতে গিয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন দেখেও নিষ্ক্রিয় থাকার পাশাপাশি এবার আইন পরিবর্তন করে মুসলিম দেশের তকমা পেতে চায় অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার।
ইউনুস মনে করেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের সংবিধানে আর ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দের প্রয়োজন নেই। তাই বৃহস্পতিবার ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ হাইকোর্টে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বাতিলের জন্য সওয়াল করেছে। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের আবেগের পরিপন্থী অবস্থানও স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায়চৌধুরীর বেঞ্চে সওয়াল করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান সাফাই দেন, পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মূলে আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি এক্ষেত্রে তুলে ধরেছেন মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সংসদের নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছিল।
হাসিনা (Sheikh Hasina) জমানার সিদ্ধান্ত বাতিলের সওয়াল করতে গিয়ে বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি আমাদের রাখার দরকার নেই। এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলিম। আগে আল্লার প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটি যেভাবে আগে ছিল, আমরা আবার সেভাবেই চাইছি।
প্রসঙ্গত, হাসিনার জমানায় ২০১১ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়েছিল। ওই সংশোধনীতে সংবিধানে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের জমানায় ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা’র উল্লেখ থাকলেও পরবর্তী সময় জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল হুসেন মহম্মদ এরশাদের আমলে বাদ যায় ধর্মনিরপেক্ষতা। পঞ্চদশ সংশোধনীতে ওই চারটি বিষয় ‘মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি’ হিসাবে পুনর্বহাল করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বদলের বাংলাদেশে আর মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন- নিজেদের সন্তানদের সুরক্ষিত রেখে আমজনতাকে ধর্ম নিয়ে তাতাচ্ছেন! বিজেপি নেতাদের কড়া কটাক্ষ কানহাইয়ার