প্রতিবেদন : রাজ্যে চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছয় মাসে পণ্য পরিষেবা কর জিএসটি (West Bengal- GST) আদায়ের হার গত বছরের তুলনায় সাড়ে ১১ শতাংশ বেড়েছে। কারণ রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেড়েছে ব্যবসা। শক্তিশালী হয়েছে অর্থনীতি। রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। গত বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর সময়কালে রাজ্যে জিএসটি আদায়ের হার ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে তা বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রে এ-খবর জানা গিয়েছে। করদাতাদের মধ্যে সচেতনতার প্রচার, তাদের কর সংক্রান্ত অভিযোগ ও সমস্যা মীমাংসার ব্যবস্থা করা, কর ফাঁকি দেওয়া এবং ভুয়ো সংস্থার বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য পাওয়া গিয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
পণ্য পরিষেবা কর জিএসটির (West Bengal- GST) বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই নীতিগত ভাবে সোচ্চার তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বাংলা থেকেই আদায় হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ জিএসটি। যা অবশ্যই সরকারের এক বড় সাফল্য। দেশে এখন ৩ ধরনের জিএসটি আদায় হয়। স্টেট, সেন্ট্রাল ও ইন্টিগ্রেটেড জিএসটি। এর মধ্যে রাজ্য পায় স্টেট জিএসটির পুরো ভাগ এবং ইন্টিগ্রেটেড জিএসটিতে রাজ্যের নিজস্ব ভাগ। আন্তঃরাজ্য পণ্য বিক্রিতে যে জিএসটি আদায় হয়, সেটাই ইন্টিগ্রেটেড জিএসটি। বাংলায় জিএসটি বাবদ যে টাকা আয় হয়েছে, তা স্টেট ও ইন্টিগ্রেটেড জিএসটিতে রাজ্যের পাওনা অঙ্কের যোগফল। সেন্ট্রাল বা এ-রাজ্য থেকে আদায় হওয়া অন্য রাজ্যের প্রাপ্য ইন্টিগ্রেটেড জিএসটির অঙ্ক এর সঙ্গে যুক্ত নয়।
রাজ্যের অর্থ দফতরের আধিকারিকদের দাবি, রাজ্যে মোট যে জিএসটি আদায় হয়, তার অঙ্ক অনেক বেশি। কিন্তু কেন্দ্র এবং অন্যান্য রাজ্য তাদের প্রাপ্য অংশ কেটে নেওয়ার পর যা পড়ে থাকে এবং তার সঙ্গে অন্য রাজ্যের ইন্টিগ্রেটেড জিএসটি থেকে প্রাপ্য আয় যোগ করে এই খাতে রাজ্যের মোট আয় নির্ধারিত হয়। মোট আদায়ের তুলনায় যা অনেকটাই কম হওয়া সত্ত্বেও এর নিরিখেই রেকর্ড সাফল্য রাজ্যের। বাংলার আর্থিক বিশেষজ্ঞরা কার্যত একমত হয়ে জানিয়েছেন, জিএসটি আদায়ের ক্ষেত্রে বাংলার এই সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারণ হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা আর্থসামাজিক প্রকল্পের যথাযথ রূপায়ণ যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে এই কোভিডকালেও এবং এই সরকারের আমলে রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি। যত বেশি লেনদেন হবে, তত বেশি জিএসটি আদায় হবে। রাজ্যের মানুষের আয় বৃদ্ধির কারণেই খরচ বেড়েছে। আয় বেড়েছে বলেই তাঁদের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। আর তাঁরা যা কিনছেন তার ওপর জিএসটি আদায় হচ্ছে। সেই জিএসটির অংশই এখন বাংলার কোষাগার ভরিয়ে তুলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কোভিডের সময় থেকেই জোর দিয়েছে চাহিদানির্ভর অর্থনীতিতে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প হোক বা অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প— মানুষের হাতে নগদ টাকার জোগান বেড়েছে। রাজ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের বহরও বেড়েছে। রাজ্যের অর্থদফতর যেভাবে জিএসটি আদায়ের লক্ষ্যে সক্রিয় হয়েছে, সুফল মিলেছে তাতেও।
আরও পড়ুন- সেমিফাইনাল নিয়ে উত্তাল কলকাতা