প্রতিবেদন: মণিপুরে রক্তক্ষয়ী অশান্তি অব্যাহত। এখনও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছে। বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম ইম্ফলের এন বোলজাং এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী যখন তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল সে সময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় দুই সেনা জওয়ান গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাজ্যে বিপুল পরিমাণ সেনা, আধাসেনা মোতায়েন থাকার পরেও কীভাবে জঙ্গিরা গুলি চালাচ্ছে, অগ্নিসংযোগ করছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। মণিপুরে প্রায় ৫০ দিন ধরে অশান্তির আগুন জ্বলার পরেও প্রধানমন্ত্রী মুখে এই ইস্যুতে কোনও কথা নেই!
আরও পড়ুন-মার্কিন সফরেও মণিপুর অস্বস্তি
উত্তর-পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্যে শান্তি ফেরাতে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সর্বদল বৈঠক ডাকার জন্য কেন্দ্রের কাছে বারবার দাবি জানায়। বিরোধীদের পরামর্শ এতদিন কানে তোলেনি সরকার। কিন্তু শেষপর্যন্ত শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে পড়ে সর্বদল বৈঠক ডাকতে বাধ্য হল কেন্দ্র। ২৪ জুন শনিবার বিকেল ৩টেয় দিল্লিতে এই বৈঠক হবে। কেন্দ্রের ডাকা সর্বদল বৈঠকে থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। ডেরেক এদিন জানিয়েছেন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তবুও দলের নির্দেশে আমি বৈঠকে উপস্থিত থাকব। এরপর যদি অন্তত প্রাণহানি আটকানো যায়, শান্তি ফেরানোর কোনও রাস্তা বের করা যায়। তবে ওই বৈঠকে যথারীতি থাকছেন না মোদি। মণিপুর নিয়ে সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন অনুপস্থিত, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে। অশান্ত মণিপুরে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে মাসখানেক আগে সে-রাজ্যে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
আরও পড়ুন-রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়ার সেতু ওড়াল ইউক্রেন
বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের তরফে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চিঠির শুধুমাত্র প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই মনোভাবে প্রবল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। এক মাসেরও বেশি সময় পর একজন মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চিঠির শুধুমাত্র দায়সারা প্রাপ্তি স্বীকারে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্বও। শনিবারের বৈঠকে দলের তরফে সেই বিষয়টিও উত্থাপন করা হতে পারে।
আরও পড়ুন-ভারতে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, ওয়াশিংটন পোস্টে পাতাজোড়া সাদা-কালো বিজ্ঞাপনে প্রতিবাদ
অন্যদিকে, মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য ১৫ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিজলালকে চিঠি দিয়েছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। সেই চিঠিরও শুধুমাত্র প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছে। তবে তাঁর দাবি মেনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতে মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবিতে বৃহস্পতিবার ব্রিজলালকে চিঠি দিয়েছে কংগ্রেসও।