প্রতিবেদন : রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে (Hamas-Israel war) হাজার হাজার শিশুর কবরস্থানে পরিণত হয়েছে গাজা। সময় যত গড়াচ্ছে ক্রমশই ভয়াবহ হচ্ছে ইজরায়েল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধ। এমনকী জঙ্গি সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে শিশুদের মুণ্ডচ্ছেদের অভিযোগও সামনে এসেছে। সেই শিশুদের পরিবারের চোখের জলে ভিজেছে ইজরায়েলের মাটি। ঘটনার সূত্রপাত গত ৭ অক্টোবর। ওইদিন হামাসের অতর্কিত ভয়ঙ্কর হামলায় প্রাণ যায় প্রায় ১৫০০ ইজরায়েলির। অপহরণ করা হয় ২৪০ জনকে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ইজরায়েলের নাগরিক। একাধিক বিদেশি নাগরিকও আছেন। এমন পরিস্থিতিতে হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। আর ইজরায়েলের একনম্বর ‘টার্গেট’ হয়ে প্যালেস্টাইনের গাজা কার্যত মৃত্যুপুরী।
আরও পড়ুন- দিল্লি দাঙ্গা মামলায় শাহের পুলিশকে তিরস্কার আদালতের
হামাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজায় এপর্যন্ত প্রায় ৮,৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলের (Hamas-Israel war) লাগাতার বোমাবর্ষণে। সেইসঙ্গে স্থলসেনার গোলাবর্ষণও শুরু হয়েছে। বিধ্বংসী সংঘর্ষে চরম উদ্বেগপ্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। ইউনিসেফ সূত্রে খবর, শিশুদের জন্য গাজা ভূখণ্ড এখন অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। গাজায় যেভাবে নির্বিচারে শিশুমৃত্যু হচ্ছে, তা চরম উদ্বেগের। ইউনিসেফের রিপোর্ট বলছে, যে সংখ্যায় শিশু নিহত হয়েছে তা প্রথমে কয়েক ডজন, তারপর শতক এবং শেষ পর্যন্ত হাজারে পরিণত হয়েছে মাত্র গত ১৫ দিনের মধ্যে। ইতিমধ্যে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৩৪৫০ ছাড়িয়েছে বলে খবর। মঙ্গলবার রাতে গাজা ভূখণ্ডের বৃহত্তম উদ্বাস্তু শিবির জাবালিয়ায় ইজরায়েলি সেনার বিমান হামলায় সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক কর্মীর পরিবারের ১৯ সদস্যই প্রাণ হারান। বুধবার আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই হামলায় গাজায় কর্মরত এক ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ারের বাবা, দুই বোন, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, তাঁদের চার ছেলে-মেয়ে, আট বোনপো-বোনঝি, শ্যালিকা এবং এক কাকার মৃত্যু হয়েছে। এক বিবৃতি জারি করে ইজরায়েলের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে আল-জাজিরা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জাবালিয়া শিবিরে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৫০ মানুষ আহত হয়েছেন। ১৯৪৮ সালের ইজরায়েল-আরব যুদ্ধের ফলে প্যালেস্টাইনের বহু নাগরিক ভিটেছাড়া হয়েছিলেন। মূলত, তাঁরাই এই উদ্বাস্তু শিবিরে থাকতেন। গত দুই সপ্তাহ ধরেই ইজরায়েল সমানে গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দিচ্ছে। অনেকে সেই সতর্কতা মেনে সরে গেলেও, অনুমান করা হচ্ছে বহু পরিবারই সেখানে থেকে গিয়েছে।