উৎসবের ৪দিন কয়েকশো অসহায়দের দায়িত্ব নিলেন মন্ত্রী

Must read

সংবাদদাতা, কাটোয়া- সংখ্যাটা কয়েকশো। নাদনঘাট থানা এলাকার বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষভাবে সক্ষম ওরা। ওদের শারীরিক বা মানসিক দুর্দশার জন্য ঠাকুর দেখানোর আবদার কানে তোলেননি বাড়ির লোকজন। সে খবর কানে পৌঁছতেই উদ্যোগী মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ (Minister Swapan Debnath)। লোক পাঠিয়ে তাদের নিয়ে এলেন নিজের প্রতিষ্ঠা করা দামোদরপাড়া অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমে। সকলকে একটা করে হুইলচেয়ার উপহার দিলেন। তারপর নিজে হুইলচেয়ার ঠেলে এলাকার মণ্ডপে মণ্ডপে তাদের ঠাকুর দেখালেন। ঘোরানোর সময় যাতে কেউ বিরক্ত না হয়, সেজন্য আদিবাসীরা গোটা রাস্তাজুড়ে ধামসা-মাদল-আড়বাঁশি বাজান। রাজ্যের মন্ত্রী এভাবে পাশে দাঁড়ানোয় খুশি বিশেষভাবে সক্ষম মৌসুমী, হাসমত, বাদলরা।

এছাড়াও এলাকার পাঁচশোর উপর অনাথ, অসহায়, হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের বছরের পর বছর ধরে পুজোর সময় আনন্দে রাখার যাবতীয় দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ (Minister Swapan Debnath) । পুজোর ক’টা দিন মন্ত্রীর ধরাচুড়ো ফেলে শিশুদের ২৪ ঘন্টার সঙ্গী হয়ে ওঠেন তিনি। নাদনঘাটের দামোদরপাড়া অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রম এবং বিদ্যানগর শিশুমেলা কমিটির এই দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা আগে থেকেই এলাকার বিদ্যানগর, বড় কোবলা, ছোট কোবলা, রাজ্যধরপাড়া, গঙ্গানন্দপুর-সহ গোটা দশেক গ্রামের অনাথ, অসহায়, দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের শিশুদের তালিকা তৈরি করেন। সেই তালিকা মিলিয়ে ষষ্ঠীর দিন সকালে সবাইকে জড়ো করা হয় পুজোতলায়। তারপর সবাইকে চুল কাটিয়ে, সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানো হয়। নিজে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরে ক্ষৌরকর্ম আর স্নান করানোর তদারকি করেন স্বপনবাবু। প্রত্যেককে দেওয়া হয় নতুন পোশাক। পুজোর চারদিন শিশুদের ঠাকুর দেখানো, পেটপুরে খাওয়ানো-র পাশাপাশি ছবি আাঁকা, ছড়া বলা, নৃত্যগীতের মত তাদের প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটানোরও আয়োজন করেন স্বপনবাবু ও তাঁর সহযোগীরা। সেইসঙ্গে থাকে শিশুদের উপযোগী নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা। হেঁসেলে ঢুঁ মেরে জানা গেল, ষষ্ঠী ও সপ্তমীর মেনু ভাত, ডাল, বেগুনি, শুক্তো, সবজি, চাটনি, মিষ্টি। অষ্টমীতে লুচি, আলুর দম, পায়েস। নবমীর পাতে খিচুড়ি, লাবড়া, রসগোল্লা। আর দশমীর দিন রয়েছে ভাত, ডাল, সবজি, মাংস, মিষ্টি।

স্বপন দেবনাথ জানালেন, ‘আড়ম্বর নয়, আন্তরিকতা আর সহমর্মিতা। এই হল আমাদের পুজোর থিম।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী, বাংলার মা দুর্গা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও উদ্দেশ্য একটাই উৎসবের সময় অনাথ অসহায়দের মুখে হাসি ফোটানো। ২৫ বছর ধরে সেই চেষ্টাই করে চলেছি।’

Latest article