প্রতিবেদন : অশান্ত মণিপুরে হিংসা থামার কোনও লক্ষণ নেই। ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতিওয়ালা প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়ালেও মণিপুর আসার মতো সময় এবং সাহস কোনওটাই তাঁর নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চেষ্টা করেও উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে শান্তি ফেরাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এরই মধ্যে পুলিশ জানিয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমানায় কয়েকটি পৃথক পৃথক ঘটনায় এক পুলিশকর্মী-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে জাতিদাঙ্গা বিপর্যস্ত মণিপুরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৮০ জনের মৃত্যু হল। গৃহহীন হয়েছেন ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। একটি ছোট্ট রাজ্য দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে অগ্নিগর্ভ হয়ে থাকলেও তা নিয়ে আলোচনা করতে নারাজ কেন্দ্রের মোদি সরকার। সেখানে কোনও সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠাতেও রাজি নয়।
আরও পড়ুন-জঙ্গলমহল জুড়ে হল উৎসবের ভোট
৩ মে থেকে মণিপুরে শুরু হয়েছে জাতিদাঙ্গা। কুকি ও মেইতেই এই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে মণিপুরের পরিস্থিতি। সেনা ও আধাসেনা নামানো হলেও প্রায় প্রতিদিনই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। সেনাবাহিনীর দাবি, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ও জঙ্গল এলাকা দিয়ে দুষ্কৃতীরা বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলায় ঢুকছে। তারাই নতুন করে হিংসা ছড়াচ্ছে। শুক্রবার রাতেও দুই জেলার সীমানা সংলগ্ন এলাকায় ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার পূর্ব ইম্ফল জেলার মহাবলি রোডে দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের কাছে ডিজিটাল অর্থনীতির রোডম্যাপ নেই, দাবি বিরোধীদের
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সোংডো, আওয়াং লেখাই, কাংভাই গ্রামে তীব্র গুলির লড়াই চলে। ওই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও পাঁচজন। একাধিক বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা পিছু হঠে। অন্যদিকে বিষ্ণুপুর জেলায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক নাবালকের মৃত্যু হয়। দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু হয় পুলিশের এক কমান্ডোর। বৃহস্পতিবার থেকেই সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন-স্পিকারের নির্দেশে সঙ্কটে শিন্ডে
দুষ্কৃতীদের নতুন করে তাণ্ডবের প্রেক্ষিতে শুক্রবার মণিপুর পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিম, কাকচিং, চূড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর জেলায় যৌথ অভিযান চালায়। গুঁড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীদের একাধিক বাঙ্কার। এদিনই বীরেন সিং সরকারকে একাধিক শর্ত মেনে রাজ্যে আংশিকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরাতে বলল মণিপুর হাইকোর্ট।