প্রতিবেদন : জোশীমঠ (Joshimath- ISRO) নিয়ে ইসরোর উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল ভয়াবহ ছবি। দেখা গিয়েছে, শেষ ১২ দিনে জোশীমঠ ৫.৪ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে। তবে এই পাহাড়ি জনপদের ডুবে যাওয়া শুরু হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রায় ৯ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে জোশীমঠ। সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাড ও মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকেই জোশীমঠের মাটি ধসা শুরু। বিপর্যয়ের পর শুক্রবার থেকে জোশীমঠের দুটি বড় হোটেল ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে হোটেল ভাঙার কাজে কোনও বড় মেশিন ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-শিরডিগামী ভক্তদের বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ, মৃত ১০
ইসরোর (Joshimath- ISRO) রিপোর্ট বলছে, জোশীমঠের নির্দিষ্ট কিছু এলাকা নয়, গোটা এলাকাই অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল অবস্থায় রয়েছে। ইসরোর উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১২ দিনেই জোশীমঠ প্রায় ৫.৪ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে। একাধিক অপরিকল্পিত নির্মাণকাজের কারণেই জোশীমঠ তার ভূগর্ভস্থ ভারসাম্য হারিয়েছে। ২০২২ সালের শুরুতেই জোশীমঠে ভয়াবহ ধস নেমেছিল। তারপর থেকেই ক্রমশ বসতে শুরু করে এই ধর্মীয় জনপদ। ওই বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৯ সেন্টিমিটার বসেছিল জোশীমঠ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এনটিপিসির অপরিকল্পিত কাজের জন্যই জোশীমঠে ধস দ্রুত বেড়েছে। কোনওরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিয়েই একের পর এক সুড়ঙ্গ করেছে এনটিপিসি। তার জেরেই সুপ্রাচীন এই জনপদটি আজ বিপদের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে। ওই বৈঠকে বিপদগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এলাকার দুটি বড় হোটেল ভাঙার আগে এদিন সংলগ্ন এলাকা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই ১৩১টি বাড়িতে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছে। ওই বাড়িগুলিও দ্রুত ভেঙে ফেলা হবে। এদিকে জোশীমঠের চলতি পরিস্থিতির জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন পরিবেশবিদ গোপাল কৃষ্ণ। তাঁর অভিযোগ, চারধাম যাত্রার নামে ধর্মীয় পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তুলতে হিমালয়কে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে মোদি সরকার। কেদারের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর এবার জোশীমঠ। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে কোনও শিক্ষা নেয়নি। ১৯৮৪ এবং ১৯৯৪-এর গবেষণা রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ওই সমস্ত এলাকার পাহাড়ের ধারণক্ষমতা কম। কিন্তু সেটা জেনেও উন্নয়নের নামে এবং ধর্মীয় পর্যটনের লক্ষ্যে সরকার ওই সমস্ত এলাকায় একের পর এক পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে। যার ফলে সমগ্র এলাকার জনজাতি আজ মৃত্যুর মুখে। সরকারের উচিত অবিলম্বে চালু থাকা সমস্ত প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া। অন্যথায় হিমালয়ের বিস্তীর্ণ এলাকার পাহাড়ে একের পর এক ধস নামবে।