প্রতিবেদন : নির্লজ্জ দুমুখো নীতি! একদিকে বাংলার গরিব মানুষের টাকা আটকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে মোদি সরকার, অন্যদিকে, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে আবাস যোজনায় চলছে বেলাগাম দুর্নীতি। গরিবকে বঞ্চিত করে তাঁদের প্রাপ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ভুয়ো নামধারীরা। যোগীরাজ্যে আবাস যোজনায় লাগামছাড়া সেই দুর্নীতি এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের ৫৯ জেলায় ৯২১৭ ভুয়ো ব্যক্তির নামে আবাসে ৫৪ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
আরও পড়ুন-ডিভিসির জলে ৭ জেলা ভাসার আশঙ্কা, ঝাড়খণ্ডে অতিবৃষ্টি, নদীতীরের বাসিন্দাদের সতর্ক প্রশাসনের
সর্বভারতীয় সংবাদপত্র দৈনিক ভাস্কর-এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের ৫৯ জেলায় ৯২১৭ জন ভুয়ো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনায় গত কয়েক বছর ধরে সমানে টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপর তা প্রকাশ্যে এলেও টাকা উদ্ধার করতেও ব্যর্থ হয়েছে যোগী সরকার। কারণ, ভুতুড়ে তালিকাভুক্তদের আদৌ কোনও অস্তিত্বই নেই। বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে টাকা আটকে রাখার ছুঁতো খুঁজছে কেন্দ্র, অথচ উত্তরপ্রদেশে এতবড় দুর্নীতি সামনে আসার পরও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এখনও পর্যন্ত একদিনের জন্যেও টাকা বরাদ্দ বন্ধ করা হল না কেন? অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের মনোভাব এর থেকেই স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নস্যাৎ করে বাংলার গরিব মানুষকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বঞ্চনা করা হচ্ছে। আর উত্তরপ্রদেশ থেকে লোকসভায় জিতে প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়েছেন মোদি-রাজনাথ সিং; তাই দুর্নীতি করেও সাতখুন মাপ যোগী প্রশাসনের? কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করার পরেও কেন কোনও পদক্ষেপ নেই? অথচ বাংলায় দুর্নীতির কোনও প্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র বিজেপি নেতাদের রাজনৈতিক প্রচারের সুবিধা দিতে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ একাধিক প্রকল্পের বরাদ্দ।
আরও পড়ুন-চালু ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম
বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের এমন ভয়াবহ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পর মুখরক্ষায় ভুয়ো টাকা উদ্ধারের কথা বলছে যোগী সরকার। যদিও তার বাস্তব প্রয়োগ হয়নি এখনও। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভুয়ো ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ হওয়া টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে সরকার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কিছু টাকা উদ্ধার হলেও এখনও ১৮ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার কোনও হদিশ নেই। শুধুমাত্র যোগীরাজ্য নয়, বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্যে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে আবাস যোজনায় এমন ব্যাপক দুর্নীতি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও কেন উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না মোদি সরকার? কীসের ভয়? এখন কেন দুর্নীতির সঙ্গে আপস? অন্যদিকে, বিজেপি নেতাদের রাজনৈতিক সুবিধা করে দিতে কোনও প্রমাণ ছাড়াই কেন আটকে দেওয়া হয়েছে বাংলার মানুষের প্রাপ্য টাকা? বঙ্গবিদ্বেষী মোদির দলের নেতাদের এই প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে। এই বঞ্চনার ফলাফল কী হয়, আগামী নির্বাচনেই বিজেপি নেতাদের ভোটবাক্সে বুঝিয়ে দেবে বঙ্গবাসী।