অপরাজিতা জোয়ারদার, রায়গঞ্জ: বাড়ছে বিএসএফের অত্যাচার। অশনিসংকেত দেখছেন সীমান্তের চাষিরা। হেমতাবাদের মালন সীমান্তের উন্মুক্ত এলাকায় মাঝে কাঁটাতারের বেড়া। ধু-ধু প্রান্তরে চাষই একমাত্র রুজিরুটি। কিন্তু শান্তিতে কি কাজ করতে পারেন চাষিরা? বিএসএফের অত্যাচারের কথা বলতে গিয়ে গলা শুকিয়ে এল ইসমাইল, স্বপন, জাহাঙ্গিরদের। চোখের নিচে কালি। আতঙ্কে রাতের ঘুম যে নেই খসখসে রুগণ্ চেহারার মানুষগুলোকে দেখলেই তা ঠাহর করা যাচ্ছে। ক্ষীণ কণ্ঠস্বরে তাঁরা বলছেন, ‘বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারে আমাদের। ভয় পাই। প্রতিদিন ভাবি, আর যাব না। রইল জমি। কিন্তু সংসারের দিকে তাকিয়ে প্রাণ হাতে করে যাই।’
আরও পড়ুন : পুরভোটে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মন্ত্রীকে ঘিরে মহিলা ভোটারদের বিক্ষোভ, থানা ঘেরাও তৃণমূলের
উঠোনের এক কোণে দাঁড়িয়ে বাবার মুখের দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইসমাইলের বছর ছয়ের ছোট্ট মেয়েটা। আতঙ্কের ভাষা সে বোঝে না। তবুও বাবা কথা বলার সময় চোখের পলক পড়ছে না তার। সীমান্তের এপারে প্রতিটি বাড়ির কাহিনিই এক। বাড়ির পাশে বটগাছটার নিচে বসে বছর ৬২টির সৈদুল আনসারি। বিড়-বিড় করে বলছেন, ‘সাহেবের মুড ভাল থাকলে তবেই মিলবে অনুমতি। না হলেই অত্যাচার। হয়রানি।’ ওপারে তাঁর পাটেচাষের জমি। পাটচাষে নিষেধাজ্ঞা বরাবরই। এ ছাড়াও অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও একই রকম সমস্যায় ভুগতে হয় তাঁদের। প্রতিবাদ করলেই জোটে হুমকি, বন্দুকের বাঁটের গুঁতো। যুবক, বৃদ্ধ নির্বিশেষে প্রায় সকলের পিঠে লেগে রয়েছে বিএসএফের অত্যাচারের ছাপ। তাঁদের কাতর আর্তি— আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই।