সুমন তালুকদার, বাগদা : মুহুরি পরিবারের প্রবীণা, ৮৫ বছরের শিবানী মুহুরি প্রয়াত হন বার্ধক্যজনিত রোগে। আর তাঁকে দাহ করতে গিয়ে প্রায় শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবার। একই পরিবারের ১০ জন ও পরিজন মিলে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সেই দুর্ঘটনায়।
আরও পড়ুন : হাতির সমস্যা বাসস্থান
বাগদার সিন্দ্রানি পঞ্চায়েতের পারমাদন গ্রাম উত্তরপাড়ার মানুষ এখনও শোক সামলে উঠতে পারছেন না। জায়গায় জায়গায় মানুষের জটলা, আলোচনা সেই দুর্ঘটনার কথা। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যেন পারমাদন গ্রামে আটকে গিয়েছে! রবিবারই সব মৃতদেহের সৎকার হয়ে গিয়েছে। আহতরা এখনও চিকিৎসাধীন। তবে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নতুন করে কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি সোমবার বিকেল পর্যন্ত। শনিবার রাতে বৃদ্ধার শেষকৃত্যে তাঁর ছেলে ও মেয়েদের পরিবারের প্রায় সবাই যাচ্ছিলেন শ্মশানঘাটে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পরিবারের ১০ জনের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ছেলে স্বপনের সঙ্গেই থাকতেন বৃদ্ধা মা শিবানী। তাঁর তিন ছেলে, চার মেয়ে। বড় রবীন্দ্রনাথ এবং মেজ বৃন্দাবন। গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মেজ ছেলে বৃন্দাবন ও মেজবউমা জয়ন্তীর। তাঁদের মেয়ে মণিকা মণ্ডল আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। ছোট ছেলে স্বপন ও ছোট বউমা অর্চনা জখম হয়েছেন। কিন্তু স্বপন-অর্চনার মেয়ে শ্রাবণী, বউমা অনিতা ও পাঁচ বছরের নাতনি অনন্যার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে রবীন্দ্রনাথ মুহুরির মেয়ের শ্বশুর শ্যামল বিশ্বাস, মৃত শিবানীর দুই মেয়ে সুচিত্রা বিশ্বাস এবং বিভা বিশ্বাসেরও। বৃদ্ধার বড় মেয়ের দুই ছেলে অমলেন্দু এবং অমর বিশ্বাসও মারা গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী শোকজ্ঞাপন করেছেন, নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন, সেই সঙ্গে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তারপরেই রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিহতদের পরিবারকে দু’ লাখ টাকা করে দিয়ে এসেছেন। জ্যোতিপ্রিয় জানান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো আমরা পরিবারগুলির পাশে আছি।’’