দেবর্ষি মজুমদার, শান্তিনিকেতন : দাদু জানে আলম পৌষমেলার কৌলীন্য টোকা ছড়ি নিয়ে এসেছিলেন সেই ৬১-তে, পৌষমেলার উদ্বোধনের দিনে। তখন দুই কি তিনদিনের মেলা হত মন্দিরের কাছে। এত বছর পর ভুবনডাঙার ডাকবাংলো মাঠে হাজির নাতি। মেলার সেই কৌলীন্য টোকা নিয়ে। নাতি মোতালেব মোল্লা বললেন, ‘‘বাবার কাছে শুনেছি, দাদুর তৈরি টোকা আর ছড়ি দিয়ে সে বছর পৌষমেলার উদ্বোধন হয়েছিল। আজ ডাকবাংলো মাঠে এই মেলার উদ্বোধনে নিজের তৈরি তালপাতার টোকা নিয়ে আমি হাজির।’’ মোতালেবের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
আরও পড়ুন-পৌষমেলা ভণ্ডুলকারীকে আক্রমণ পূর্ণেন্দুর, উপাচার্য হওয়ার যোগ্যতা ওঁর নেই
ওখানকার কবিরা গ্রাম থেকে তালপাতা সংগ্রহ করে স্ত্রী জহরা বিবিকে নিয়ে তৈরি করেন তালপাতার টুপি। যাকে টোকা নামেই সবাই চেনে। মোতালেব জানালেন, দিনে খানছয়েক টোকা বানানো যায়। তালপাতা গাছ থেকে পেড়ে শুকানোর পর সুতো দিয়ে সেলাই করে টোকা বানাতে হয়। তারপর রং। এক-একটি দাম পড়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। বললেন, শান্তিনিকেতনে মেলা হলে ভাল হত। নাম না জানলেও জানেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য মেলা হতে দেননি। বলেন, খুব খারাপ করেছেন উনি। একই সুর মেলায় আসা তাঁর প্রতিবেশী সাবিনা বিবি ও জুবেরা বেওয়ার মুখে। তাঁরাও এসেছেন টোকা, তালপাতার ফুলের সাজি বিক্রি করতে।
আরও পড়ুন-‘বিপন্ন ভারত’-এর চাহিদা প্রথম দিনেই
শান্তিনিকেতনের ব্যাগের সঙ্গে টোকা আর ছড়ি পৌষমেলা তথা শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য। মুর্শিদাবাদের এক পর্যটক জানালেন, ‘‘মেলায় এগুলো হাতে পেয়ে বেশ আনন্দ পেয়েছি।’’ প্রবীণ আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতনের মেলার কৌলীন্যই টোকা ও ছড়ি।’’