কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে সর্বকালীন রেকর্ড তৈরী করে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭২ শতাংশ ভোট নিয়ে ১৩৪টি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগেই কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ করেছে। আজ ছিল মেয়র, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারপার্সন ও মেয়র পারিষদদের শপথ গ্রহণ। আর এই অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে রাখতে প্রথা ভেঙে পুরসভার লনে খোলা আকাশের নিচে শপথ বাক্য পাঠ করান সকলে।
আরও পড়ুন-KMC MIC: কলকাতার নতুন পুরবোর্ডে মেয়র পারিষদে দায়িত্বপ্রাপ্ত কারা
এদিন দ্বিতীয় দফায় মেয়র হিসেবে শপথ নেন ফিরহাদ হাকিম। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সহ ১৩ জন মেয়র পারিষদ। একইসঙ্গে শপথবাক্য পাঠ করেন চেয়ারপার্সন মালা রায়।
এদিন দালাল চক্র থেকে কলকাতা পুরসভাকে মুক্ত করাকে অগ্রাধিকার দিতে চান বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। এখন থেকে কলকাতা পুরসভা হবে আরও বেশি ডিজিটাল। অনলাইনে পরিষেবা পাওয়া যাবে। প্রতিটি দপ্তরের জন্য তৈরি করা হবে বিশেষ অ্যাপ। মানুষকে যাতে পুরসভায় এসে সময় নষ্ট করতে না হয় সেই ব্যবস্থাই করা হবে। ভোটের আগে কলকতাবাসীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া “দশ দিগন্ত”র ইশতেহারের পুঙ্খানুপুঙ্খ পালন করা হবে আগামী পাঁচ বছর।
আরও পড়ুন-ডেরেকের পর এবার করোনা আক্রান্ত Luizinho Faleiro
কলকাতার মেয়র হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথগ্রহণের আগামীর পরিকল্পনা নিয়ে কি বললেন ফিরহাদ হাকিম
অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে জমি-বাড়ি মিউটেশেন, বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন দেবে কলকাতা পুরসভা। এখন ১ মাসের মধ্যে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন মিলবে। পরে ১৫ দিনের মধ্যে এই ছাড়পত্র মিলে যাবে।
জলের লাইন, করের আবেদনও করা যাবে অনলাইনে।
‘টক টু মেয়র’ (Talk to Mayor) চলবে। এবার থেকে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যাবে। মেয়র অফিসের হোয়াটস অ্যাপ নম্বর দেওয়া থাকবে। কোনও এলাকার সমস্যার ছবি তুলে সেখানে পাঠান যাবে। সেই ছবি পৌঁছে যাবে মেয়রের কাছে। সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে সেই ছবি তুলে অভিযোগকারীর কাছে পৌঁছে যাবে।
আরও পড়ুন-প্রাণের উৎস সন্ধানে দৈত্য টেলিস্কোপের মহাশূন্যে যাত্রা
হকার ও বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে নতুন নীতি আনবে পুরসভা।ফুটপাথে থাকা দোকানে ইলেকট্রিক ওভেন ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
কলকাতার বাতাসের গুনমান বৃদ্ধির জন্য সবুজায়নে জোর।
ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়ন। সম্ভব হলে বোরোগুলিতে চেতলার মতো মেয়র ক্লিনিক তৈরি করা হবে।
কলকাতার ৬টি পকেটে জল জমে। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য ২০০টি পাম্পিং স্টেশন হবে। খাল পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রয়োজনে পাইপ লাইন বসান হবে।
৩০০ বছরের বেশি পুরনো শহর কলকাতা। এই শহরেরই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বহু বাড়ি। এগুলির বেশিরভাগই সংস্কারের অভাবে জীর্ণ, ভেঙে পড়ছে। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ভবন ও বাড়িগুলি সংরক্ষণে এবার পুরনিগম উদ্যোগী হবে, প্রয়োজনে তহবিল গড়া হবে।
বসতি রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা। প্রোমোটাররা যাতে বসতির দখল নিতে না পারে তার জন্য বসতিবাসীদের জন্য নিজের বাড়ির ব্যবস্থা। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তৈরি হবে ঘর।
আরও পড়ুন-রাশিয়ার প্রথম নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী পাভলভ
অ্যাপের মাধ্যমে পার্কিং ব্যবস্থা চালু হবে। পুরসভা পার্কিং রেট বেঁধে দেবে। কেউ বেশি নিলে তার লাইসেন্স বাতিল হবে।
কেবলের তার এখন থেকে আর বিক্ষিপ্তভাবে এদিন-ওদিক দিয়ে নয়, সেগুলি কেবল ট্রে বা চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়ে যেতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো এখন থেকে ৬ মাস অন্তর পুরসভার কাজের রিপোর্ট কার্ড বা কাজের খতিয়ান পেশ করা হবে পুরনিগমের কর্তৃপক্ষের তরফে।