প্রতিবেদন: মঙ্গলবারই চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যে কোভিডের (Covid 19) তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। ফিরে আসছে প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের স্মৃতি। সেই সঙ্গে ফের দলে দলে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ জন। যার মধ্যে চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় আশি জন। এর জেরে ওই মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শহরের আরও এক হাসপাতাল চিত্তরঞ্জন সেবা সদনে আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ৩৬। আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে ৩৫ জনের বেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলেই খবর।
সূত্রের খবর, শহরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিসংখ্যানে উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনে। জুনিয়র ও সিনিয়র মিলিয়ে এতজন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। কার্যত একই ছবি জেলাতেও। পূর্ব বর্ধমানে ১২ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। বারুইপুর হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসক ও নার্স সহ ১০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা (Covid 19) আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ১৪ জন ইন্টার্ন, তিন জন নার্স করোনা আক্রান্ত। হাওড়ার একটি হাসপাতালে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ জন আক্রান্ত। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালেরও পাঁচজন স্টাফ আক্রান্ত। পাশাপাশি, ওই হাসপাতালের একজন ডেপুটি সুপার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে এত বেশি চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন যে পরিষেবা কীভাবে চালু রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন-হাওড়ায় কোভিড-যুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস
সূত্রের খবর, এনআরএসে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৮ জন। এর মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রায় একশো। এত বেশি চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রোগী পরিষেবা নিয়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কীভাবে হাসপাতাল চালু রাখা হবে, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, আপাতত আউটডোর বা বহির্বিভাগের পরিষেবায় কিছু কাটছাঁট করা হলেও মোটের ওপর পরিষেবা চালু রাখার চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা টেলিমেডিসিনের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেকে যাতে করোনাবিধি মেনে চলেন, সেই বার্তাও দিচ্ছেন। বুধবার নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অধিকর্তা-সহ নাইসেডের ১৩ জন আধিকারিক। করোনা আক্রান্ত ল্যাবের একাধিক আধিকারিক। মৃদু উপসর্গ নিয়ে তাঁরা প্রত্যেকেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি করোনা থাবা বসিয়েছে সিবিআই ও কলকাতা পুলিশের অন্দরেও। সূত্রের খবর, কলকাতার দুটি দফতর মিলিয়ে ১৩ জন সিবিআই অফিসার ও কর্মী করোনা আক্রান্ত। করোনার কবলে বেনিয়াপুকুর থানার ওসি। পাল্লা দিয়ে কলকাতা পুলিশেও বাড়ছে সংক্রমণ। ভবানীপুর থানার একাধিক কর্মীও আক্রান্ত।