মেলবোর্ন, ৬ জানুয়ারি : আগের সন্ধ্যায় মেলবোর্ন বিমানবন্দরে নেমে আটকে পড়েছিলেন দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা। তাঁকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। পরে নোভাক জকোভিচের এন্ট্রি ভিসা বাতিল করে দিল অস্ট্রেলিয়া সরকার। এর অর্থ, গতবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চাম্পিয়নের পক্ষে এবার আর খেতাব রক্ষার কোনও সুযোগ নেই। ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে বিশ্বের একনম্বর টেনিস তারকাকে এবার কোর্টে দেখা যাবে না।
আরও পড়ুন-সমতায় টেস্ট সিরিজ, নজর এবার কেপটাউনে এলগারের ব্যাটে স্বপ্নভঙ্গ ভারতের
তবে বিষয়টির নিষ্পত্তি এত সহজে যে হচ্ছে না, সেটাও পরিষ্কার হয়ে যায় জকোভিচ আইনের দ্বারস্থ হওয়ায়। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে সার্বিয়া সরকার। নরাই এখন তাই ক্যানবেরা বন বেলগ্রেডের। জাকোভিচের লিগ্যাল টিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত তাঁকে অস্ট্রেলিয়া থেকে বের করে দেওয়া যাবে না বলে রায় এসেছে। এদিকে, জকোভিচের বাবা অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছেলেকে আইসোলেশন রুমে পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন-চার বছর পর ফিরেই সেঞ্চুরি খোয়াজার
মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জকোর ছাড় পাওয়া নিয়ে আগেই ঝড় উঠেছিল অস্ট্রেলিয়ায়। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, তারকা টেনিস খেলোয়াড়কে তাঁর এই ছাড় পাওয়ার যথাযথ প্রমাণ দেখাতে হবে। কারণ, কেউ নিয়মের ঊর্ধ্বে নন। শেষপর্যন্ত এই নিয়মের গেরোতেই আটকে গিয়েছেন সার্বিয়ার টেনিস আইকন। অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার ফোর্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিখ্যাত এই টেনিস তারকা অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখার সঠিক প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে তাঁর এন্ট্রি ভিসা বাতিল হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম হল সেই ব্যক্তিকে প্রথমে ডিটেন করা হবে। তারপর ফিরতি বিমানে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। জাকোভিচের ক্ষেত্রে ঠিক এটাই হয়েছে।
আরও পড়ুন-ঝুলনের বায়োপিকের টিজার প্রকাশ করলেন অনুষ্কা
অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখার আগে জকো গণমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, তিনি মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে এক্সেমটেড হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সংগঠকদের তরফেও বলা হয়েছিল জকো দুটি মেডিক্যাল প্যানেলের পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাই আরও ২৬ জন প্লেয়ার ও সাপোর্ট স্টাফের মতো বিশ্বের একনম্বর টেনিস তারকারও টুর্নামেন্টে নামতে আর কোনও বাধা নেই। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় এরপরই। কোভিড নিয়ে বরাবরের কঠোর নিয়ম মানা একটা দেশ স্রেফ একজন টেনিস তারকার জন্য কী করে নিয়ম শিথিল করল, তা নিয়ে গণরোষ তৈরি হয় যায়। এই পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, কেউ নিয়মের ঊর্ধ্বে নন।
আরও পড়ুন-কপিল ৬৩
অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার ফোর্সের তরফে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, তাদের দেশে কোনও বিদেশি এলে নিয়ম মেনে এন্ট্রি রিকোয়ারমেন্ট দেখাতে হবে। কোভিড আবহে এই কঠোর বর্ডার পলিসি মানতেই হবে। বর্ডার নিয়ে নিয়ম হল নিয়ম। সবাইকে তা মানতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার হোম অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার কারেন অ্যান্ড্রুজ এই ঘটনায় বলেছেন, নিয়ম না মানলে সে যেই হোক, তাকে অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।
তবে জকোভিচের প্রতি এই আচরণে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সার্বিয়া সরকার। সেদেশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিক বলেছেন, এই ‘ম্যাল ট্রিটমেন্টের’ বিরুদ্ধে দেশের মানুষ বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকার পাশে আছেন।